
কলকাতা: কলকাতা পৌরনিগমের মাসিক অধিবেশনে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি। বিতণ্ডায় জড়ালেন বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ ও মেয়র ফিরহাদ হাকিম। ‘মিনি পাকিস্তান’ ইস্যু তুলে ধরে ফিরহাদকে নিশানা করলেন সজল। পাল্টা সরব হন মেয়র। উত্তেজনা ছড়ায় পৌরনিগমের অধিবেশনে। কার্যত হাতাহাতি হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়। তৃণমূলের কাউন্সিলররা ফিরহাদকে শান্ত করেন।
বৃহস্পতিবার পৌরনিগমের মাসিক অধিবেশনে এদিন বক্তব্য রাখছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। স্বাধীনতা সংগ্রামে বিজেপির কোনও অবদান নেই বলে নিশানা করেন। সেইসময় কাটমানির কথা বলে মেয়রকে কটাক্ষ করেন সজল। যার জবাবে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির প্রসঙ্গ টেনে আনেন ফিরহাদ। মধ্যপ্রদেশে ব্যাপম কেলেঙ্কারির কথা তুলে ধরেন। বিজেপিকে নিশানা করে ফিরহাদ বলেন, “ভারতের সংস্কৃতিকে শেষ করে দিচ্ছে। ভারতের ঐতিহ্যকে শেষ করে দিচ্ছে।” পাকিস্তানের সঙ্গে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের যোগের অভিযোগ টেনেও সরব হন কলকাতা পৌরনিগমের মেয়র।
তখনই সজল বলেন, “আপনি মিনি পাকিস্তান বলেছিলেন।” বিজেপি বারবার অভিযোগ করে, পাকিস্তানের একটি সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিতে দিয়ে ফিরহাদ একবার বলেছিলেন, কলকাতায় মিনি পাকিস্তান রয়েছে। এই নিয়ে এর আগেও একাধিকবার ফিরহাদকে নিশানা করেছে গেরুয়া শিবির। এদিন কলকাতা পৌরনিগমের অধিবেশনে সেই ইস্যু টেনে আনেন সজল।
কলকাতা পৌরনিগমের অধিবেশনে উত্তেজনা
বিজেপি কাউন্সিলরের এই মন্তব্যে রীতিমতো ক্ষুব্ধ হন কলকাতার মেয়র। জোর গলায় তিনি বলেন, “যদি আমি মিনি পাকিস্তান কখনও বলে থাকি, এটা প্রমাণ করতে পারলে আমি ইস্তফা দেব।” ২ জনের বিতণ্ডায় উত্তেজনা ছড়ায় পৌরনিগমের অধিবেশনে। মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার ও তৃণমূলের আর এক কাউন্সিলর মেয়রের কাছে চলে আসেন। মেয়রকে জলের বোতল এগিয়ে দেন। মেয়র অবশ্য তখন বুঝিয়ে দেন, তিনি ঠিক আছেন।
কলকাতা পৌরনিগমে বিজেপির কাউন্সিলরের সংখ্যা ৩। এদিন অবশ্য ২ জন উপস্থিত ছিলেন। সজল ছাড়া ছিলেন মীনাদেবী পুরোহিত। অন্যদিকে, তৃণমূলের শতাধিক কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন।
পরে ঘটনাটি নিয়ে সজল ঘোষ বলেন, “বিহারের হিজাব টানার ঘটনার কথা উল্লেখ করছিলেন মেয়র। ওই ঘটনা ঘটলে আমরাও নিন্দা করছি। কিন্তু, এই নিয়ে উনি পৌরনিগমের অধিবেশনে কেন বলছেন? তখনই আমি তাঁর মিনি পাকিস্তানের মন্তব্যের কথা বলি। উনি বলছেন, দেখাতে পারলে ইস্তফা দেব। আমি দেখিয়ে দেব, উনি কথাটা বলেছিলেন।” একসময় তৃণমূলে ছিলেন সজল। পরে বিজেপিতে যোগ দেন। বিজেপি কাউন্সিলর বলেন, “মেয়র আমাকে বলেন, আমি নাকি চোরেদের উপর রাগ করে মাটিতে ভাত খাচ্ছি। তার মানে উনি স্বীকার করছেন, উনি চোর।”