কলকাতা: চিংড়িহাটায় কীভাবে দুর্ঘটনা কমানো যায় ও আরও ভালো ট্রাফিক ব্যবস্থা চালু করা যায়, তা নিয়ে কিছু সমাধানের উপায় জানিয়েছে আইআইটি খড়গপুর। সেই রিপোর্ট হাতে নিয়েই যৌথ সমীক্ষা চালাল কলকাতা পুলিশ ও বিধাননগর পুলিশ। বুধবার চিংড়িহাটা মোড়ে কোলকাতা পুলিশের জয়েন্ট সিপি ট্রাফিক সন্তোষ পাণ্ডে, এসিপি ট্রাফিক ও বিধান নগর পুলিশের অফিসারদের উপস্থিতিতে এই সমীক্ষা চালানো হয়।
ট্রাফিক ডাইভারশন ও ক্রস ওভারের ঠিকমতো ভালো ব্যবহারের কথা রিপোর্টে জানিয়েছে আইআইটি খড়গপুর। সেই মতোই চিংড়িহাটা সংলগ্ন এলাকায় যে ছোট রাস্তাগুলি রয়েছে সেগুলিও ঘুরে দেখেন পুলিশ কর্তারা। মূল উদ্দেশ্য, ট্রাফিক ব্যবস্থাকে আরও ভালো করা ও দুর্ঘটনা কমানো।
চিংড়িহাটায় কেন বারবার দুর্ঘটনা হয়, সেই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ধমকের পর আইআইটি খড়গপুরকে দিয়ে সমীক্ষা করানো হয়। সেখানে শর্ট টার্ম ও লং টার্ম- দু ধরণের সমাধানের কথা বলা হয়েছে। শর্ট টার্ম ব্যবস্থা হিসেবে চিংড়িহাটা সংলগ্ন এলাকার ট্রাফিক ডাইভারশন ব্যবস্থা উন্নত করা ও মানুষের যাতায়াতের জন্য ক্রসওভারের ঠিকমতো ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। একইসঙ্গে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সংযুক্তিকরণের জন্য বাইপাসের উপর পিলার তৈরির কাজও শুরু হবে। সেটাকে মাথায় রেখেই কীভাবে ট্রাফিক ব্যবস্থা ভালো করা যায় তা রিপোর্টে জানিয়েছে আইআইটি খড়গপুর।
লং টার্ম সমাধান হিসেবে ভূগর্ভস্থ পথ তৈরি করার কথা জানিয়েছে আইআইটি খড়গপুর। চিংড়িহাটায় ভূগর্ভস্থ পথ তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে সরকারের।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক মাসে চিংড়িহাটায় যেভাবে দুর্ঘটনা ঘটেছে. তাতে একাধিক মানুষ বলি হয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। চিংড়িঘাটায় পথ নিরাপত্তা বাড়াতে পুলিশকে কড়া পদক্ষেপেরও নির্দেশ দেন তিনি। সম্প্রতি প্রশাসনিক সভা থেকে পুলিশকে কড়া বার্তাও দেন তিনি। এরপরই তড়িঘড়ি পুলিশের তরফে চিংড়িহাটায় বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়। পুলিশের তরফে যা যা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়-
১. চিংড়িঘাটায় বাড়ানো হয় পুলিশের সংখ্যা। বাস থেকে নেমে কিংবা কোনওভাবে কেউ যাতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে না থাকে সেজন্য বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
২. স্পিড র্যাডার গানের সংখ্যা বাড়ানো হয়। বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চললেই স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে কেস চলে যায় মালিকের কাছে।
৩. নজরে মোটরবাইক। বাইপাস হাইস্পিড করিডর হলেও সেখানে প্রয়োজন অনুযায়ী গার্ডরেল দেওয়া হয়। মূলত রাতে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
৪. দ্রুত চালু করা হবে ফুট ওভারব্রিজ।
৫. রাতেও ওই এলাকায় সার্জেন্টের নজরজারি।
৬. ব্যারিকেডেক সঙ্গে রাখা হয় ‘রেড ব্লিঙ্কার’। চিহ্নিত করে ব্যারিকেডের অবস্থান।
৭. রাতে রাস্তার পরিধি চিহ্নিত করার জন্য আরও বেশি সংখ্যায় বসানো হয় আরপিএম (Raised Pavement Marker)।
৮. বাইপাসে নজরদারি চলে মেট্রোপলিটন থেকে সল্টলেক স্টেডিয়াম পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: ‘অমার্জনীয় সাংবিধানিক গাফিলতি!’ রাজ্যপালের টুইটে ফের সংঘাতের ইঙ্গিত