কলকাতা: গত কয়েকদিন ধরে উত্তরবঙ্গ (North Bengal) জুড়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি। জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) থেকে প্রথম সংক্রমণের খবর এলেও ক্রমশ উত্তরবঙ্গের প্রায় সব জেলায় ছড়াতে শুরু করেছে সেই জ্বর। এক সপ্তাহ ধরে এই পরিস্থিতি উত্তরোত্তর অবনতি হতে থাকলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি স্বাস্থ্য দফতরের (Health Department) তরফে। কেন কোনও কমিটি গঠন করা হচ্ছে না? কেন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয় হচ্ছে না? এই প্রশ্নগুলোই সামনে এনেছিল TV9 বাংলা। আর তারপরই গতকাল তড়িঘড়ি আট সদস্যের কমিটি গঠন করল স্বাস্থ্য দফতর। ইতিমধ্যেই সেই অজানা জ্বরে মৃত্যু হয়েছে তিন শিশুর। আক্রান্ত ৫০০-র বেশি। পরিস্থিতি এতটা আয়ত্তের বাইরে চলে যাওয়ার পর কেন ব্যবস্থা নেওয়া হল? তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন।
আট সদস্যের কমিটিতে রয়েছেন একাধিক শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, ভাইরোলজিস্ট। তাঁরাই অজানা জ্বরের কারণ খতিয়ে দেখবেন। আট সদস্যের কমিটিতে রয়েছেন ড. দিলীপ পাল, ড. মৌসুমী নন্দী, ড. বিভূতি সাহা, ড. সৌমিত্র ঘোষ, ড. মিহির সরকার, ড. ভাস্বতী মুখোপাধ্যায়, ড. সুগত দাশগুপ্ত, ড. দীপ্তকান্তি মুখোপধ্যায়। প্রথমবার এই জ্বর ধরা পড়ার পর প্রায় ১২ দিন কেটে গিয়েছে। এখনও জ্বরের কারণ সামনে আসেনি। জলপাইগুড়ি থেকে সংক্রমণ ছড়াতে ছড়াতে দুই দিনাজপুরে এসে পৌঁছেছে। জানা যাচ্ছে, সাধারণ জ্বর নয়, প্লেটলেট ক্রমশ কমতে শুরু করছে শিশুদের। সেই কারণেই ক্রমশ নেতিয়ে পছে তারা। করোনাত তৃতীয় ঢেউয়ের কথা মাথায় রেখে রাজ্যে শিশুদের জন্য স্বাস্থ্য পরিকাঠামো প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর। অথচ অজানা জ্বরেই বেআব্রু হয়ে গেল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। হাসপাতালগুলিতে গাদাগাদি ভিড়।
সংবাদমাধ্যমে প্রশ্ন উঠতে এত দিন পর কমিটি গঠন করছে স্বাস্থ্য দফতর। দেখা যাচ্ছে তৎপরতা। নবান্ন সূত্রে খবর, এই ইস্যুতে বুধবার মুখ্য সচিব বৈঠক ডেকেছেন জরুরি ভিত্তিতে। সব জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং জেলাশাসকের সঙ্গে কথা হবে সেই বৈঠকে। ১০-১২ দিন কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করে সঠিক কারণ জানা যায়নি। কেন জ্বরের কারণ জানতে এত বেশি সময় লাগছে? সে নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন একাধিক বিশেষজ্ঞ।
আরও পড়ুন: নামছে প্লেটলেট, হচ্ছে অর্গান ফেলিওর! কী কারণে শিশুদের এই উপসর্গ, জানালেন চিকিত্সক
এ প্রসঙ্গে উত্তরবঙ্গের জনস্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষ আধিকারিক (Special Public Health Officer) চিকিত্সক সুশান্ত রায় দাবি করেছেন, জ্বর নিয়ে বিশেষ চিন্তার কিছু নেই। তিনি জানিয়েছেন, আক্রান্তদের মধ্যে ৩৯ জনের রক্ত পরীক্ষা করা হয়। সেই শিশুদের কারও ক্ষেত্রেই জাপানি এনকেফালাইটিসের জীবাণু পাওয়া যায়নি। একজনের দেহে ডেঙ্গু সংক্রমণ ধরা পড়েছে। উত্তরবঙ্গের চিকিৎসকদের একাংশের অভিযোগ, সঠিকভাবে সেই তথ্য জানানো হয়নি স্বাস্থ্য ভবনকে। তথ্য ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠছে।
আরও পড়ুন: হু হু করে শিশুদের মধ্যে দেখা দিচ্ছে উপসর্গ! কোভিড নেগেটিভ, এবার ভয় ধরাচ্ছে অন্য রোগ