Group D Recruitment: কী ভাবে কমিশনে নথি গেল অন্য কারও হাতে? গ্রুপ ডি নিয়োগে ‘গভীর ষড়যন্ত্রের’ ছায়া দেখছে আদালত
Group D Recruitment: প্যানেলের মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পরও কী ভাবে গ্রুপ ডি পদে নিয়োগ হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
কলকাতা : স্কুল সার্ভিস কমিশনের গ্রুপ ডি নিয়োগের মামলায় ফের অস্বস্তি বাড়ল স্কুল সার্ভিস কমিশনের। নিয়োগে দুর্নীতির মামলায় সই স্ক্যান করা হয়েছে বলে যে দাবি করেছে কমিশন, সেই প্রসঙ্গে আদালতের প্রশ্ন, কমিশনের ব্যক্তিগত নথি কী ভাবে বাইরে গেল? অবিলম্বে কমিশনের কাছে ওয়েবসাইটের তথ্য চাইল হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে ছিল সেই মামলার শুনানি। বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে দু দিনের মধ্যে ওয়েবসাইটের তথ্য জমা দেওয়া হয় আদালতে। এর আগে এই মামলায় ৫৭৫ জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল সিঙ্গল বেঞ্চ। তবে, ডিভিশন বেঞ্চ সেই নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয়।
‘পাসওয়ার্ড পেল কী ভাবে যদি আপনারা না করে থাকেন?’
সিঙ্গল বেঞ্চের পর এবার ডিভিশন বেঞ্চেও তোপের মুখে কমিশন। গ্রুপ ডি মামলায় অস্বস্তি বাড়ল কমিশনের। আদালতের প্রশ্ন, কমিশনের ব্যক্তিগত নথি অন্য কারও হাতে কী ভাবে গেল, সই কী ভাবে হল? পাসওয়ার্ডই বা কেউ পেল কী ভাবে? যদি আপনারা না করে থাকেন কী ভাবে ডিজিটাল সই পেতে পারে? কমিশনের তরফে দাবি করা হয়েছে, সই স্ক্যান করা হয়েছে।
‘গভীর ষড়যন্ত্র’, বললেন বিচারপতি
বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন এ দিন ফের প্রশ্ন করেন, আপনার কি মনে হয় কমিশন এখনও ঠিক ভাবে কাজ করছে? একজন প্রশাসককে কমিশনের সর্বোচ্চ পদে বসানো উচিৎ নয় কি? গভীর ষড়যন্ত্র! হয় বলুন বেয়াইনি নিয়োগ হয়েছে না হয় বলুন হয়নি। কমিশনের পক্ষে আইনজীবী কিশোর দত্তের যুক্তি, সিবিআই দিয়ে তদন্ত করার প্রয়োজন নেই। এক জায়গার নিয়োগ অন্য জায়গায় হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
অভিযুক্তরা কী ভাবে নিয়োগ পত্র পেলেন, সেই প্রসঙ্গে তাঁদের তরফে আইনজীবী সুবীর স্যান্যাল বলেন, ‘ওয়েবসাইটে অভিযুক্তদের নাম ছিল। কিন্তু ওয়েবসাইট সময় শেষ হয়ে গেলে আর থাকে না, তাই কোনও নথি নেই।’
‘দু দিনের মধ্যে ওয়েবসাইটের তথ্য দিতে হবে’
বোর্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে নিয়োগের আগে বিষয়টি কমিশনকে জানানো হয়েছিল, কিন্তু কমিশন তার পরেও সবুজ সঙ্কেত দেয়।
আদালতের তরফে বলা হয়েছে, এই ধরণের দুর্নীতি কমিশনের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। আদালত চুপ করে থাকতে পারে না। মামলাকারীদের ক্লিন চিট দেওয়া হয়েছে এ দিন। আদালতের নির্দেশ, কমিশনকে উত্তর দিতেই হবে। এই মামলার অনুসন্ধান ও তদন্ত প্রাথমিক পর্যায় রয়েছে। কমিশনকে দুদিনের মধ্যে ওয়েবসাইটের তথ্য দিতে বলা হয়েছে। যদি পরে দেখা যায় নিয়োগ বেআইনি ছিল, তাহলে জরিমানা দিতে হবে বলেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দু’সপ্তাহের মধ্যে আদালত দেখবে কমিটি কী করল।
কী সেই মামলা?
২০১৬ সালে রাজ্যে গ্রুপ ডি নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছিল। তার ভিত্তিতে ১৩ হাজার নিয়োগও হয়। ২০১৯ সালের মে মাসে সেই গ্রুপ ডি প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়। কিন্তু তারপরও একাধিক নিয়োগ হয় বলে অভিযোগ ওঠে। মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও কেন নিয়োগ হল, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ৫৭৩ জনের উপরে ভুয়ো নিয়োগের অভিযোগ ওঠে। বিচারপতি অরিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ওই ৫৭৩ জনের চাকরি থেকে বরখাস্ত করার পাশাপাশি বেতন বন্ধেরও নির্দেশ দেয়।পাশাপাশি এতদিন যে বেতন তাঁরা পেয়েছেন, তা ফেরানোর কথাও বলা হয়।
আরও পড়ুন: Group C Recruitment Case: গ্রুপ ডি-র অনুসন্ধান কমিটির হাতেই গেল গ্রুপ সি-র তদন্তভার