কলকাতা: ভেজাল, ভেজাল ভেজাল রে ভাই। ভেজাল সারা দেশটায়। ভেজাল ছাড়া খাঁটি জিনিস মিলবে নাকো চেষ্টায়! সত্যিই এ যেন, ঠগের জাল পাতা ভুবনে। যা দিনকাল পড়েছে বিশ্বাস নেই কাউকেই, কোনও কিছুতেই। কলকাতায় দেবাঞ্জন দেবের টিকা জালের অভিযোগের পর থেকে এই ‘আসল টিকা, নকল টিকা’ নিয়েও মানুষের মনে বিস্তর প্রশ্ন। আম-আদমির সেই খিদে মেটাতেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক বিশেষ গাইডলাইন জারি করেছে। অর্থাৎ কোনটা আসল ভ্যাকসিন, তা বোঝারও পথ রয়েছে বলেই ইঙ্গিত সেই নির্দেশিকায়!
কীভাবে চিনবেন করোনা ভ্যাকসিন? টিকা আসল না নকল? কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক এই বিষয়ে গাইডলাইন ইস্যু করেছে। জানিয়েছে, কোভিশিল্ড, কোভ্যাকসিন, স্পুটনিক-ভি চেনার নিয়মকানুন। এক একটি সংস্থার টিকা চেনার জন্য এক এক রকম বিষয়ে নজর রাখতে হবে। যেমন কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন চিনতে গেলে প্রথমেই নজর দিতে হবে টিকার লেবেলে। সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার লেবেল ছোট ভায়ালে সাঁটানো রয়েছে কি না দেখে নিতে হবে। এবার শুধু সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া লেখা দেখলেই নিশ্চিন্ত নয়। লেবেলের রং কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে গাঢ় সবুজ কি না। একইসঙ্গে অ্যালুমিনিয়াম ফ্লিপ অফ সিলের রংও গাঢ় সবুজই। অর্থাৎ ভায়ালের ঢাকনার রং। ভায়ালের গায়ে লেখা থাকবে কোভিশিল্ড ব্র্যান্ডের নাম। কোভিশিল্ড নামটি কিন্তু ‘বোল্ড’-এ লেখা থাকে না। তবে বড় হরফে তা লেখা থাকবে। ভায়ালের গায়ে লেখা থাকবে নট ফর সেল অর্থাৎ বিক্রি হবে না। লেবেলের গায়ে আঠালো দিকে SII-এর লোগো থাকবে। স্পষ্ট এবং পাঠযোগ্য হওয়ার জন্য অক্ষরগুলি বিশেষ সাদা কালিতে ছাপা রয়েছে। মৌচাকের মতো নকশাও থাকে লেবেলে।
এবার কোভ্যাকসিনের পালা। টিকা উৎপাদনকারী সংস্থা ভারত বায়োটেকের কোভ্যাকসিন টিকার ভায়ালের লেবেলে অদৃশ্য ইউভি (UV) হেলিক্স থাকে। যা কেবল ইউভি লাইটে চোখে পড়ে। লেবেলে লুকোনো মাইক্রো টেক্সট, থাকে ব্র্যান্ডের নাম COVAXIN। কোভ্যাক্সিনের উপর হলোগ্রাফিক প্রভাব থাকে।
স্পুটনিক-ভি চিনতে চাইলেন প্রথমেই মাথায় রাখতে হবে রাশিয়ার দুই নির্মাতা সংস্থার দু’টি ভিন্ন লেবেল। যদিও সমস্ত তথ্য এবং নকশা একই। শুধুমাত্র নির্মাতার নাম আলাদা। ইংরেজি লেবেল শুধুমাত্র পাঁচ এ্যাম্পুলের প্যাকেটের সামনে ও পিছনে থাকে।
সরকারি বা বেসরকারি টিকাকরণ কেন্দ্রে, ভ্যাকসিনের ভায়াল হাতে নিয়ে দেখার সুযোগ নেই। তবে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের বলে দেওয়া এই কয়েকটি বিষয় খেয়াল করলে নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন, টিকায় অন্তত ঠকে যাবেন না। প্রসঙ্গত, গত জানুয়ারি মাস থেকে দেশে টিকাকরণ প্রক্রিয়া চালু হয়েছে। এখনও অবধি প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ় মিলিয়ে ৬৮ কোটি উপভোক্তা ভ্য়াকসিন পেয়েছেন। গত শনিবার পর্যন্ত আরও ৬২.২৫ লাখ ভ্য়াকসিনের ডোজ় দেওয়া হয়েছে। রবিবারও তা আরও এক ধাপ এগিয়েছে। আরও পড়ুন: কোভিড আবহে উপনির্বাচন, ভোটকর্মীদের ভ্যাকসিন নিয়ে কড়াকড়ি কমিশনের