ভোটে ভরাডুবি নিয়ে সিপিএমকে তুলোধোনা, ১০ পাতার রিপোর্ট পেশ করল সিপিআই

CPI: শূন্য হওয়া থেকে বাঁচিয়েও শরিকদের আক্রমণে সেই ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট বা আইএসএফ। ভোটমুখী বাংলায় হঠাৎ গজিয়ে ওঠা মরসুমি শক্তি আইএসএফ-কে জোটে নেওয়ায় সিপিএমকে তুলোধোনা করল সিপিআই (CPI)।

ভোটে ভরাডুবি নিয়ে সিপিএমকে তুলোধোনা, ১০ পাতার রিপোর্ট পেশ করল সিপিআই
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 27, 2021 | 8:28 PM

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ: একুশের বঙ্গ ভোটে বাম-কংগ্রেস জোটের মুখরক্ষা করেছিল সেই ফুরফুরা শরিফই। তবে শূন্য হওয়া থেকে বাঁচিয়েও শরিকদের আক্রমণে সেই ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট বা আইএসএফ। ভোটমুখী বাংলায় হঠাৎ গজিয়ে ওঠা মরসুমি শক্তি আইএসএফ-কে জোটে নেওয়ায় সিপিএমকে তুলোধোনা করল সিপিআই (CPI)।

ভোটে ভরাডুবি নিয়ে সিপিআই প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ করেছে। তার জন্য ১০ পাতার রিপোর্ট দলের কর্মসমিতির বৈঠকে পেশ করেছে তারা। আর সেখানে ফরওয়ার্ড ব্লকের পর সিপিআইও আইএসএফকে নিশানা করেছে। তাদের দাবি, আইএসএফের মতো মরসুমি শক্তিকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয় জোটে গড়িমসির জন্য কংগ্রেসকেও কাঠগড়ায় তুলেছে সিপিআই।

একুশের ভোটের ফলাফল নিয়ে যে ১০ পাতার রিপোর্ট তৈরি করেছে সিপিআই সেখানে বলা হয়েছে, সংযুক্ত মোর্চা যে তৃণমূল ও বিজেপির বিকল্প হয়ে উঠতে পারে, আমজনতা তা মনে করেননি। তার অন্যতম কারণই হল আইএসএফ। কেন? সিপিআই-র দাবি, আন্দোলন ছাড়া মোর্চা গঠন ঠিক ভাবে নেননি আমজনতা। আর তাই রাজ্যের মানুষ মোর্চার উপর ভরসা না করে তৃণমূলের প্রতি আস্থা রেখেছেন।

তাছাড়া মোর্চার প্রচারে বিজেপিকে হারানোর বিষয়টি তেমন প্রাধান্য পায়নি বলেও জানিয়েছে তারা। তবে এই প্রচারে খামতির জন্য সিপিএমকেই মূল নিশানা করেছেন স্বপন ব্যানার্জিরা। আর আসন বন্টনে গড়িমসির জন্য কংগ্রেসকে কাঠগড়ায় তুলেছেন তাঁরা। উল্লেখ্য, ভোটের আগে কংগ্রেসের সঙ্গে যাওয়ার প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়ে এসইউসি এবং সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন আলাদা লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।

বামফ্রন্টের একতায় যে চিঁড় ধরেছে তা ক্রমশ সামনে এসেছে। এর আগে আইএসএফ জোট নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল ফরওয়ার্ড ব্লক। এমনকি বাম শরিকদের এও দাবি, একুশের ভোটে কংগ্রেস ও আইএসএফ জোট নিয়ে তাদের কিছুটা অন্ধকারে রেখে একা এগিয়েছে সিপিএম। তাই ভোটের ভরাডুবির ভার তো তাদের ওপর বর্তাবেই। তবে রাজনৈতিক মহলের একাংশের যুক্তি এ রাজ্য সিপিএম ছাড়া বাম শরিকদের আলাদা কোনও শক্তি নেই। তাই জোটে তাদের আপত্তি থাকলেও তা মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না।

এদিকে সিপিএমের বক্তব্য, বামফ্রন্ট অবশ্যই ঐক্যের ভিত্তিতে চলবে। কিন্তু কারও না পোষালে নিজেদের স্বতন্ত্র পথ দেখে নেওয়ার বিকল্প তো আছেই। তাদের এও যুক্তি, যারা আইএসএফের সঙ্গে জোট করার ব্যাপারে প্রশ্ন তুলছে বামফ্রন্টকে শক্তিশালী করার ব্যাপারে তাদের ভূমিকাই তো প্রশ্নের মুখে পড়েছে! তারা কি নিজেদের ভোট ধরে রাখতে পেরেছে? পাল্টা প্রশ্ন তুলেছে সিপিএম। অন্যান্য শরিক দলের শক্তিক্ষয় হয়েছে বলেই তো অনেক আসনে সিপিএম নিজে লড়েছে, যুক্তি সূর্যকান্ত মিশ্রদের। তাঁদের যুক্তি ফলের জন্য খালি আইএসএফ-কে কাঠগড়ায় তোলার কোনও যুক্তি নেই।

ভাঙড় থেকে তৃণমূলের প্রার্থী রেজাউল করিমকে ২৬ হাজার ১৫১ ভোটে হারিয়ে বিধানসভায় নির্বাচিত হয়েছেন তরুণ নওসাদ সিদ্দিকি। তাঁর যুক্তি, চারটি আসনে আইএসএফ দ্বিতীয় হয়েছে। বাম ও কংগ্রেসের চেয়ে তুলনায় অনেক অল্প আসনে লড়েও তুলনামূলক ভাবে আইএসএফের গড় ভোটপ্রাপ্তির অনুপাতও ভাল। তাই অঙ্ক কষে দেখলে অন্যদের ভূমিকাও কিন্তু পরিষ্কার হয়ে যাবে। কিন্তু বৃহত্তর রাজনীতির স্বার্থে তাঁরা এই বিষয়টিকে নিয়ে জলঘোলা করতে রাজি নন বলে মন্তব্য আইএসএফ চেয়ারম্যানের। আরও পড়ুন: বিক্ষোভের ‘ফল’ পাশ! মুচলেকা দিয়ে শংসাপত্র নিলেন ছাত্রীরা