
কলকাতা: বাংলায় বিধানসভা নির্বাচনের আগে ঘুরে দাঁডানোর চেষ্টা করছে সিপিএম। ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’ করছেন বাম নেতারা। আর এরই মধ্যে দলের রাজ্য কমিটির নেতা ইন্দ্রজিৎ ঘোষের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ ঘিরে অস্বস্তি বাড়ে। শেষপর্যন্ত দলের অভ্যন্তরীণ কমিটির তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে ইন্দ্রজিৎ ঘোষকে বহিষ্কার করল সিপিএম। ২ দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠক শেষে শুক্রবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানালেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।
কী অভিযোগ ইন্দ্রজিৎ ঘোষের বিরুদ্ধে?
ইন্দ্রজিৎ ঘোষের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার বেলঘরিয়ার এক মহিলা সিপিএম কর্মী। তাঁর অভিযোগ, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁর সঙ্গে সহবাস করেন ইন্দ্রজিৎ। অভিযোগকারিণীর বাবা-মাও এই বাম দলের সদস্য। অভিযোগ পেয়েই নড়েচড়ে বসে সিপিএম। দলের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি অভিযোগ খতিয়ে দেখে। সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখেই ইন্দ্রজিৎকে বহিষ্কারের সুপারিশ করে। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে এই সুপারিশ অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছিল। ইন্দ্রজিৎ রাজ্য কমিটির সদস্য হওয়ায় তাঁকে বহিষ্কারের জন্য সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমোদন প্রয়োজন।
কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমোদন পাওয়ার পরই ২ দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠক শেষে ইন্দ্রজিৎকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের কথা জানান সেলিম। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ধরে চলেছিল সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠক। শুক্রবার বৈঠক শেষে সেলিম জানান, কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমোদন পাওয়ার পরই ইন্দ্রজিৎকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত এই নেতা ছাত্র রাজনীতি, যুব রাজনীতি করে উঠে আসেন। বর্তমানে সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিটুর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। অ্যাপ ক্যাব সংগঠন দেখতেন। বিভিন্ন চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের ক্ষেত্রেও সিপিআইএমের তরফে সামনের সারিতে ছিলেন ইন্দ্রজিৎ। দলের এমন এক নেতার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ ওঠায় অস্বস্তি বেড়েছিল সিপিএমের। রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, বছর খানেক আগে এক মহিলা সাংবাদিককে হেনস্থার অভিযোগে দলের বর্ষীয়ান নেতা তন্ময় ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছিল সিপিএম। তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। এবার ইন্দ্রজিৎ ঘোষকে বহিষ্কার করে সিপিএম বুঝিয়ে দিল, অসদাচরণ কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।