কলকাতা: বাংলায় ক্ষমতা হারানোর পর থেকে বারবার ব্যর্থতার মুখোমুখি হয়েছে বামেরা। দ্বিতীয় আর তৃতীয় স্থানের মধ্যে চলেছে লড়াই। ঘুরে দাঁড়াতে বারবার নিজেদের ভেঙেছে-গড়েছে। বদলেছে স্ট্র্যাটেজি। তারপরও খুব বেশি লাভ হয়নি। এবার আরও একটা ‘হেভিওয়েট’ নির্বাচন আসন্ন। ২০২৬-এ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে আবারও রণকৌশল বদলাতে চাইছে বামেরা। দলের অন্দরে বদল আনতে কী করা হবে, তার ছকও কষে ফেলা হয়েছে বলে আলিমুদ্দিন সূত্রে খবর।
এবার থেকে শুধুই শুনবেন নেতারা। কথা বলবে না শীর্ষ নেতৃত্ব। দলের মুখ হিসেবে যাঁরা যে কোনও ইস্যুতে কথা বলেন, তাঁরাই এবার থেকে চুপ থাকবেন! পরিকল্পনা অন্তত তেমনটাই। তাহলে কথা বলবেন কারা? সূত্রের খবর, এবার থেকে বলার সুযোগ দেওয়া হবে কর্মীদের। তাঁরা বলবেন, আর নেতারা শুনবেন। এভাবেই দলীয় কর্মীদের শিক্ষিত করতে চাইছে সিপিএম। দলীয় কর্মীদের মানোন্নয়নও করতে চাইছে তারা।
সূত্রের খবর, নতুন বছরের গোড়া থেকেই সেই পথে হাঁটবে সিপিএম। এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল। শুধু সিদ্ধান্ত নয়, এই বিষয়ে দলের একেবারের তৃণমূল স্তর অর্থাৎ শাখা কমিটি পর্যন্ত সার্কুলার পাঠিয়েছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। যেখানে বলা হয়েছে, দলীয় কর্মীরা এবার থেকে একটি করে বিষয়ে (দলের ঠিক করে দেওয়া) বক্তৃতা করতে হবে।
সপ্তাহ খানেক বা ১০ দিন আগে একটি টপিক দিয়ে দেওয়া হবে বক্তাদের। কেমন হতে পারে সেই টপিক? ধরা যাক, ‘দক্ষিণপন্থী রাজনীতির বাড়বাড়ন্ত, কোন পথে এগোতে পারে বাম রাজনীতি’ অথবা ‘মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে কী করণীয় শাসক দলের?’, ‘সমাজ মাধ্যম বনাম মূল ধারার সংবাদমাধ্যম’, ‘পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি আদতে তৃণমূলের সুবিধা করে দিচ্ছে’, থাকতে পারে এমনই সব টপিক।
কর্মীরা ওই টপিকের উপর পড়াশুনো করে, গবেষণা করে, তথ্য জোগাড় করে বক্তৃতার জন্য তৈরি হবেন। তারপরে দলীয় বৈঠকে অর্থাৎ শাখা কমিটি, এরিয়া কমিটি কিংবা জেলা কমিটির বৈঠকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের উপরে বক্তৃতা করবেন তাঁরা। যেখানে সংশ্লিষ্ট দলীয় নেতৃত্ব শুনবে। বক্তৃতার জন্য সময় মিলবে ৪৫ মিনিট।
দলের অন্দরে চর্চায় উঠে এসেছে যে বহু ভাল ছেলে মেয়ে, পার্টি কমরেড হিসেবে রয়েছেন। যাঁরা বিভিন্ন বিষয়ে আগ্রহী, চর্চা করেন, প্রশ্ন করেন। কিন্তু বক্তৃতার সুযোগ পান না। এই পদ্ধতির মাধ্যমে বক্তৃতার যেমন সুযোগ মিলবে তেমনই দলীয় কর্মীদের মধ্যে পড়াশোনো করা, চর্চা করার আগ্রহও বাড়বে। আদতে যা দলীয় কর্মীদের শিক্ষার মান আরও বাড়াবে বলেই মনে করছেন নেতারা।