Dipankar Bhattacharya: ‘মমতা আছে শুনতে শুনতে বিজেপি না এসে যায়!’, ওড়িশার কথা মনে করালেন দীপঙ্কর

Dipankar Bhattacharya: বাম রাজনীতির জন্য এই ‘জোটে’, এই ‘সমঝোতায়’ বড় সম্ভাবনা দেখছেন সিপিআইএমএল লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। দেখছেন নৈহাটির লিবারেশন প্রার্থী নিজেও। কথা বললেন টিভি-৯ বাংলা ডিজিটালের ডেপুটি এক্সিকিউটিভ এডিটর নির্ণয় ভট্টাচার্যের সঙ্গে।

Dipankar Bhattacharya: ‘মমতা আছে শুনতে শুনতে বিজেপি না এসে যায়!’, ওড়িশার কথা মনে করালেন দীপঙ্কর
দীপঙ্কর ভট্টাচার্যImage Credit source: PTI
Follow Us:
| Updated on: Nov 08, 2024 | 12:04 AM

কলকাতা: মত পার্থক্য প্রচুর, রয়েছে ভাঙনের ইতিহাসও। নকশালবাড়ি থেকে আরজি কর, বাংলাতেও থেকে বাম রাজনীতির নানা রূপ। এদিকে এই প্রথম কোনও নির্বাচনে সরাসরি সিপিআইএমএল প্রার্থীকে সমর্থন করল বামফ্রন্ট। উপনির্বাচনে নৈহাটিতে লড়ছেন বামফ্রন্ট সমর্থিত সিপিআইএমএল প্রার্থী দেবজ্যোতি মজুমদার। তা নিয়েই বঙ্গ রাজনীতির অন্দরে চর্চা তুঙ্গে। ধারেভারে তো উপনির্বচনের গুরুত্ব অন্য নির্বাচনের থেকে কিছুটা হলেও কম, কিন্তু তারপরেও বাম রাজনীতির জন্য এই ‘জোটে’, এই ‘সমঝোতায়’ বড় সম্ভাবনা দেখছেন সিপিআইএমএল লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। দেখছেন নৈহাটির লিবারেশন প্রার্থী নিজেও। কথা বললেন টিভি-৯ বাংলা ডিজিটালের ডেপুটি এক্সিকিউটিভ এডিটর নির্ণয় ভট্টাচার্যের সঙ্গে। 

লিবারেশনের শীর্ষ নেতার সাফ কথা, পশ্চিম বাংলায় যেভাবে পুরো রাজনৈতিক ব্যবস্থা চলছে তাতে যে কোনওদিন এটা ওড়িশা হয়ে যেতে পারে। তাই বামপন্থীদের দ্রুত উঠে আসতে হবে। দ্রুত বাম বিকল্প না হলে বিজেপি বাংলা দখল করে নেবে বলেই মত তাঁর। কিন্তু, তৃণমূলের প্রতি তাঁদের অবস্থান ঠিক কী? অতীতে তো ‘তৃণমূল-সম্পর্ক’ নিয়েও নানা কানাঘুষো শোনা গিয়েছে। এমনকী ইন্ডিয়া জোটের মঞ্চেও লিবারেশন নেতাদের সঙ্গে এক আসনে দেখা গিয়েছে তৃণমূলকে। যদিও এখন দীপঙ্করবাবু বলছেন, “আমরা বলেছিলাম বিজেপিকে একটিও ভোট নয়, কিন্তু তার সঙ্গে একটা কথা বলেছিলাম যে তৃণমূলকে একটুও ছাড় নয়। সেটা অনেকেই খেয়াল করেননি।” 

কী বলছেন নৈহাটির লিবারেশন প্রার্থী? 

অন্য়দিকে নৈহাটির লিবারেশন প্রার্থী দেবজ্যোতি মজুমদার মনে করছেন মানুষ তৃণমূলের কারসাজি ধরে ফেলেছে। উন্নয়নের নাম করে পাহাড়-প্রমাণ অনুন্নয়নের মুখে দাঁড়িয়ে বাংলা। তাই ক্ষোভের পাহাড় মানুষের মনেও। তাঁরাই চাইছেন বিকল্প। আরজি করের আন্দোলনের নির্যাস বাংলার প্রত্যন্ত এলাকায় পৌঁছে যাওয়া তাই প্রমাণ করে বলে মত তাঁর। বলছেন, “প্রচারে বেরিয়ে মানুষের খুব ভাল সাড়া পাচ্ছি। গ্রাম নৈহাটিতে ঘুরে দেখেছি মানুষ আমাদের গ্রহণ করছে। মানুষের মধ্যে শাসকদলের বিরুদ্ধে প্রবল ক্ষোভ রয়েছে। সেটা কিন্তু, শুধু আরজি কর নিয়ে নয়। সবথেকে দূরে যে গ্রাম রয়েছে সেখানে স্বাধীনতার ৭৭ বছর পরেও সেখানকার রাস্তায় আলো নেই। গ্রামের রাস্তায় হাঁটা রীতিমতো কষ্টকর। ওখানকার মেয়েদের টিউশন পড়ে বাড়ি ফিরতে গিয়ে রীতিনতো বেগ পেতে হয়। কন্যাশ্রী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার দিলেও মানুষ বোঝে ওটা সরকারের কোষাগার থেকে যাচ্ছে। তৃণমূল দিচ্ছে না। সরকারের টাকা সাধারণ মানুষের টাকা। তাই মানুষের টাকা নিয়ে মানুষকেই দেওয়া হচ্ছে, এটা সবাই বোঝে। তাই ক্ষোভের জায়গাগুলো আলাদা। আরজি কর নিয়ে তো ওখানকার বাচ্চা বাচ্চা মেয়েরাও রাস্তায় নেমেছে। স্লোগান দিয়েছে। এটা অভূতপূর্ব।” তবে কী এখন থেকেই ছাব্বিশের বিধানসভার রূপরেখা তৈরি হয়ে যাবে? 

দীপঙ্করের সাফ কথা, “সবাইকে হাত মেলাতে হবে। বামপন্থার মধ্যে শক্তি বৃদ্ধি করতে হবে। অবশ্যই এটা বাংলার জন্য দরকার। বিজেপি নেতারা কী ভাষায় কথা বলছেন দেখুন! গোটা ভারতে ঘৃণার রাজনীতি চলছে। হিমন্ত বিশ্ব শর্মা থেকে মিঠুন চক্রবর্তী, গিরিরাজ সিংয়েরা কী ভাষায় কথা বলছে দেখুন! এই ঘৃণার রাজনীতি রুখতেই ইন্ডিয়া জোট তৈরি করতে হয়েছে। সেই একই চ্যালেঞ্জের প্রতিফলন বাংলায় দেখা যাচ্ছে।” এখানেই না থেমে খানিক সদ্য অতীতের রেশ টেনে তিনি বলেন, “আমরা একুশে বলেছিলাম বাংলা যেন অসম বা ত্রিপুরা না হয়ে যায়! এবারের লোকসভা নির্বাচনের পরে আমরা ভেবেছি এই বাংলা যেন ওড়িশা না হয়ে যায়। নবীন পট্টনায়েক আছেন আছেন শুনতে শুনতে বিজেপি চলে এল হঠাৎ! তৃণমূল-মমতা আছে আছে শুনতে শুনতে বিজেপি না এসে যায়! তাই অবস্থা বদলাতে চাই বামপন্থীদের।” সে কারণেই তাঁর মত সব বাম দলকে হাতে হাত মেলাতেই হবে। স্পষ্ট বলছেন, “অতীতে তাঁদের সমীকরণ কী ছিল তা এখন ভাবব না। কারণ রাজনীতি অতীতে আটকে থাকে না, তা ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যায়। তাই সবাই মিলে এই সঙ্কট থেকে বাংলাকে বাঁচাতে।”