কলকাতা: স্কুল খোলার দাবিতে ছাত্র সংগঠনগুলির বিক্ষোভে ফের উত্তপ্ত হতে চলেছে শহর। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে স্কুল খোলার দাবিতে আজ বিক্ষোভ কর্মসূচি এসএফআই-এর। আধ ঘণ্টার ব্যবধানে একই দাবিতে একই জায়গায় পথে নামছে এবিভিপি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনেও বৃহস্পতিবার একই দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি রয়েছে এসএফআই-এর। তিন দিন এসএফআই-এর কর্মসূচি নিয়ে সল্টলেকে ধুন্ধুমার বেঁধেছিল। এদিন দুই ছাত্র সংগঠনের জোড়া বিক্ষোভ সামলাতে সতর্ক পুলিশও।
ক’দিন আগেই বিকাশভবনে প্রতিনিধি দল পাঠাতে গিয়েছিল ভারতীয় ছাত্র ফেডারেশন। সেখানে করুণাময়ী মোড়ে পথ আটকে দেয় পুলিশ। ধস্তাধস্তি হয়। পুলিশ এক প্রকার চ্যাঙদোলা করে ছাত্র নেতাদের গাড়িতে তোলে। বৃহস্পতিবার ফের দফায় দফায় এসএফআই ও এবিভিপি আন্দোলনে নামছে। ইস্যু একই। স্কুল খোলার দাবি।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে স্কুল বন্ধ। মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ছে পড়ুয়ারা। তার সাম্প্রতিকতম জ্বলন্ত উদাহরণ শিলিগুড়ির মেধাবী ছাত্রের আত্মহত্যা। শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও একাংশের মত, পড়ুয়ারা অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। ফলে স্কুল খোলাটা একান্ত জরুরি।
স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় খোলার দাবিতে একাধিকবার সোচ্চার হয়েছে ছাত্র সংগঠনগুলি। বৃহস্পতিবার ফের উত্তাল হতে পারে শহর। একই দাবিতে আধ ঘণ্টার ব্যবধানে পথে নামছে এসএফআই, এবিভিপি। প্রসঙ্গত, এদিন সকালেই স্কুল খোলা নিয়ে সরব হন বিজেপির সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, “ভয় কাটিয়ে মাস্ক পরে স্কুলে যাক পড়ুয়ারা। এখন পড়ুয়াদের ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয়েছে। স্কুল যাওয়ার জন্য সাবধানতার প্রয়োজন, ভয়ের পরিবেশ নয়।”
ছাত্রনেতা সৃজন ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “সবচেয়ে বেশি পড়ুয়ারাই ক্ষতি হচ্ছে। বাংলায় এখন ধীরে ধীরে সবই খুলে যাচ্ছে। তবে কেন বন্ধ থাকবে স্কুল কলেজ? ছাত্রছাত্রীদের কতটা ক্ষতির মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে, তা বুঝতে পারছে সরকার?” এসএফআই-এর দাবি, তারা পানশালার সরকার চান না, পাঠশালার সরকার চান।
প্রসঙ্গত, স্কুল খোলার দাবিতে গত সোমবার বিকাশ ভবন অভিযান কর্মসূচি নেয় এসএফআই। আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল পুলিশও। স্কুল-কলেজ খোলার দাবিতে মিছিল করে বিকাশ ভবনের দিকে যান এসএফআই কর্মী সমর্থকরা। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা করুণাময়ী পৌঁছতেই পথ আটকায় পুলিশ। রাস্তায় বসে পড়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন এসএফআই কর্মী সমর্থকরা। পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। তাঁদেরকে টেনে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যেতে চায় পুলিশ।
অভিযোগ, পুলিশ একপ্রকার চ্যাঙদোলা করে এসএফআই কর্মী সমর্থকদের রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করে। এতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন এসএফআই কর্মী সমর্থকরা।
পরেরদিন মঙ্গলবারও কলেজ স্কোয়ার থেকে স্কুল খোলার দাবিতে মিছিল করে এসএফআই। সেই মিছিলে অবশ্য কোনও উত্তেজনাময় পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। এদিনও অশান্তির আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। জোড়া বিক্ষোভকে কীভাবে সামাল দেয় পুলিশ, সেটাই দেখার।