Jadavpur University: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেঙ্গি খতিয়ে দেখতে মাথায় হাত অতীনের, কথা কাটাকাটি রেজিস্ট্রারের সঙ্গে
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক জায়গা থেকে রোগ বাহিত মশার লার্ভা মিলল। পরিত্যক্ত লোহার কাঠামোই হোক বা ক্যাম্পাস সংলগ্ন পরিত্যক্ত জমি। প্রতিটি জায়গায় মশা এবং লার্ভা কিলবিল করছে। ভয়ংকর এই অবস্থা রেখে রীতিমতো হতভম্ব কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিকরা।

কলকাতা: ডেঙ্গি নিয়ে বারবার সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। তা সত্বেও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে সেই তিমিরেই। কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিক থেকে খোদ ডেপুটি মেয়র একাধিকবার পরিদর্শনে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারপরও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। কিন্তু যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় একের পর এক ছাত্র-ছাত্রী ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন। এক পড়ুয়ার মৃত্যুর পরেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কতটা উদাসীন তা হাতেনাতে টের পেলেন কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পরিষদ তথা ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক জায়গা থেকে রোগ বাহিত মশার লার্ভা মিলল। পরিত্যক্ত লোহার কাঠামোই হোক বা ক্যাম্পাস সংলগ্ন পরিত্যক্ত জমি। প্রতিটি জায়গায় মশা এবং লার্ভা কিলবিল করছে। ভয়ংকর এই অবস্থা রেখে রীতিমতো হতভম্ব কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিকরা। তা দেখে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসুকে পাশে দাঁড় করিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন ডেপুটি মেয়র। পরিষ্কার করা তো দুরস্ত, এই ধরনের জঞ্জাল এবং পরিত্যক্ত পাত্রে জল জমে থাকছে এবং সেখানে মশা লার্ভা বাড়ছে। সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে পুরসভাকে কোনওভাবে জানানো হচ্ছে না, এমন অভিযোগও করলেন অতীনবাবু। অন্যদিকে স্নেহমঞ্জু বসুর দাবি, “আমরা চেষ্টা করছি। অনেক জায়গায় পরিষ্কার হয়েছে। কিন্তু যেটা প্রয়োজন সেটা হচ্ছে লোকবল। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত লোকবল নেই। যে কারণে প্রায় ৬৬ একর জমিতে থাকা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি জায়গায় নজরদারি এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা যাচ্ছে না।”
এদিন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন নম্বর গেটের ডান দিকে পরিত্যক্ত জায়গায় বিভিন্ন গর্ত এবং সেখানে জমা জলে লার্ভা দেখতে পান অতীনবাবুরা। এর পর একে একে সেখান থেকে যান কর্মী আবাসনের পিছনে। সেখানেও বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে জঞ্জাল দেখতে পান। হোস্টেলের পিছনে, টেকনোলজি ভবনের যে অংশে ভগ্ন মালপত্র রাখা হয়েছে, গোপাল চন্দ্র সেন মেমোরিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের কাছে থাকা পরিত্যক্ত অংশে পৌঁছে যান ডেপুটি মেয়র এবং কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিকরা। প্রতিটি জায়গায় ভয়ঙ্কর ছবি দেখে রীতিমতো আঁতকে ওঠেন তাঁরা।

যাদবপুরে অতীন ঘোষ
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কী করে পড়াশোনা চালাচ্ছেন পড়ুয়ারা? এই পরিবেশের মধ্যে পঠন-পাঠন কীভাবে সম্ভব? এ সব দেখে তোপ দাগেন ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। জঞ্জাল পরিষ্কার করে দ্রুত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অংশ পরিষ্কার করে ফেলার নির্দেশ দেন অতীন বাবু। প্রয়োজনে কলকাতা পুরসভার সব ধরনের সহযোগিতা করবে বলেও তিনি জানান। কিন্তু যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের যে অবস্থা হয়ে রয়েছে তা দ্রুত সাফাই না করলে আগামী দিন কলকাতার এই অংশ বড়সড় বিপদের মুখে পড়তে চলেছে এমনই মনে করছেন পুর স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তারা।
যদিও স্নেহমঞ্জু বসুর দাবি, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানার ভিতরে এমন অনেক পরিত্যাক্ত অংশ রয়েছে যা বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি নয়। বিশ্ববিদ্যালয় লাগোয়া বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিষ্ঠানের জমি। সে সব জায়গা সাফাই করা তাঁদের দায়িত্ব নয়। এই বিষয়টি নিয়ে অতীন বাবু এবং জুই বিশ্বাসের সঙ্গে কিছুটা মতবিরোধ হতে দেখা যায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রারের। রীতিমতো চিৎকার করে কথা বলতে দেখা যায় দু’পক্ষকেই। অতীন বাবু যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন, এই সাফাই কাজ হয়ে যাওয়ার পর তিনি নিজে দেখতে আসবেন। এর আগেও নোটিশ দেওয়ার পর পুরসভাকে চাপ দিয়ে এসে নোটিশ প্রত্যাহার করে দেওয়ার জন্য বলেছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু তারপরেও পুরসভা নরম মনোভাব নেয়নি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের ক্যাম্পাসে কলকাতা পুরসভাকে তেমন ভাবে ঢুকতে সাহায্য করে না। নিজেরাও সঠিকভাবে পরিষ্কার করে না বলেই অভিযোগ স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিকদের।
