AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

SSC-র সুপ্রিম রায় Vs প্রাথমিকের হাইকোর্টের রায়, কোথায় ফারাক?

Calcutta High Court: SSC-র প্যানেল বাতিলের সময় যোগ্য চাকরিহারাদের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, তাঁরা নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বসতে পারবেন। এদিন হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গল বেঞ্চের রায় খারিজ করতে গিয়ে শিক্ষকদের পরিবারের কথাও তুলে ধরে। ডিভিশন বেঞ্চ বলে, ৯ বছর পর চাকরি বাতিল হলে পরিবারের উপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। ৯ বছর ধরে যাঁরা চাকরি করছেন, তাঁদের পরিবারকে দেখতে হবে।

SSC-র সুপ্রিম রায় Vs প্রাথমিকের হাইকোর্টের রায়, কোথায় ফারাক?
হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের পর উচ্ছ্বসিত শিক্ষকরা (বাঁদিকে)Image Credit: TV9 Bangla
| Updated on: Dec 04, 2025 | 12:58 PM
Share

কলকাতা: ঠিক আট মাসের পার্থক্য। গত ৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বাতিল হয়ে যায় এসএসসি-র ২০১৬ সালের পুরো প্যানেল। চাকরি হারান প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী। আর আট মাস পর স্বস্তির হাসি ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের মুখে। ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে খারিজ করে দিল ডিভিশন বেঞ্চ। দুই রায়ের পর প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, কেন এসএসসি-র পুরো প্যানেল বাতিল হয়ে গিয়েছে? আর কেনই বা ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বহাল রইল? কোথায় কোথায় পার্থক্য দেখা গেল দুই রায়ে?

এসএসসি-র ২০১৬ সালের প্যানেল বাতিলের সময় পর্যবেক্ষণে কী কী বলেছিল সুপ্রিম কোর্ট?

গত ৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট ২০১৬ সালের এসএসসি-র পুরো প্যানেল বাতিল করে। আর সেই রায় দেওয়ার আগে বিভিন্ন শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্ট ও শীর্ষ আদালতের একাধিক পর্যবেক্ষণ সামনে আসে। যেখানে চাল ও কাঁকরের উদাহরণ আসে। যোগ্য ও অযোগ্য প্রার্থীদের তালিকা পৃথক করে দেওয়ার জন্য স্কুল সার্ভিস কমিশনকে বলেছিল আদালত। কিন্তু, চাল ও কাঁকর আলাদা করা যায়নি। একইসঙ্গে চাকরি বাতিলের রায় দিতে গিয়ে শীর্ষ আদালত বলেছিল, এই মামলায় জালিয়াতিকে গোপন করা হয়েছিল। আর স্বচ্ছ বিচার প্রক্রিয়ায় জালিয়াতিকে আইনসিদ্ধ করা যায় না। প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া যায় না বলেও জানিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।

৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বজায় রেখে কী বলল ডিভিশন বেঞ্চ?

২০২৩ সালের ১২ মে ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই রায়ই এদিন খারিজ করল হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চ। আর সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে খারিজ করে ডিভিশন বেঞ্চ বলল, যে বেনিয়ম হয়েছে, তার জন্য যাঁরা নির্দোষ, তাঁরা যেন এর ফল না ভোগেন। কারণ, নির্দোষদের কোনও ফল্ট নেই। অথরিটির কোনও ফল্টের জন্য তাঁদের চাকরি বাতিল করা যায় না।

এছাড়াও এদিন ডিভিশন বেঞ্চ বলে, কিছু অকৃতকার্যকে গোটা প্রক্রিয়ার ক্ষতি করতে দেওয়া যায় না। প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি হলে গোটা প্যানেল বাতিল করা যায়। কিন্তু, তথ্য বিশ্লেষণ করে এখানে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি পাওয়া যায়নি।

SSC-তে টাকা দিয়ে চাকরির অভিযোগ, প্রাইমারিতে এমন প্রমাণ নেই-

এসএসসি ২০১৬ সালের প্যানেলে টাকা দিয়ে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ ওঠে। কিন্তু, প্রাথমিকে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় টাকা দিয়ে চাকরির কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ২৬৪ জন শিক্ষকের নিয়োগে বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তাঁদের গ্রেস মার্ক দেওয়া হয়েছে। কোয়ালিফাইং নম্বর পাওয়া আরও ৯৬ জনকে চিহ্নিত করা হয়। এদিন ডিভিশন বেঞ্চ বলে, সিবিআই কিছু শিক্ষককে খুঁজে পেয়েছেন, যাঁরা সুযোগ নিয়েছেন। কিন্তু, নির্দোষ শিক্ষকদের দাগিয়ে দেওয়া যায় না।

নির্দোষ শিক্ষকদের পরিবারের কথা ডিভিশন বেঞ্চের বক্তব্যে-

SSC-র প্যানেল বাতিলের সময় যোগ্য চাকরিহারাদের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, তাঁরা নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বসতে পারবেন। এদিন হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গল বেঞ্চের রায় খারিজ করতে গিয়ে শিক্ষকদের পরিবারের কথাও তুলে ধরে। ডিভিশন বেঞ্চ বলে, ৯ বছর পর চাকরি বাতিল হলে পরিবারের উপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। ৯ বছর ধরে যাঁরা চাকরি করছেন, তাঁদের পরিবারকে দেখতে হবে। ডিভিশন বেঞ্চ আরও বলে, যাঁরা সফল হননি, তাঁদের জন্য সব ড্যামেজ করা যায় না। যাঁরা পড়াচ্ছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ হয়নি বলেও রায় দিতে গিয়ে জানান বিচারপতিরা।

ডিভিশন বেঞ্চের রায় নিয়ে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের বক্তব্য-

ডিভিশন বেঞ্চের এই রায় নিয়ে বর্ষীয়ান আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “আপাতত চাকরি বাঁচল বটে। কিন্তু এই রায়ে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতিটা প্রশ্রয় পেয়ে গেল। এটা ভবিষ্যতের জন্য খুবই খারাপ হবে। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে যে দুর্নীতি হল, যে তথ্য আদালতে পেশ করা হল আইনের দিক থেকেও সেটাকে যদি গ্রাহ্য করা না হয় তাহলে আগামীতে তাঁরা দুর্নীতি করতে খানিকটা প্রশ্রয় পাবেনই।”