Dilip Ghosh on Abhishek Banerjee: ‘ওঁ কখন দলের, কখন ঘরের লোক বুঝি না’
Municipal Elections 2022: শনিবার নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে, অভিষেক জানান, আগামী দু মাস এসব বন্ধ রাখা উচিৎ বলেই তাঁর ব্যক্তিগত অভিমত। সামনেই রাজ্যে চার পুরসভার নির্বাচন।
কলকাতা: ভোটমুখী রাজ্য উৎসবের অন্ত নেই। বড়দিনের পর থেকেই হু হু করে বেড়েছে করোনা গ্রাফ। একইসঙ্গে পুরভোট নিয়ে ধীরে ধীরে চড়ছে উত্তেজনার পারদ। কিন্তু, ক্রমবর্ধমান কোভিড গ্রাফেই নজর রেখে বিরোধীদের একাংশের অভিমত নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া হোক। যদিও, রাজ্যের শাসকদল (TMC) এখনও তাতে সহমত পোষণ করেনি। কিন্তু, আগামী ২ মাস অর্থাৎ ফেব্রুয়ারির শেষ পর্যন্ত তাঁর সংসদীয় এলাকায় কোনও রাজনৈতিক বা ধর্মীয় সমাবেশ হবে না। করোনা নিয়ে জরুরি বৈঠকের পর শনিবার এমনটাই ঘোষণা করেছেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ তথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। জানিয়েছেন তাঁর ‘ব্যক্তিগত মতামত’ও। আর তাঁকেই নিশানা করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)।
দিলীপের নিশানায় অভিষেক
দিলীপের কথায়, “ওঁ যে কখন ঘরের লোক আর কখন দলের বুঝতে পারি না! আমরাও চাই নির্বাচন বন্ধ থাকুক। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এতদিন পর সেই কথা বলছেন। আর অভিষেক না চাইলে তৃণমূলই বা চাইছে কী করে! এখন লোককে খুশি করতে এই সব কথা বলছে। শুধু অভিষেক কেন মুখ্যমন্ত্রী কখন রাজ্যের আর কখন লোকের বুঝি না! ”
প্রবীণ বিজেপি নেতার আরও সংযোজন, “করোনা সামলাতে তো তাঁরাই পারছেন না। সব বন্ধ করে দিচ্ছে, স্কুল-কলেজ, বাজার-দোকান…কিন্তু ভোট টা বন্ধ করতে পারছে না তৃণমূল। কিন্তু কেন? ক্ষমতা তো তাদের হাতেই। এই ফাঁকেই চুরি করে ভোট টা করিয়ে নিতে চাইছে। যে ভাবে সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে নির্বাচন, মেলা করার মতো পরিবেশ নেই। ওঁ যদি এমনটা মনে করেন, ওঁর দল কেন নির্বাচন কমিশনে যাচ্ছেন না? যখন ভোট করার দরকার ছিল, তখন করেননি, এখন কেন করছেন?”
অভিষেকের পর্যবেক্ষণ ও ‘ব্যক্তিগত মতামত’
শনিবার নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে, অভিষেক জানান, আগামী দু মাস এসব বন্ধ রাখা উচিৎ বলেই তাঁর ব্যক্তিগত অভিমত। সামনেই রাজ্যে চার পুরসভার নির্বাচন। তার আগেই অভিষেক সরাসরি কোনও মন্তব্য না করলেও তাঁর এই ব্যক্তিগত অভিমত যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই অভিমত রাজনৈতিক মহলের।
কোভিড পরিস্থিতির মধ্যে পুরভোট নিয়ে আগেই প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। ভোট পিছিয়ে দেওয়ার আর্জিও জানানো হয়েছে কমিশনে। যদিও কমিশনের তরফে ভোট প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। এই ইস্যুতে মামলাও চলছে হাইকোর্টে। এরই মধ্য়ে জল্পনা বাড়ালেন সাংসদ তথা শাসক দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তাঁর দাবি, আগামী দু মাস এ সব বন্ধ রাখা উচিৎ। যদিও এটা একেবারে তাঁর ব্যক্তিগত মত বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
এ দিন তিনি ডায়মন্ড হারবারের জন্য একগুচ্ছ বিধি নিষেধ ঘোষণা করার পর তাঁকে নির্বাচন হওয়া উচিৎ কি না, এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। তাতে অভিষেক বলেন, ‘হাইকোর্টে এই নিয়ে মামলা চলছে। এ বিষয়ে আমার মন্তব্য করা উচিৎ নয়। হাইকোর্ট বিষয়টা দেখবে। নির্বাচন কমিশন সেই গাইডলাইনগুলো মেনে ভোট করাবে। তবে আমার ব্যক্তিগত মত যদি আপনি জিজ্ঞেস করেন, তাহলে বলব আগামী ২ মাস সব বন্ধ রাখা উচিৎ।’
শুধু ভোট নয়, তাঁর কথায় ‘বড়দিন, দুর্গা পুজো, কালী পুজো’ অর্থাৎ যে কোনও উৎসবও আপাতত বন্ধ রাখা উচিৎ। একদিকে যখন কোভিড পরিস্থিতিতে রাজ্যের উৎসব নিয়ে সরকারকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে, তার মধ্যেই অভিষেকের এই মন্তব্য গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “যেখানে সংক্রমণ হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে, সেখানে কোনও রাজনৈতিক দলকে সন্তুষ্ট করার জন্য ভোট কার উচিৎ নয়।” তাঁর দাবি, “এখন তৃণমূল, সিপিএম, বিজেপি এসব করার সময় নয়। জীবন বাঁচলে রাজনীতি হবে, ভোট হবে।”
বাম শিবিরের অভিমত
এই প্রসঙ্গে বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “এখন ভাইপোর বোধোদয় হয়েছে।” তবে তাঁর দাবি, গঙ্গাসাগর মেলা বন্ধ না করে মানুষকে বিপদে ফেলছে রাজ্য সরকার। ডায়মন্ড হারবারের ওপর দিয়েই যাবে মেলার লোকজন। ‘পিসি’কে তিনি মেলা বন্ধ করার পরামর্শ দিয়েছেন কি না, এই প্রশ্ন তোলেন সুজন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, কিছুদিন আগেই অভিষেক খেলার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে অনুষ্ঠান করেছেন ডায়মন্ড হারবারে, কারও মুখে মাস্কও ছিল না।
আরও পড়ুন: Deocha Pachami Coal Mining Project: ‘জোর করে জমি অধিগ্রহণ নয়’, পাচামিতে পথে-প্রতিবাদে ২৫ টি সংগঠন