কলকাতা: ত্রিপুরায় আক্রান্ত তৃণমূল নেতৃত্ব ফিরলেন কলকাতা। রবিবার রাতে তৃণমূল সাংসদ দোলা সেনের সহায়ক জাকির হোসেনের শরীরের সিটি স্ক্যান করা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। ত্রিপুরায় আক্রান্ত জাকির হোসেন, দোলা সেন এসএসকেএম-এর ট্রমা কেয়ার ইউনিটে ঢোকেন রাতে। সেখানে ফের বিপ্লব দেবের সরকারকে নিশানা করেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
জাকির হোসেনের সিটি স্ক্যান হওয়া পর্যন্ত এসএসকেএম হাসপাতালেই থাকবেন বলে জানান রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। ফের ত্রিপুরার বিজেপি সরকারকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, “ওখানকার কথা নিয়ে মানবাধিকার কমিশন কিছু বলে না! বললেই চাকরি চলে যাবে।” একইসঙ্গে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবকে নিশানা করে ফিরহাদের মন্তব্য, “ওখানকার মুখ্যমন্ত্রীও তো এই রাস্তা দিয়ে যান। আমরা তো ইট ছুড়ি না! ওই রাজনীতি আমাদের নয়। দোলা সেনের গায়েও ইট লেগেছে!”
অন্যদিকে এসএসকএম-এ দাঁড়িয়ে সাংসদ দোলা সেন বলেন, “আমি আর অপরূপা আজ মরে যেতে পারতাম। আমাদের বাঁচাতে গিয়ে জাকিরদার এই অবস্থা।”
প্রসঙ্গত, রবিবার ফের ত্রিপুরায় আক্রান্ত হন তৃণমূল নেতৃত্ব। দুই মহিলা সাংসদের গাড়ি ঘিরে ব্যাপক ভাঙচুর চলে বলে অভিযোগ। এমনকি সাংসদ অপরূপা পোদ্দারের ব্যাগ ছুড়ে ফেলা দেওয়া হয়। আর সেই ব্যাগ কুড়োতে গেলে এক বৃদ্ধাকেওো মারধর করা হয় বলে তৃণমূলের অভিযোগ। এদিন বিকালেই সাংবাদিক বৈঠক এই ঘটনার প্রবল নিন্দা করেছে তৃণমূল। ত্রিপুরার রাজ্যপাল, মানবাধিকার কমিশন ও মহিলা কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে রাজ্যের শাসক দল।
তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “হামলা ও মামলা দুটোই করছে ওরা! মার খেলেন যাঁরা তাঁদের বিরুদ্ধেই হামলা হচ্ছে।” মানবাধিকার কমিশনকে দলদাস ও বিজেপির শাখা সংগঠন বলে ব্যঙ্গ করে কুণালের সংযুক্তি, “অভিষেক মনে করলে টুসকি বাজিয়ে বিপ্লবের সরকার ফেলে দিতে পারে। সেই জায়গায় আছে তৃণমূল। কিন্তু তৃণমূল সরকার বা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সেটা মনে করেন না। বিজেপির বিধায়করা যোগাযোগ রাখছেন। কিন্তু আমরা মানুষের সমর্থনে, ভোটে জিতে এই সরকারকে উৎখাত করে সরকার গড়ব। মানুষের মহাজোট সঙ্গে থাকবে।” পুরো পরিস্থিতির দিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নজর রাখছেন বলে মন্তব্য কুণালের।
উল্লেখ্য, ত্রিপুরায় আইপ্যাকের টিমকে আটকে রাখার মধ্যে দিয়ে শুরু বিরোধ। তারপর তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ত্রিপুরা পৌঁছলে তাঁর উপর আক্রমণ নেমে আসার অভিযোগ ওঠে। কয়েকদিন আগে ত্রিপুরায় দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে গিয়ে আক্রান্ত হন তৃণমূল কংগ্রেসের যুব নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য, সুদীপ রাহা এবং জয়া দত্তরা। বিজেপির বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করেন তাঁরা। এদিকে ওই ঘটনার পর গ্রেফতার করা হয় তিন যুব নেতা-সহ তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক নেতাকর্মীকে। এবার রবিবার স্বাধীনতা দিবসে ফের একবার তৃণমূল কংগ্রেসের উপর হামলার অভিযোগ উঠল বিপ্লব দেবের রাজ্যে। আরও পড়ুন: বিপ্লবের ত্রিপুরায় মানিক-গড়ে নির্বিঘ্নে তৃণমূলের কর্মসূচি, কোন সমীকরণের ইঙ্গিত?