‘দুয়ারে রেশন’ কিছুতেই চলতে দেবে না, এবার ডিভিশন বেঞ্চে ডিলারদের একাংশ
Duare Ration: হাইকোর্টের বুধবারের রায় নিয়ে অখুশি মামলাকারীরা ডিভিশন বেঞ্চে যান। বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চে ফের এই রেশন ডিলারদের একাংশ মামলা দায়ের করেন।
কলকাতা: ‘মহৎ উদ্দেশ্যেই’ দুয়ারে রেশন প্রকল্পের ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। তাই এই প্রকল্পে স্থগিতাদেশের কোনও কারণ দেখতে পাননি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি। এদিকে নিজেদের দাবিতে অনড় রেশন ডিলারদের একাংশও। দুয়ারে রেশন মামলায় সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে এবার ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হলেন মামলাকারী ডিলাররা।
হাইকোর্টের বুধবারের রায় নিয়ে অখুশি মামলাকারীরা ডিভিশন বেঞ্চে যান। বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চে ফের এই রেশন ডিলারদের একাংশ মামলা দায়ের করেন। তাঁদের বক্তব্য, দ্রুত এ মামলার শুনানি হোক। মামলা দায়েরের অনুমতি দেওয়া হলেও আপাতত এই মামলা দ্রুত শুনানির কোনও প্রয়োজনীয়তা নেই বলেই মনে করছেন বিচারপতিরা। আপাতত শুধুমাত্র রেশন ডিলারদের মামলা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
মামলাকারী রেশন ডিলারদের বক্তব্য, দুয়ারে রেশন প্রকল্প চালু হওয়ায় ডিলারদের উপর চাপ বেড়েছে। ডিলারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে রেশন পৌঁছে দিতে হচ্ছে। কিন্তু এর জন্য তাঁরা সরকারের থেকে আলাদা করে কোনও সাহায্যই পাচ্ছেন না। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, রেশন ডিলারদের হাতে তেমন লোকবলও নেই, যাতে তাঁরা স্থানীয়দের বাড়ি বাড়ি গিয়ে রেশন পৌঁছে দিতে পারেন।
সরকারের তরফে রেশন আইনে কোনওরকম পরিবর্তন করা হয়নি বলেও অভিযোগ ছিল রেশন ডিলারদের। এমনই একগুচ্ছ দাবি-দাওয়া নিয়ে তাঁরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কলকাতা হাইকোর্টে তাঁরা আবেদন করেছিলেন, দুয়ার রেশন প্রকল্পের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হোক। তবে আদালতে এই দাবি যুক্তিগ্রাহ্য হয়নি। হাইকোর্ট মনে করছে, মহৎ উদ্দেশ্য নিয়েই এই প্রকল্পের সূচনা করেছে রাজ্য।
এ প্রসঙ্গে বুধবার বিচারপতি অমৃতা সিনহার পর্যবেক্ষণ ছিল, “প্রয়োজনীয়তাই হল উদ্ভাবনের মূল কারণ। একটা অদৃশ্য ভাইরাস মানুষকে আক্ষরিক অর্থেই বেঁচে থাকার নতুন নতুন পন্থা আবিষ্কার করতে শিখিয়েছে। মানুষের জীবনযাত্রায় আমূল পরিবর্তন এসেছে। ভাইরাসের প্রকোপ থেকে বাঁচতে মানুষ বাধ্য হয়েছে ঘরবন্দি থাকতে। বিভিন্ন সংস্থা মানুষের দরজায় নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার নতুন উপায় আবিষ্কার করেছে। বেসরকারি সংস্থাগুলো এবিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছে। সরকারি বা আধা-সরকারি সংস্থাগুলিও খুব বেশি পিছিয়ে নেই।”
একই সঙ্গে বিচারপতি অমৃতা সিনহার বক্তব্য ছিল, চিকিৎসা, ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা, শিক্ষা, বিচার ব্যবস্থা-সহ সব পরিষেবাই এখন একটি বোতাম টিপেই পাওয়া যাচ্ছে। নিত্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের জিনিসও গ্রাহকদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। কর্মক্ষেত্রের ধারণাও পাল্টাতে শুরু করেছে। মানুষ ওয়ার্ক ফ্রম হোমও করছেন। অনলাইনে কেনাকাটায় অভ্যস্ত হয়েছে নগরজীবন। ভিড়ের মধ্যে দোকানে যাওয়ার ঝুঁকি এড়াতে চাইছেন মানুষ। এরকম একটা পরিস্থিতিতে রাজ্যের দুয়ারে রেশনের নামে মানুষের দোরগোড়ায় রেশন সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ আইন ভাঙার সমান হতে পারে বলে মনে করছেন না তিনি।