কলকাতা: নেই দর্শনার্থীদের ভিড়, বাজছে না কোনও আবহ সঙ্গীত। শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের সামনে কেবল পুলিশ পুলিশে ছয়লাপ। যা একেবারে নজিরবিহীন। অষ্টমীর মধ্যরাত থেকেই ঘোষণা করে দেওয়া হয়, নবমী থেকে শ্রীভূমির পুজোয় দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষেধ। সেই মতো সকাল থেকেই কাউকেই সেভাবে মণ্ডপের সামনে দেখতে পাওয়া যায়নি। যাঁদের দেখা গিয়েছে, তাঁদের বেশিরভাগই উদ্যোক্তা আর হাতে গোনা কয়েকজন আবাসিক।
শ্রীভূমির পুজো মণ্ডপের সামনে আবাসিকরা ছাড়া আর কোনও দর্শনার্থীদের নবমীর সকালে দেখা যায়নি। বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী আর পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পুজো মণ্ডপে মোট তিনটি প্রবেশ ও বাহির পথ রয়েছে। একটা ঘোলাকাটার দিক থেকে, একটি কেষ্টপুর, আরেকটি ভিআইপি এন্ট্রি এক্জিট পয়েন্ট রয়েছে। সব কটি প্রবেশ পথেই পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। আবাসিকরা পরিচয়পত্র দেখিয়ে তবেই মণ্ডপে প্রবেশ করতে পারছেন।
গোটা ঘটনার সূত্রপাত সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ। মণ্ডপে মাত্রাতিরিক্ত ভিড় সামলাতে হিমশিম খায় পুলিশ। এরপর বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের তরফে পুজো উদ্যোক্তাদের কাছে অনুরোধ করা হয় যাতে বুর্জ খলিফার আলো নিভিয়ে দেওয়া হয়। এই নিয়ে পুজো উদ্যোক্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় বচসা, কথা কাটাকাটি হয় পুলিশের। মানুষের নিরাপত্তার কথা ভেবেই দর্শনার্থীদের প্রবেশাধিকার বন্ধের সিদ্ধান্ত, তুঙ্গে ছিল কথা কাটাকাটি, পুজো বন্ধ করে ঘট পুজো করার ভাবনা, মণ্ডপ থেকে পুলিশ প্রহরা তুলে নেওয়ার আর্জি- এই সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি অষ্টমী থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
নবমীতেও দর্শনার্থীদের ঢুকতে দেওয়া হবে কিনা, তা নিয়ে কোনও সদুত্তর দেননি পুলিশ কর্তারাও। অষ্টমীতে মাঝরাত গড়ানোর পরই সাংবাদিক সম্মেলন করে এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়। উচ্চ পদস্থ পুলিশ কর্তাদের উপস্থিতিতে দমকলমন্ত্রী তথা পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা সুজিত বসু জানিয়ে দেন, আজ, অর্থাত্ নবমী থেকে কোনও দর্শনার্থী শ্রীভূমি পুজো মণ্ডপে ঢুকতে পারবেন না। তবে পুজোর অনান্য উপাচার স্বাভাবিক নিয়মেই চলবে।
তবে শ্রীভূমির ভিড় সামলাতে এবার হিমশিম খেয়েছে প্রশাসন। অষ্টমীর রাতে প্রায় ৮ টা নাগাদ হঠাৎই বুর্জ খলিফার বাইরের কাঠামোর সব আলো নিভিয়ে দেওয়া হয়। আলো বন্ধের কিছু আগেই শ্রীভূমি পুজো মণ্ডপের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আসেন পুলিশ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন, এই পুজোর অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা সুজিত বসু। তাঁরা পুজো মণ্ডপ চত্বরে আসার কিছু পরেই আচমকা সব আলো নিভিয়ে দেওয়া হয় বুর্জ খলিফার। সপ্তমী থেকেই যা ভিড় হয়েছিল শ্রীভূমির সামনে, তাতে কার্যত পদপৃষ্ট হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।
এদিকে, শ্রীভূমির ভিড় ঠেকাতে ট্রেন পরিষেবায় কোপ। বিধাননগর স্টেশনে দাঁড়াবে না ডাউন ট্রেন। পুলিশের অনুরোধ মেনে সিদ্ধান্ত পূর্ব রেলের। নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত নেয় শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবও।
আরও পড়ুন: Bike Accident: অষ্টমীতে প্রতিমা দর্শনে বেরিয়েছিলেন তিন বন্ধু, মর্মান্তিক পরিণতি