কলকাতা : এবার বিজেপি শিবিরকে আইনি প্য়াচে ফেলতে তৎপর ঘাসফুল শিবির। ভবানীপুরের বিজেপি প্রার্থী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়ালের বিরুদ্ধে মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার সময় কোভিড বিধি ভঙ্গের অভিযোগ জানিয়েছিল তৃণমূল। গতকালই এই ইস্যুতে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছিল। এবার সেই অভিযোগের ভিত্তিতে প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়ালকে শো-কজ় নোটিস ধরাল নির্বাচন কমিশন।
তৃণমূলের অভিযোগ, ভবানীপুরের বিজেপি প্রার্থী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল তাঁর মনোনয়ন পত্র জমা দিতে যাওয়ার সময় কোভিড বিধি মানেননি। প্রায় ৫০০ জন কর্মী ও সমর্থককে সঙ্গে নিয়ে মনোনয়ন জমা দিতে গিয়েছিলেন। গতকাল এই অভিযোগ পাওয়া মাত্র প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়ালকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
বিজেপি সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই সেই শো-কজ় নোটিসের জবাব পাঠিয়ে দিয়েছেন প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল। চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, মনোনয়ন পত্র জমা দিতে যাওয়ার সময় তিনি কোনওভাবেই করোনা বিধি ভাঙেননি। অনেক কর্মী ও সমর্থক তাঁর মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় গিয়েছিলেন ঠিকই, তবে তাঁরা ভিতরে প্রবেশ করেননি। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং হাতে গোনা কয়েকজন নেতাই প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়ালের সঙ্গে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার সময় ছিলেন। আর কেউ ভিতরে যাননি। পাশাপাশি, বাইরে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনের বলেও জবাবে জানিয়েছেন প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল।
উল্লেখ্য, গতকালই প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল অভিযোগ করেছিলেন, সমস্ত তথ্য হলফনামায় উল্লেখ করেননি ভবানীপুরের তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি প্রার্থীর অভিযোগ ছিল, মমতার বিরুদ্ধে কত কেস রয়েছে, তা হলফনামায় উল্লেখ করেননি তিনি।
হলফনামায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উল্লেখ করেছেন, গত আর্থিক বছরের তুলনায় এই আর্থিক বছরে তাঁর পাঁচ লক্ষ টাকা আয় বেড়েছে। ২০২০-২১ অর্থবর্ষে তাঁর আয় ১৫ লক্ষ ৪৭ হাজার ৮৪৫ টাকা। এখন তাঁর ব্যাঙ্কে রয়েছে ১৩ লক্ষ ১১ হাজার ৫১২ টাকা। তাঁর অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ১৫ লক্ষ ৩৮ হাজার ২৯ টাকা। তাঁর নামে কোনও বাড়ি, গাড়ি, চাষযোগ্য জমি এবং পৈতৃক সম্পত্তি নেই বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন মমতা। তাঁর কোনও ঋণও নেই বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে বিজেপি প্রার্থীর অভিযোগ, তাঁর বিরুদ্ধে কতগুলি কেস রয়েছে, সে কথা হলফনামায় উল্লেখ করেননি মমতা। আর সেই প্রশ্ন তুলেই কমিশনকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল।
এদিকে সোমবারই প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল মনোনয়নপত্র জমা দেন। সঙ্গে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারীরা। মনোনয়ন জমা দিয়ে বেরিয়ে হুঙ্কারের সুরে প্রিয়াঙ্কা বলেছিলেন, “রাজ্যে হিংসা বন্ধ করতে হবে। হিংসার খুনি খেলা বন্ধ করতে হবে। ভবানীপুরের মানুষ একবার ভোট দিয়েছিল। সেটাই ছিল গণতন্ত্র। যেটা মানতে হবে। কিন্তু জোর করে আবার মুখ্যমন্ত্রী ভোট করাচ্ছেন। কারণ ওঁর চেয়ারে বসার জেদ আছ।” আর সেই মনোনয়ন পত্র জমা দিতে যাওয়াকে ঘিরেই এবার তৃণমূল কোভিড বিধি ভঙ্গের অভিযোগ তুলেছে প্রিয়ঙ্কার বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন : Suvendu Adhikari: শুভেন্দুর নিশানায় ‘গর্ভে লালিত দুর্নীতি’, কটাক্ষে ‘শান্তিনিকেতন’, ‘নারুলা’ ও ‘গম্ভীর’