কলকাতা: গঙ্গাসাগর মেলার নজরদারি কমিটি থেকে বাদ পড়লেন শুভেন্দু অধিকারী। পাশাপাশি গঙ্গাসাগর মেলায় সবুজ সঙ্কেতও দিল প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি কেসাং ডোমা ভুটিয়ার ডিভিশন বেঞ্চ।। উল্লেখ্য, গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে প্রথম যে অর্ডার দিয়েছিল হাইকোর্ট, তাতে বড়সড় বদল এল। গোটা গঙ্গাসাগর এলাকাটাই এখন ‘নোটিফায়েড এরিয়া’ অর্থাৎ যেখানে রাজ্যের বিধি কায়েম হতে পারে যে কোনও সময়ই।
গঙ্গাসাগর মেলা সংক্রান্ত মামলায় প্রথমে বলা হয়েছিল, গঙ্গাসাগর মেলা গ্রাউন্ডটি কেবল নোটিফায়েড করা হবে। সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের বেশ কিছু নির্দেশিকা রয়েছে, সেখানে একসঙ্গে কত জন থাকতে পারবেন, কত জন জমায়েত করতে পারবেন। সংখ্যা ৫০ ধার্য করা হয়েছিল। পরের দিনই আইনজীবীরা ফের এসে আর্জি জানিয়েছিলেন যে, গোটা দ্বীপটাকেই ‘নোটিফায়েড এরিয়া’ করা হোক।
মঙ্গলবারের নির্দেশ হাইকোর্ট স্পষ্ট করে দিয়েছে যে গোটা গঙ্গাসাগর এলাকাটাই নোটিফায়েড এরিয়া। অর্থাৎ সেখানে রাজ্য সরকারের যে বিশেষ বিধিবদ্ধ নিয়ম রয়েছে, সেটা মান্যতা দিতে হবে। পাশাপাশি তিন সদস্যের যে কমিটির গঠন করা হয়েছিল, সেটা সম্পূর্ণ রূপে ভেঙে ফেলা হয়েছে। দুই সদস্যের কমিটি তৈরি করা হয়েছে। কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন শুভেন্দু অধিকারীর নাম। কারণ মামলাকারীরা অনেকেই বলেছিলেন যে, শুভেন্দু অধিকারী বিরোধী দলনেতা। সেক্ষেত্রে এই মেলা ঘিরে টানাপোড়েনে লাগতে পারে রাজনৈতিক রঙও।
মামলাকারীদের অনেকেই মনে করেছিলেন, আদালত এমন কয়েকজনকে নিয়ে কমিটি গঠন করুক, যাতে তাঁরা সম্পূর্ণ রূপে রাজনীতি থেকে দূরে থাকেন। চিকিৎসক, বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কমিটি গড়ার কথাও বলা হয়েছিল। কিন্তু সেক্ষেত্রে সরকারি চিকিৎসকদের একাংশও রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন, তাঁদেরকে বাদ দিয়েই কমিটি গড়ার কথা বলা হয়েছিল। মঙ্গলবারের নির্দেশে কমিটি সম্পূর্ণভাবে ভেঙে ফেলা হয়েছে। যে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে, সেখানে শুধুমাত্র অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় ও লিগ্যাল সার্ভিসের সচিবকেও রাখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গঙ্গাসাগর মেলার ক্ষেত্রে প্রথম থেকেই একটি প্রশ্ন মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল, যে প্রচুর লোক সমাগমে কীভাবে কোভিড বিধি মানা সম্ভব? গত শুক্রবারের শুনানিতে সেই বিষয়টি তুলে ধরা হয়।
গঙ্গাসাগরে পাঁচ লক্ষেরও বেশি মানুষ আসেন। রাজ্য সরকার তেমনটাই জানিয়েছিল। সেক্ষেত্রে কত জনকে নিয়ে এই মেলা হয়, অর্থাৎ শেষ পর্যন্ত কত লোকের সমাগম হয়, কত ভিড় আটকানো সম্ভব হয়? কীভাবে পরিস্থিতির মোকাবিলা সম্ভব? সেটাই দেখার। তবে আগের নির্দেশের কিছুটা বদলে মামলাকারী আইনজীবীরা কিছুটা হলেও খুশি। রাজ্য সরকারের গাইডলাইন অনুসরণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আরটিপিসিআর টেস্ট বাধ্যতামূলক। তবে চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল, মেলা বন্ধ করে দিতে। তবে তা হয়নি। তবে ৫ লক্ষের বদলে মেলা প্রাঙ্গনে কীভাবে ৫০ জনের সমাগম করানো যায়, সেটাই চ্যালেঞ্জ রাজ্যের।
আজ আদালত যা যা বলল
দুই সদস্যের কমিটি গঠন।
গঙ্গাসাগর মেলায় আদালতের শর্ত মানা হচ্ছে কিনা, তা দেখবে দুই সদস্যের কমিটি।
জোড়া টিকা ও শংসাপত্র না থাকলে কাউকেই প্রবেশাধিকার নয়।
৭২ ঘণ্টা আগে আরটিপিসিআর রিপোর্ট নেগেটিভ আসতে হবে।
গোটা গঙ্গাসাগর প্রাঙ্গন ‘নোটিফায়েড এরিয়া’ হিসাবে ঘোষণা।
হাইকোর্টের নির্দেশ কার্যকর হচ্ছে কিনা, তা দেখবেন মুখ্যসচিব।
আরও পড়ুন: কোন কোন ক্ষেত্রে কোভিড পরীক্ষার প্রয়োজন নেই? নির্দেশিকা দিয়ে জানাল ICMR