কলকাতা: জন্মদিনেই রহস্যমৃত্যু সুভাষগ্রামের এক তরুণের। খুনে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার তরুণের বন্ধু। গল্ফগ্রিনের এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, খাদ্যে বিষক্রিয়ার জেরে এই মৃত্যু। ফরেন্সিক তদন্ত চলছে।
নিহত তরুণ রিক্তেশ মোদকের জন্মদিন ছিল ১৬ জুলাই। সেই দিনটা বন্ধু কৌশিক মণ্ডলের বাড়িতে কাটাবেন বলে ১৫ জুলাই রাতেই গল্ফগ্রিন চলে গিয়েছিলেন ১৯ বছরের রিক্তেশ। পুলিশ সূত্রে খবর, রাতভর সেখানে চলে আড্ডা, খাওয়া দাওয়া। পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে কৌশিক দেখেন বন্ধুর মুখ থেকে রক্ত পড়ছে। পাশ দিয়ে বেরিয়ে আসছে গ্যাজলাও। অভিযোগ, বারবার ডাকলেও সাড়া দেয়নি রিক্তেশ।
এরপরই ঘাবড়ে গিয়ে মা শিবানী মণ্ডলকে ডাকেন কৌশিক। বহু চেষ্টা করেও রিক্তেশের সাড়া না পেয়ে তাঁর বাড়িতে জানানো হয়। বাঘাযতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তরুণকে। কিন্তু চিকিৎসকরা জানান, অনেক আগেই মৃত্যু হয়েছে রিক্তেশের। সেখান থেকেই খবর পৌঁছয় পুলিশের কাছে। এরপরই কৌশিককে গ্রেফতার করা হয়। এই ঘটনা নিছক দুর্ঘটনা নাকি এর পিছনে বড় কোনও চক্রান্ত রয়েছে তা জানতে কৌশিককে জেরা করছে পুলিশ।
ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গিয়েছে, খাদ্যে বিষক্রিয়া হয়েই এই মৃত্যু হয়েছে। অথচ কৌশিকের পরিবারের দাবি, একই খাবার তাঁরা প্রত্যেকে খেয়েছেন। কৌশিকের স্ত্রী জানান, রাত সাড়ে ৭টা থেকে পৌনে ৮টার মধ্যে দুই বন্ধু বাড়িতে ঢোকেন। এরপর রিক্তেশ সিঙ্গারা, এগরোল, কোল্ড ড্রিঙ্ক খান। পরে ডিনারে পরোটা ও মাংস খান। কৌশিকের পরিবারের দাবি, একই খাবার তাঁরাও খেয়েছেন।
এখানেই খটকা লাগছে পুলিশের। একই খাবার সকলে খেলে কেন শুধুমাত্র রিক্তেশের বিষক্রিয়া হল! কৌশিকের বাড়ির লোকজন জানিয়েছেন, রাতের খাবার খাওয়ার আগে দুই বন্ধু ঘরে বসে গাঁজাও খেয়েছিলেন। কৌশিকের মা জানান, রাত প্রায় ৩টে ৪০ নাগাদ তাঁরা ঘুমোতে যান। তার আগে লুডো খেলছিলেন। দেরি করে ঘুমোনোয় ওঠেনও বেলায়। প্রায় সাড়ে ৯টা নাগাদ ছেলের চিৎকার শুনে ঘুম থেকে ওঠেন। এরপরই দেখেন, রিক্তেশের মুখ থেকে গ্যাজলা বের হচ্ছে।
এই ঘটনায় কার্যত হতবাক স্থানীয়রাও। কী ভাবে একটা জলজ্যান্ত ছেলের এরকম মৃত্যু হল ধন্দে পুলিশও। রিক্তেশের পরিবারের সঙ্গেও কথা বলছে তারা। এদিকে রিক্তেশের মায়ের বক্তব্য, “কৌশিকদের জানাতে হবে কেন ওরা সময়মতো হাসপাতালে নিয়ে গেল না। কলকাতার মতো জায়গায় হাসপাতাল নেই বললে শুনবে না কেউ। আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না। ছেলেকে বার্থ ডে উইশ করলাম। সেটাই শেষ কথা। আমি চাই যা সত্যি তা যেন সামনে আসে।” আরও পড়ুন: কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন স্ত্রী, জামাইকে প্রাতঃরাশ দিতে গিয়ে চোখ কপালে উঠল শাশুড়ির