
কলকাতা: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে স্বাগত জানালেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। ‘প্রেসিডেন্সিয়াল রেফারেন্স’ মামলায় দেশের শীর্ষ আদালতের দেওয়া নির্দেশকে ‘যুগান্তকারী’ বলে উল্লেখ করলেন তিনি। পাশাপাশি, একজন রাজ্যপাল যে শুধু সরকারি কোনও ‘রাবার স্ট্যাম্প’ নন, সেটাও স্মরণ করালেন সিভি আনন্দ বোস।
রাষ্ট্রপতি কিংবা রাজ্য়পাল কতদিন একটি বিল আটকে রাখতে পারেন? এই নিয়ে বেশ কয়েক মাস যাবৎ শুনানি চলছিল দেশের শীর্ষ আদালতে। বৃহস্পতিবার সেই মামলায় পূর্বতন নির্দেশকে খারিজ করেছে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ। রাষ্ট্রপতি কিংবা রাজ্যপালকে কোনও বিলে সম্মতি বা যে কোনও রকম সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সময় বেঁধে দেওয়া যাবে না বলেই মত প্রধান বিচারপতি বিআর গবাই নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চের। এই প্রসঙ্গে অনুচ্ছেদ ১৪৩ উদ্ধৃত করে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, কোনও বিলের ক্ষেত্রেই রাষ্ট্রপতি কিংবা রাজ্য়পালকে প্রতিবার শীর্ষ আদালতের মতামত চাইতে হবে, এমনটা হয় না।
শীর্ষ আদালতের দেওয়া নির্দেশকে যুগান্তকারী বলেই ব্যাখ্যা করেছেন বাংলার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তাঁর মতে, রাজভবন সরকার এবং বিধানসভার মধ্যে সমন্বয়ের যে কাজটা তিন বছর আগে শুরু করেছিল, আজ সেই কাজকেই যেন মান্যতা দিয়েছে শীর্ষ আদালত। শুধু তা-ই নয়, রাজভবনে কোনও বিল অহেতুক পড়ে বা আটকে নেই বলেও দাবি তাঁর।
রাজ্যপালের কথায়, ‘আমার কাছে বর্তমানে চারটি ফাইল (বিল) পড়ে রয়েছে, যা নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা প্রয়োজন। সেই আলোচনাপর্ব শেষ হলেই আমি ওই বিলগুলি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে নেব। এছাড়াও, কয়েকটি বিল রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হয়েছে। বাকি তিনটি বিল এখনও বিচারাধীন। এক কথায়, রাজভবনে কোনও বিলই অহেতুক পড়ে নেই।‘ রাজ্যপালের সংযোজন, ‘সংবিধান একজন নির্বাচন মুখ্যমন্ত্রী ও নিযুক্ত রাজ্যপালকে বেঁধে-বেঁধে রাখতে একটি লক্ষণরেখা তৈরি করে গিয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট আজ সেই লক্ষণরেখাকে আবারও পুনরুজ্জীবিত করে তুলল।’
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া নির্দেশের আরও একটি দিক রয়েছে। তা হল বিল নিয়ে দেওয়া শীর্ষ আদালতের শর্ত। সাংবিধানিক বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, রাষ্ট্রপতি কিংবা রাজ্যপালকে বিল নিয়ে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া সংবিধান পরিপন্থী কিন্তু ব্যতিক্রম রয়েছে। আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘রাজ্যপাল কিংবা রাষ্ট্রপতি বিনা কারণেই বাড়তি সময়ের জন্য কোনও একটি বিলকে ফেলে রাখেন বা আটকে রাখেন। তখন আদালত তাঁর সীমিত ক্ষমতার ভিত্তিতে রাজ্য়পাল কিংবা রাষ্ট্রপতিকে সেই নিয়ে নিজেদের সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য একটা সময় বেঁধে দিতেই পারে।’