Governor C V Ananda Bose: ‘রাজ্যপাল বিজেপি ক্যাডার, ধনখড়ের পথ অনুসরণ করছেন’, শাসকের তোপে ফের কি ফিরছে সংঘাত?

Governor C V Ananda Bose: তৃণমূল মুখপত্রে রাজ্যপালকে সরাসরি নিশানা করায় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাজ্য রাজ্যপালের সংঘাতের আবহ তৈরি হয়ে গিয়েছে।

Governor C V Ananda Bose: ‘রাজ্যপাল বিজেপি ক্যাডার, ধনখড়ের পথ অনুসরণ করছেন’, শাসকের তোপে ফের কি ফিরছে সংঘাত?
রাজ্য রাজ্যপাল সংঘাত তুঙ্গে?
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 27, 2023 | 2:00 PM

কলকাতা: শঙ্কাই সত্যি, আনন্দ আমলেও ফিরল ধনখড় জমানার তিক্ততার স্মৃতি। মধুচন্দ্রিমা পর্বের ইতি। তৃণমূল মুখপত্রে রাজ্যপালকে সরাসরি নিশানা। রাজ্যপালের কড়া বিবৃতি ঘিরে তুঙ্গে তরজা। তা নিয়ে জাগো বাংলায় রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে সমালোচনা করে ‘ বিজেপির ক্যাডার’ বলে সম্মোধন। রাজ্যপালের বিবৃতি নিয়ে প্রশ্ন তৃণমূল কংগ্রেসের। মুখপত্রে লেখা , ‘ধনখড়ের পথ অনুসরণ করছেন বর্তমান রাজ্যপাল’। ‘রাজ্যপাল একসময়ে বিজেপির ক্যাডার ছিলেন’। ‘বিবৃতি আদতে রাজনৈতিক পক্ষপাত ছাড়া কিছুই না’।

স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের ওপর হামলার ঘটনা কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন রাজ্যপাল। তিনি তাঁর বিবৃতিতে পরিষ্কার করে দিয়েছেন, গণতন্ত্র রক্ষার ক্ষেত্রে তিনি কঠোর হবেন। এই বিবৃতি দেওয়ার পরই রাজ্য়পালকে ‘বিজেপি-র ক্যাডার’বলে কটাক্ষ করল শাসকদল। তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’য় প্রশ্ন করা হয়, বিএসএফের গুলিতে যখন রাজ্যেরই কোনও শিশুর মৃত্যু হয়, তখন কেন রাজ্যপাল কোনও প্রশ্ন করেন না। এর আগে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় প্রশ্ন তুলেছিলেন, সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে দাঁড়িয়ে রাজ্য সরকার যে কাজ করছে, তা ঠিক হচ্ছে না। সামাজিক মাধ্য়মে একাধিকবার সোচ্চার হয়েছিলেন। তবে বর্তমান রাজ্যপাল প্রসঙ্গে অন্য় মত পোষণ করেছিলেন শাসক দলের নেতৃত্বও। রাজভবনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে রাজ্যপালের হাতেখড়ি অনুষ্ঠানও হয়। কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের কনভয়ে হামলার ঘটনায় রাজভবন কড়া হতেই কার্যত বদলে গেল চিন্তাভাবনা। রাজভবনের তরফে বিবৃতি জারি করে রাজ্যপাল আনন্দ বোস স্পষ্টত জানিয়েছেন, আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হলে তিনি চুপ থাকবেন না। তিনি আরও বলেন, “প্রতিবাদ গণতন্ত্রের অংশ কিন্তু হিংসা নিয়ম-বিরুদ্ধ।” আর তারপর সোমবারই ‘জাগো বাংলা’র সম্পাদকীয়তে লেখা হল, “রাজ্যপাল যে আসলে বিজেপিরই গোপন অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়িত করার প্রতিনিধি তা প্রমাণ করেছিলেন জগদীপ ধনকড়। প্রাক্তন রাজ্যপালের পথ দ্রুত অনুসরণ করার প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েছেন বর্তমান রাজ্যপাল।”

তৃণমূল মুখপত্রে রাজ্যপালকে সরাসরি নিশানা করায় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাজ্য রাজ্যপালের সংঘাতের আবহ তৈরি হয়ে গিয়েছে।

এপ্রসঙ্গে বিজেপি নেতা সজল ঘোষ বলেন, “অন্যায়টাকে যদি কেউ চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, তাহলে এই সরকারের কাছে সেটাই অন্যায়। ক’দিন আগে হাতেখড়ি করালেন রাজ্যপালের। এবার যখন তিনি পড়তে ও বুঝতে শিখলেন দেওয়াল লিখনটা, তিনি যখন সত্যি কথা বলতে শুরু করলেন, তখন তিনি খারাপ হয়ে গেলেন। ক’দিন আগে তিনিই নাকি ছিলেন প্রকৃত রাজ্যপাল। এখন তিনি বলছেন সত্যি কথা, এখন খারাপ হয়ে গিয়েছেন।”

প্রসঙ্গত, উল্লেখ্য, শনিবার দিনহাটায় কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর কনভয়ে হামলার অভিযোগ ওঠে। এরপরই রাজভবনে গিয়ে দেখা করে আসেন নিশীথ প্রামাণিক। ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বিবৃতি জারি করেন রাজ্যপাল। ইতিমধ্যে এই ইস্যুতে প্রশাসনের কাছ থেকে রিপোর্টও তলব করেছেন রাজ্য়পাল।

তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “বাংলার এক রাজবংশী যুবককে ১৮০টা গুলি দিয়ে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যপাল কেন  তখন কোনও স্টেটমেন্ট দেন নি?” নিশীথের নাম না করে তিনি বলেন, “এমন একজন, সিবিআই-এর এফআইআর-এ ওর   নামে আছে, তোলাবাজ, দলবদলু, যে বিজেপিতে গেছে গ্রেফতারি এড়াতে, তার হয়ে কথা বলছেন! রাজ্যপাল পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে জ্ঞান দেওয়ার আগে বিএসএফকে জ্ঞান দিন, সিবিআই-কে জ্ঞান দিন। তারপর আপনি এইসব চাকরি বাঁচানোর স্টেটমেন্ট করবেন। রাজ্যপাল তাঁর কথা বলতেই পারেন, কিন্তু তার সঙ্গে যদি রাজ্যের বাস্তব পরিস্থিতির মিল না থাকে, সেক্ষেত্রে নিশ্চিতভাবে আমরাও তার জবাব দেব।”