কলকাতা: অবশেষে ১০ দিন পর পাহাড়-সফর সেরে কলকাতায় ফিরছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। গত ২৪ ডিসেম্বর উত্তরবঙ্গের পথে যাত্রা করেছিলেন ধনখড়। মঙ্গলবার সকালে রাজ্যপালের অফিশিয়াল টুইটার হ্যান্ডেলে লেখা হয়েছে, পাহাড়ে ১০ দিনের সফরে মূলত জিটিএ নির্বাচন (GTA), চা-পর্যটন ও পাহাড়ের উন্নয়নেই নজর দিয়েছেন রাজ্যপাল (Jagdeep Dhankhar)
After 10 day involved fruitful visit to North Bengal WB Guv Shri Jagdeep Dhankhar will reach Bagdogra Airport today at 1 PM for Kolkata. His focus was #GTA, Tea & Tourism industry as also integrated development of region as it would immensely help employment & prosperity of area.
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) January 4, 2022
তবে এই প্রথম নয়। পাহাড়ের জিটিএ নির্বাচন নিয়ে আগেও একাধিকবার রাজ্যসরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন রাজ্যপাল। পাল্টা তোপ দেগেছে শাসকশিবিরও। উত্তরবঙ্গে সফরের আগেই জিটিএ নির্বাচন নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ধনখড়। বলেছিলেন, “বছরের পর জিটিএ অডিট হয় না। কোটি কোটি টাকার নয়ছয় করা হয়েছে। অডিট হলেই সব ‘দুধ কা দুধ, পানি কা পানি’ হয়ে যাবে।” তারপরেও একাধিকবার পাহাড়ভ্রমণকালেও জিটিএ প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন ধনখড়।
কিছুদিন আগেই জিটিএ প্রশাসক মণ্ডলীর উপর ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন রাজ্যপাল। গোর্খা টেরিটরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (GTA) তহবিলে ব্যাপক অঙ্কের অপব্যবহারের অভিযোগ তোলেন তিনি। জিটিএ-র কাজকর্মের যাবতীয় রিপোর্ট চেয়ে পাঠান ধনখড়। গত ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে সেই রিপোর্ট রাজ্যপালের কাছে পাঠানোর কথা। তাই পাহাড়সফর থেকে ফিরে জিটিএ ইস্যুতে রাজ্যপাল কী বক্তব্য রাখেন তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
জিটিএ নিয়ে রাজ্যপাল টুইটারে লেখেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জিটিএ-তে একেবারে গড়বড়ে অবস্থা। জিটিএ গঠনের পর এক দশক পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও ক্যাগ অডিট হয়নি। জিটিএ আইন, ২০১১ এর ৫৫(১০) ধারা অনুযায়ী, জিটিএ-র কার্যকলাপের কোনও রিপোর্ট দেওয়া হয়নি।”
তিনি আরও লেখেন, “জিটিএ প্রশাসক মণ্ডলী ২০২১ সালের ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে জিটিএ আইনের ৫৫ (১০) ধারা অনুযায়ী সমস্ত কাজের আপডেট এবং রিপোর্ট জমা করতে হবে।” সেইসঙ্গে রাজ্যপালের বক্তব্য, পূর্বের জিটিএ বোর্ড এবং বর্তমান প্রশাসক মণ্ডলীর ভূমিকায় যথেষ্টই হতাশ। জিটিএ-র তহবিল অপব্যবহারে অভিযোগ তুলেছেন রাজ্যপাল। তাঁর কথায়, জিটিএ দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে।”
উল্লেখ্য, জিটিএ নিয়ে এর আগেও টুইটারে সরব হয়েছিলেন রাজ্যপাল। তাঁর বক্তব্য ছিল, জিটিএ (GTA) নিয়ে একাধিক অভিযোগ এসেছে। কোটি কোটি টাকা আর্থিক গরমিলের অভিযোগ এসেছে। কোনও নির্বাচিত প্রতিনিধি নেই। কোনও উন্নয়নমূলক কাজ হয়নি। আর্থিক অনিয়ম হয়েছে। সিএজি (CAG) দিয়ে জিটিএ’র (GTA) অডিট করানো হবে বলেও বলেছিলেন রাজ্যপাল।
এদিকে কয়েক মাস আগে কার্শিয়াঙে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, নতুন ভোটার তালিকা এলেই পাহাড়ে জিটিএ নির্বাচন হবে। সভা থেকে তৃণমূল নেত্রী বলেন, “নতুন ভোটার লিস্ট এলেই আমরা জিটিএ নিয়ে এগোব। আমরা পাহাড়ের উন্নয়ন চাই। নির্বাচন হওয়া জরুরি। নিজেদের মধ্যে কোনও বিরোধ নয়। ঝগড়া নয়। একসঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে উন্নয়নের কাজ করব। জিটিএ নির্বাচন হবে। ওটার সঙ্গে লেগে থাকতে হবে।” এখানেই না থেমে তৃণমূল নেত্রী আরও যোগ করেন, “সবসময় কাজে থাকতে পারবে এমন কাউকে জিটিএ-র দায়িত্ব দেওয়া ভাল।” তারপর, দার্জিলিঙের জেলাশাসককে জিটিএ-র দায়িত্ব দেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: Post Poll Violence Case: হিংসা মামলায় ফের গ্রেফতারি! নরেন্দ্রপুরে বিজেপি কর্মী খুনে সিবিআইয়ের জালে ২