Post Poll Violence Case: হিংসা মামলায় ফের গ্রেফতারি! নরেন্দ্রপুরে বিজেপি কর্মী খুনে সিবিআইয়ের জালে ২

CBI: গত ২০ মে, নির্মল মণ্ডল নামের এক বিজেপি কর্মীকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ ওঠে । স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত  হন ওই কর্মীর স্ত্রীও।

Post Poll Violence Case: হিংসা মামলায় ফের গ্রেফতারি! নরেন্দ্রপুরে বিজেপি কর্মী খুনে সিবিআইয়ের জালে ২
হিংসা তদন্তে সিবিআই, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 04, 2022 | 12:38 PM

কলকাতা: ভোট পরবর্তী হিংসা (Post Poll Violence) তদন্তে ফের গ্রেফতারি। দক্ষিণ ২৪ পরগনার নরেন্দ্রপুরে বিজেপি কর্মী নির্মল মণ্ডলকে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় ২ জনকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই (CBI)। ধৃতদের কোনও রাজনৈতিক পরিচয় এখনও জানা যায়নি। মঙ্গলবারই ওই দুই ধৃতকে আদালতে তোলা হবে।

সিবিআই সূত্রে খবর, গত বিধানসভা নির্বাচনে ভোটের ফল ঘোষণার পর পরেই রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবর সামনে এসেছিল। বাদ যায়নি নরেন্দ্রপুরও। গত ২০ মে, নির্মল মণ্ডল নামের এক বিজেপি কর্মীকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ ওঠে । স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত  হন ওই কর্মীর স্ত্রীও। এমনকী, তাঁর বাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করে শাসক শিবির।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘটনার রাতে কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথে আক্রান্ত হন ওই বিজেপি কর্মী। অভিযোগ ওঠে,  নির্মল মণ্ডল নামের ওই বিজেপি কর্মীকে লোহার রড দিয়ে তাঁর মাথায়, ঘাড়ে ও বুকে এলোপাথাড়ি মারা হয়। মারধরের চোটে ঘটনাস্থলেই অচৈতন্য হয়ে পড়ে যান নির্মলবাবু। এর পরেই দুষ্কৃতীরা এলাকা ছেড়ে গা ঢাকা দেয়।

রাতেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই কর্মীকে উদ্ধার করে গড়িয়ার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে সেখানেই মৃত্যু হয় ওই বিজেপি কর্মীর। পদ্ম শিবিরের তরফে অভিযোগ ওঠে, তাঁদের দলীয় কর্মীকে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা মারধর করেছে।

এ বার, নির্মল মণ্ডল খুনের ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। মঙ্গলবার, মৃতের বাড়ি ও আশপাশের এলাকাও ঘুরে দেখেন তদন্তকারীরা। এলাকা থেকেই ওই দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে খবর সূত্রের।

এদিকে, ভোট পরবর্তী অশান্তি মামলায় ২১টি ধর্ষণের অভিযোগ ফিরিয়ে দিয়েছে সিবিআই। অভিযোগগুলির সপক্ষে কোনও প্রমাণ নেই বলেই দাবি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশন বা এনএইচআরসি (NHRC)-এর দাখিল করা রিপোর্টে এই অভিযোগগুলি ছিল। সেখানে বলা হয়েছিল ২১টি যৌন হেনস্তার অভিযোগের কথা। কিন্তু সিবিআইয়ের তদন্তে এই অভিযোগের সপক্ষে কোনও প্রমাণ মেলেনি।

প্রথম যখন এই ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআই (CBI) ও স্পেশাল ইনভেন্টিগেশন টিম বা সিটকে (SIT) তদন্তভার দেয়, সেই সময় বলা হয়েছিল যে কোনও ধরনের খুন বা ধর্ষণের বিষয় থাকে তা হলে সেই অভিযোগ তদন্ত করে দেখবে সিবিআই। বাকি যত ধরনের অভিযোগ তার তদন্ত করবে সিট।

সোমবার ভোট পরবর্তী হিংসা মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চে। এদিন সিবিআইয়ের তরফে একটি রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়।  মুখবন্ধ খামে রিপোর্ট জমা দেয় সিটও। ৬৮৯টি মামলার মধ্যে ১০টি মামলা বাদ দিয়ে রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। বাকি দশটির রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে আগামী এক মাসের মধ্যে।

একইসঙ্গে ১০টি মামলার তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট জমা পড়েছে। বাকি ৩৮টির তদন্ত চলছে। সিটের পক্ষ থেকে ৫৭৩টি কেসের রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। সিটকে আগামী শুনানির দিন বাকি কেসের তদন্ত রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২৪ জানুয়ারি ফের এই মামলার শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।

ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা নিয়ে হাইকোর্টে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার পাতার রিপোর্ট দিয়েছিল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। সেখানে অসংখ্য অভিযোগ তোলা হয়। “রাজ্যে আইনের শাসন নেই। শাসকের ইচ্ছাই এখানে আইন”, এমনও রিপোর্টে দাবি করেছিল কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশন।

সোমবার সিবিআইয়ের তরফে আইনজীবী অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ওয়াই জে দস্তুর ভোট পরবর্তী অশান্তি মামলায় রিপোর্ট পেশ করেন। এই রিপোর্ট অনুযায়ী ৫২টি খুন বা অস্বাভাবিক মৃত্যুর অভিযোগের তদন্তে নামে সিবিআই। এর মধ্যে ১০টির পূর্ণাঙ্গ চার্জশিট জমা দিয়েছে। ৩৮ মামলার সিবিআই তদন্ত চলছে। সোমবার ২টি মামলা সিটের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: গুরুদায়িত্ব কাঁধে, আজই কলকাতা হয়ে সৈকত-রাজ্যে সৌরভ