কলকাতা : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) পরপর আক্রমণের পর এবার জবাব দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankhar)। তিনি সাফ জানালেন কোনও কুকথা বলেই তাঁকে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করা থেকে বিরত করা যাবে না। রাজ্যপাল (Governor) বলেন, ‘আমি সংবিধানের নামে শপথ নিয়েছি। আমার দায়িত্ব রাজ্যে আইনের শাসন সঠিক ভাবে পালন করা হচ্ছে কি না, তা দেখা।’ কোনও প্রমাণ ছাড়াই রাজ্যপাল ও রাজভবনের (Raj Bhawan) বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী ভয়ঙ্কর অভিযোগ এনেছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। বুধবারই নেতাজি ইন্ডোরের সভা থেকে রাজ্যপালের নাম না করে ‘ঘোড়ার পাল’ বলে কটাক্ষ করেন মমতা। আর তারপরই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী ভুল তথ্য দিচ্ছেন বলেও দাবি করেছেন তিনি।
এ দিন রাজ্যপাল সাফ জানান, তাঁর টেবিলে কোনও ফাইল পড়ে নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি নস্যাৎ করে তিনি জানান, কোনও কাজ ফেলে রাখেননি তিনি। তাঁর দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, যেমন খুশি অভিযোগ করে চলেছেন তাঁর বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাতে গিয়ে বলেছিলেন, রাজ্যপাল প্রত্যেকদিন তাজ বেঙ্গল থেকে খাবার আনান। প্রয়োজনে সেই বিল সামনে আনবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মমতা। এ দিন সেই প্রসঙ্গে ধনখড় বলেন, ‘আমি প্রতিদিন তাজ বেঙ্গল খাবার আনাই বলে যে তথ্য মমতা দিয়েছেন, তা ১০০ শতাংশ ভুল।’
রাজ্যপাল দাবি করেন, তিনি আসার পর থেকে ৯০০ টি টুইট করেছেন, যার উত্তর মেলেনি। তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী যা মনে এসেছে, সেই অভিযোগ করেছেন। আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু কোনও ভাবেই আমাকে আমার সাংবিধানিক দায়িত্ব থেকে সরানো যাবে না।’ তিনি জানান, রাজ্য আইনের শাসন সঠিক ভাবে পালন হচ্ছে কি না, তা দেখা রাজ্যপালের সাংবিধানিক দায়িত্ব।
মা ক্যান্টিনের ব্যাপারে তথ্য তলব করেছিলেন রাজ্যপাল। মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, তিনি এই ব্যাপারে কৈফিয়ত দিতে বাধ্য নন। রাজ্যপাল এ দিন সেই প্রসঙ্গে বলেন, ‘ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত চলেছিল মা ক্যান্টিন। আর ১ এপ্রিল থেকে সরকার গঠন হয়েছিল। তাই আমি শুধু জানতে চেয়েছিলাম মা ক্যান্টিনের টাকা কোথা থেকে আসছে। উত্তর দেওয়া উচিত ছিল।’
সম্প্রতি মমতা অভিযোগ করেছেন, রাজভবন থেকেই পেগাসাস চলে বলে। সেই ইস্যুতে পাল্টা তোপ দেগে রাজ্যপাল দাবি করেন, এ রাজ্যে বর্তমান সরকারের জন্যই মানুষ হোয়াটসঅ্যাপ বা ফেসটাইমে কথা বলতে বাধ্য হয়েছেন।
কোনও টুইটে খারাপ ভাষা ব্যবহার করা হয়নি, অপ্রাসঙ্গিক টুইটও করা হয়নি বলে দাবি করেন রাজ্যপাল। তাঁর কথায়, ‘রাজ্যে আইনের শাসন চলছে না। শাসকের আইন চলছে। এটা গণতন্ত্রের পক্ষে ক্ষতিকর।’ উল্লেখ্য, রাজ্যপালকে সরানোর আর্জি জানিয়ে একাধিকবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি পাঠিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, মুখ্যমন্ত্রী নিজেই জানিয়েছেন যে তিনি টুইটারে ব্লক করে দিয়েছেন রাজ্যপালকে। এরপরই মুখ খুললেন রাজ্যপাল।
আরও পড়ুন : Samik Bhattacharya: ‘উনি চান, তৃণমূলের কেউ রাজ্যপাল হোক’ মমতাকে খোঁচা পদ্ম শিবিরের