RG Kar Hospital: এবার আরজি করের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ স্বাস্থ্য দফতরের
RG Kar: এনআরএসের অধ্যক্ষ শৈবাল মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে গঠিত কমিটিকে দু'সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
কলকাতা: আরজিকরকাণ্ডে (RG Kar Medical College Hospital) নয়া মোড়। দীপাবলির আগে একযোগে দু’টি কেলেঙ্কারির অভিযোগ তুলেছিলেন আরজিকর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। স্টেন্ট কেলেঙ্কারির রেশ কাটতে না কাটতে আরজিকরে অস্থি প্রতিস্থাপনে কোটি টাকার তছরূপ নিয়ে প্রকাশ্যে তোপ দেগেছিলেন। এবার সেই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করল স্বাস্থ্য ভবন।
এনআরএসের অধ্যক্ষ শৈবাল মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে গঠিত কমিটিকে দু’সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। ঘটনাচক্রে, গত ২ নভেম্বর আরজিকরের আন্দোলনকারীরা আমরণ অনশন প্রত্যাহার করেন। সে দিনই এই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য।
কী ধরনের অভিযোগ তা নির্দেশিকায় স্পষ্ট করা হয়নি। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের এমএসভিপি থাকাকালীন আরজিকরের বর্তমান অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বাড়ি-জমি ক্রয় সংক্রান্ত ভিজিল্যান্স কমিশন হয়েছিল। সেই সূত্রে এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে খবর।
কিন্তু প্রশ্ন হল, ভিজিল্যান্স কমিশনের সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার পরই এমএসভিপি থেকে অধ্যক্ষ হন সন্দীপ ঘোষ। তাহলে এতদিন পরে সেই ঘটনার তদন্ত কেন? এ বিষয়ে স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের বক্তব্য, ন্যাশনালে এমএসভিপি থাকার সময় প্রস্থেটিক সংক্রান্ত একটি অভিযোগ ছিল। পাশাপাশি, বিভাগীয় প্রধানেরাও অধ্যক্ষের আচরণ নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন। সেই সূত্রে তদন্ত কমিটি বলেও মত একাংশের।
সূত্রের খবর, অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন, তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন না। টিভি নাইন বাংলার তরফে নির্দেশের প্রতিলিপি পাঠিয়ে যোগাযোগ করা হয়েছিল। এখনও পর্যন্ত তার কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। নীরব স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্যও।
কিছুদিন আগেই আরজি করের স্টেন্ট কেলেঙ্কারির অভিযোগ সামনে আসে। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, সময় মতো ব্যবহার না হওয়ায় হাসপাতালের ইন্ডোর এমার্জেন্সি ফার্মাসিতে পড়ে পড়ে নষ্ট হয়েছে ২২১টি স্টেন্ট। ইন্ডোর এমার্জেন্সি ফার্মাসিতে স্টেন্ট থাকা সত্ত্বেও নতুন করে স্টেন্টের বরাত দেওয়া হয়েছিল। যার প্রত্যেকটির দাম ছিল ৩০ হাজার টাকা।
এরপরই আরও এক কেলেঙ্কারি সামনে আসে। কোটি কোটি টাকার আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে এই সরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। জানা যায়, সরকার নির্ধারিত সংস্থা থেকে চিকিৎসা সংক্রান্ত সরঞ্জাম না কিনে, কেনা হচ্ছে অন্য সংস্থা থেকে। তার জন্য দিতে হচ্ছে অনেক বেশি টাকা। মূলত অস্থিবিভাগের বিরুদ্ধেই এই অভিযোগ ওঠে। হাঁটু প্রতিস্থাপনের সরঞ্জাম কেনার ক্ষেত্রেই এই উঠেছে এই অভিযোগ।
এই কেলেঙ্কারিতে সরাসরি হাসপাতালের প্রাক্তন ডেপুটি সুপারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন বর্তমান অধ্যক্ষ। অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ বলেন, ‘অনেক বেশি দাম দিয়ে সরঞ্জাম কেনা হয়। ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা বেশি পড়ে।’ এই সব কেলেঙ্কারির কথা হাসপাতালের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার সুপ্রিয় চৌধুরী জানতেন বলে দাবি করেন তিনি। পাশাপাশি, অস্থি বিভাগের প্রাক্তন প্রধান সন্দীপ রায় ও অধ্যাপক মানস বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও অভিযোগ ওঠে।
এ নিয়ে আর জি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার সুপ্রিয় চৌধুরী বলেছিলেন, এই অস্থি বিভাগ থেকে যেমন সরঞ্জাম চাওয়া হতো, তেমনটাই কেনার ব্যবস্থা করতেন তিনি। প্রয়োজনের বাইরে গিয়ে কিছু কেনেননি বলে জানান তিনি।
হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান সুদীপ্ত রায়ের বক্তব্য ছিল, “আমি আসার পর বিষয়টা জানতে পেরেছি। ইতিমধ্যেই অন্তর্বর্তী তদন্তও শুরু করা হয়েছে।” এসবের মধ্যেই অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করল স্বাস্থ্য ভবন।
আরও পড়ুন: সোমবার রাজপথে মিছিল বিজেপির, এখনও অনুমতি দিল না লালবাজার