Hemophilia Treatment: টাকা নেই স্বাস্থ্য দফতরের! প্রাণদায়ী ইঞ্জেকশন না পেয়ে ফিরছে হিমোফিলিয়া আক্রান্ত শিশুরা
Hemophilia Treatment: প্রাণদায়ী ইঞ্জেকশন মিলছে না গত ৬ মাস ধরে। রাজ্য জুড়ে তৈরি হয়েছে সঙ্কট।
কেন দেওয়া হয় এই ইনজেকশন?
হিমোফিলিয়া নামক বংশগত এই রোগে রক্ত জমাট বাঁধে না। রক্ত জমাট বাঁধার জন্য কিছু ফ্যাক্টরের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। বাইরে থেকে সেই ফ্যাক্টর শরীরে প্রবেশ করিয়ে রক্ত জমাট বাঁধানো সম্ভব। ফ্যাক্টর ৮- এর অভাব হলে বলা হয় হিমোফিলিয়া এ ও ফ্যাক্টর-৯ এর অভাব হলে বলা হয় হিমোফিলিয়া বি।
বাইরে থেকে শরীরে ফ্যাক্টর প্রবেশ করানোর ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা রয়েছে। একটা সময়ের পর ওই ফ্যাক্টর প্রবেশ করালেও আর কোনও লাভ হয় না। তখনই এই ইঞ্জেকশনের প্রয়োজন পড়ে। প্রাণদায়ী সেই ইঞ্জেকশন দিলে রোগীরা সুস্থ হতে পারে। এই ইনজেকশনের ন্যূনতম দাম ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। ওজন অনুযায়ী ইঞ্জেকশনের দাম বাড়তে থাকে।
কী বলছে আক্রান্ত শিশুদের পরিবার?
১১ বছর বয়সী তীর্থ সামন্ত এই রোগে আক্রান্ত। ছেলে প্রতিনিয়ত যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকে। ইঞ্জেকশনের জন্য আর্জি জানিয়েও কোনও লাভ হচ্ছে না। তীর্থ-র মা প্রণতি সামন্ত জানিয়েছেন, ছেলে যখন যন্ত্রণায় ছটফট করে, তা চোখে দেখা যায় না। ইঞ্জেকশনের আর্জি জানিয়ে এনআরএস কর্তৃপক্ষের কাছে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু হাসপাতালের তরফ থেকে তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে সরকার ইঞ্জেকশন দিচ্ছে না।
একই অভিযোগ সাত বছরের সৌরদীপ্ত মুখোপাধ্যায়ের পরিবারের। সৌরদীপ্তর আর্জি ইঞ্জেকশনের যেন সবাই পায়। সৌরদীপ্তর মা পিংকি মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এনআরএস হাসপাতালে ইঞ্জেকশন দেওয়া হত। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির পর থেকে আর ইঞ্জেকশন পাওয়া যাচ্ছে না। রক্তক্ষরণের আতঙ্কে ছেলে কোথাও খেলতে যেতে পারছে না। বন্ধুদের সঙ্গে খেলা বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছে সৌরদীপ্ত।
কি বলছেন চিকিৎসক?
হেমাটোলজিস্ট প্রান্তর চক্রবর্তী জানান, মানব শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার জন্য প্রয়োজন হয় কোয়াগুলেশন ফ্যাক্টর। এই পাগলি কোয়াগুলেশন ফ্যাক্টরের মধ্যে ৮ ও ৯ খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই দুই ফ্যাক্টর শরীরে প্রবেশ করে ফ্যাক্টর ১০ তৈরি করে, তার ফলে রক্ত জমাট বাঁধতে পারে। একটা সময়ের পর চিকিৎসার জন্য ইঞ্জেকশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছেন তিনি।
কি বলছে স্বাস্থ্য বিভাগ?
স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের দাবি, যথেষ্ট টাকা নেই বলেই ইঞ্জেকশন কেনা সম্ভব হচ্ছে না। তাই চিকিৎসকরা ইঞ্জেকশন প্রেসক্রিপশনে লেখার আগে দেখছেন কোন রোগের ক্ষেত্রে ইঞ্জেকশনের প্রয়োজন বেশি। চিকিৎসকরা দেখছেন, কাদের ক্ষেত্রে ইঞ্জেকশন না দিলে প্রাণ সংশয় হতে পারে, তাদের ক্ষেত্রে ইঞ্জেকশন দেওয়া হচ্ছে আগে।
এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে বহু মানুষের প্রাণ সংশয় হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। কবে পরিস্থিতি ঠিক হবে। কবে আবার খেলতে যেতে পারবে তীর্থ, সৌরদীপ্তরা, সেই উত্তর নেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে।
আরও পড়ুন : Group C Recruitment: এসএসসি-র কাছ থেকেই সুপারিশপত্র পেয়েছিল পর্ষদ! গ্রুপ সি মামলায় অস্বস্তি বাড়ল কমিশনের