TMC on Durga Puja 2024: মহালয়া থেকেই শুরু ভিড়, ‘বাংলা উৎসবে ফিরেছে’ বলে ‘ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ল’ দেবাংশুদের?

TMC: এরপর এল মহালয়া। অর্থাৎ বুধের সন্ধা। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতেই একটু-একটু করে বদলে যেতে থাকল ছবিটা। শ্রীভূমি থেকে কল্যাণীর আইটি আইতে ভিড়ের ছবি ধরা পড়ল। যা দেখে 'হাসি চওড়া' তৃণমূলের। ভিড়কে অস্ত্র করেই বিরোধীদের খোঁচা দিতে শুরু করলেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

TMC on Durga Puja 2024: মহালয়া থেকেই শুরু ভিড়, 'বাংলা উৎসবে ফিরেছে' বলে 'ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ল' দেবাংশুদের?
দেবাংশু ভট্টাচার্যের পোস্টImage Credit source: Facebook
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 03, 2024 | 9:50 AM

কলকাতা: এ দৃশ্য নতুন নয়। বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই বাঙালি কিছুটা হলেও বদলেছে নিজেদের পুজো অভ্যাসের ধরনে। মহালয়ার দিন থেকেই শুরু হয়ে যায় প্যান্ডেলে-প্যান্ডেলে ঘোরাঘুরি। এই বছরও অন্যথা হল না। বুধবার ছিল মহালয়া। আর ওই দিন থেকেই শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাব,কল্যাণী আইটিআই-তে হাজার-হাজার মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। আর পুজোয় জন-সাধারণের এই ভিড়কে কার্যত ‘নৈতিক জয়’ হিসাবে দেখতে শুরু করেছে তৃণমূল। তৃণমূল যুব নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য থেকে মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী সকলেই বললেন, ‘বাংলা উৎসবেই ফিরেছে…’

তিলোত্তমার বিচার চেয়ে আন্দোলন যখন তুঙ্গে, সেই সময় অর্থাৎ গত ৯ সেপ্টেম্বর উৎসবে ফেরার বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছিলেন, “এক মাস হয়ে গিয়েছে। এবার উৎসবে ফিরুন।” সেই সময় দেখা যায়, মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যকে হাতিয়ার করে বিরোধীরা। প্রশ্ন তুলতে থাকে রাজ্যে এমন একটা স্পর্শকাতর ঘটনার পরও কীভাবে এমন কথা বলতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? এমনকী ‘উৎসবে ফিরছি না’ বলেও পোস্ট চলতে থাকে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

এরপর এল মহালয়া। অর্থাৎ বুধের সন্ধা। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতেই একটু-একটু করে বদলে যেতে থাকল ছবিটা। শ্রীভূমি থেকে কল্যাণীর আইটিআইতে ভিড়ের ছবি ধরা পড়ল। যা দেখে ‘হাসি চওড়া’ তৃণমূলের। ভিড়কে অস্ত্র করেই বিরোধীদের খোঁচা দিতে শুরু করলেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

দেবাংশু লিখলেন, ‘শ্রীভূমি থেকে কল্যাণী আইটিআই মহালয়ার দিন থেকেই মণ্ডপে মণ্ডপে জনজোয়ার। যারা উৎসব বয়কটের ডাক দিয়েছিলেন,উৎসবে ফিরছি না বলে পিওর বাম সুলভ স্লোগান তুলেছিলেন, সাধারণ মানুষ তাদের মুখে ঝামা ঘষে দিয়েছেন। মানুষ বুঝিয়ে দিয়েছেন গরিবের পেটে লাথি মেরে উৎসব বয়কট কোনও সুস্থ মানসিকতার লক্ষণ নয়। মুখ্যমন্ত্রী সেই গরিব গুলোর জন্যেই বলেছিলেন উৎসবে আসুন..বলেননি, বিচার ভুলে উৎসবে ফিরুন..।’

আবার অরূপ চক্রবর্তী লিখলেন, ‘উৎসবে ফিরছি না কীভাবে মহালয়াতেই জনসমুদ্র হয়ে গেল! কল্যাণী লুমিনাসেই যদি এই অবস্থা হয় তাহলে ত্রিধারা-সুরুচি বড়িশা-বাদামতলা-নাকতলার ফিতে কাটা হয়ে গেলে কী হবে?….সুবিধাবাদী মাকুর দল আবার এই সুযোগে লাল শালু খাটিয়ে টাকা কামাতে প্যান্ডেলের পাশে বুকস্টলের বাঁশ বাঁধতে শুরু করে দিয়েছে।’

রাজনীতির কারবারিদের মধ্যে চর্চা,পুজোয় মানুষের উপস্থিতি, বঙ্গবাসী অংশগ্রহণ নিয়ে সংশয়ে ছিল শাসক তৃণমূল? তাই কি মহালয়ার সন্ধের পরে থেকে বিভিন্ন মণ্ডপে মণ্ডপে ভিড়ের ছবি আসতেই ‘ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ল’ তাদের?

এরপরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে,তবে কি আপাতত প্রতিবাদের ল্যাটা চুকিয়ে উৎসবে ফিরছেন বঙ্গবাসী? যদিও বিষয়টি এমন ভাবে ব্যাখ্যা হলে অতি সরলীকরণ হবে বলেই মত রাজনীতির কারবারিদের। তাঁদের মতে, আরও কয়েকটি দিন এগোলে উৎসবে কতটা ফিরলেন বাঙালি তার পরিমাপ হয়তো আরও স্পষ্ট হবে।

তবে বিরোধীদের কেউ কেউ বলছেন, এবার তো শাসক কিছুটা জোর করেই ভিড় বাড়ানোর চেষ্টা করবে। উৎসবের জন্য বাড়তি আয়োজনের ব্যবস্থা করবে। তার সূচনাই কি হয়েছে মহালয়াতে? উৎসব না প্রতিবাদ নাকি প্রতিবাদ আর উৎসব হাত ধরাধরি করে চলবে। চর্চা বঙ্গের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে।