AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Humanity: বৃদ্ধের পায়ে গ্যাংগ্রিন, এগিয়ে এল না কেউ! পাশে দাঁড়াল মানবিক পুলিশ

Sinthi: কিছুদিন ধরেই পায়ে একটা ঘা হয়েছিল সুকুমারবাবুর। একা মানুষ, তাই আর সেসব দিকে নজর দেননি।

Humanity: বৃদ্ধের পায়ে গ্যাংগ্রিন, এগিয়ে এল না কেউ! পাশে দাঁড়াল মানবিক পুলিশ
সুকুমারবাবুরও ভয়ঙ্কর অবস্থা হয় পা নিয়ে। বুধবার একেবারে নড়তে চড়তে পারছিলেন না। নিজস্ব চিত্র।
| Edited By: | Updated on: Oct 21, 2021 | 9:14 PM
Share

কলকাতা: বছর ষাটের সুকুমার দাস। সিঁথিতে থাকেন। একটি চায়ের দোকান চালান। যেখানে চাষ, সেখানেই বাস! বিয়ে করেননি। একা মানুষ। চায়ের দোকানটাই তাঁর বাড়ি ঘর। এলাকার লোকজনের সঙ্গে বেশ খাতির। সকলেই মিষ্টি কথার মানুষকে পছন্দ করেন। কিন্তু বিপদে পড়লে মুহূর্তে পছন্দের মানুষ অপছন্দের হয়ে যায়! সে নমুনাও সমাজে ভুরি ভুরি আছে। সম্প্রতি সে অভিজ্ঞতা হল সুকুমার দাসের।

কিছুদিন ধরেই পায়ে একটা ঘা হয়েছিল সুকুমারবাবুর। একা মানুষ, তাই আর সেসব দিকে নজর দেননি। চাওয়ালা ছিলেন নিজের মতো, পায়ের ঘাও বাড়ছিল নিজের মতো করেই। ক্রমেই তা গ্যাংগ্রিন হয়ে যায়। এ ঘা যে কোনও মানুষের জন্যই মারাত্মক হয়ে ওঠে, প্রাণঘাতীও হয়! সুকুমারবাবুরও ভয়ঙ্কর অবস্থা হয় পা নিয়ে। বুধবার একেবারে নড়তে চড়তে পারছিলেন না।

সিঁথি থানা এলাকার একটি ক্লাবের সামনে সুকুমার দাসের চায়ের দোকান। একজন অসহায় মানুষ এ ভাবে কাতরাচ্ছেন, অথচ সাহায্য পাননি কারও। ভয়ঙ্কর ছটফটানি শুরু হয় মানুষটার। তাঁর এক ভাইপো রয়েছেন। তাঁকেও ফোনে খবর দেওয়া হয়। ওই অবধিই। এরই মধ্যে খবর যায় সিঁথি থানায়।

খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছন সিঁথি থানার দুই অফিসার তন্ময় সামন্ত ও কামাখ্যানারায়ণ সিংহ। নিজের লোকের প্রাণ না কাঁদলেও এই দুই উর্দিধারী সে দৃশ্য চোখে দেখতে পারেননি। যে পুলিশ প্রয়োজনে হাতে বন্দুক তুলে নেয়, সে পুলিশও মানবিক হয়। তাঁদেরও মন কাঁদে অন্যের কষ্টে।

এর পর সুকুমার দাসকে নিয়ে কাউকে আর ভাবতে হয়নি। দিনভর দৌড়ঝাঁপ করেছেন ওই দুই পুলিশ অফিসার। এক সমাজসেবীর সঙ্গে যোগাযোগ করে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান ওই অসহায় সুকুমারবাবুকে। যা যা চিকিৎসার প্রয়োজন সমস্তটা করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কোথাও যেন কোনও খামতি না থাকে তার নজরদারি করেন তন্ময় সামন্ত ও কামাখ্যানারায়ণ সিংহ। এখন অনেকটাই ভাল সুকুমার দাস। অতটা আর যন্ত্রণা নেই। তবে ঘা যখন এতটা গভীর, সারতে তো খানিকটা সময় লাগবেই।

পুলিশের এমন বহু মানবিকতার ছবি এ শহরের বুকে প্রতি নিয়ত উঠে আসে। দিন পাঁচেক আগেই বেহালা ট্রাম ডিপোর সামনে ব্যস্ত ছিলেন ডায়মন্ড হারবার ট্রাফিক গার্ডের এক সার্জেন্ট ও এক কনস্টেবল। দুপুর তখন গড়িয়ে গিয়েছে, হঠাৎই ট্রাম ডিপোর সামনে হইচইয়ের শব্দ পান দু’জন। গিয়ে দেখেন, পথের উপরেই শুয়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন এক গর্ভবতী ভদ্রমহিলা। উপস্থিত পথচারীদের একজন জানান, হেঁটে যেতে যেতে হঠাৎ পেটে হাত দিয়ে বসে পড়েন ওই মহিলা। যন্ত্রণায় কাতরাতে শুরু করেন।

এরপর এক মুহূর্ত সময় নষ্ট করেননি দুই পুলিশ। বিদ্যাসাগর হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করে একটি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করেন। সেই অ্যাম্বুলেন্সে করে মহিলাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সঙ্গে কর্তব্যরত কনস্টেবলও যান। হাসপাতালে ভর্তি করানো থেকে মহিলার সন্তান  প্রসবের মুহূর্ত অবধি ঠায় হাসপাতালেই ছিলেন ওই কনস্টেবল।

আরও পড়ুন: আজও ৮০০ পার, পজিটিভিটি রেটও উপরেই! রাজ্যে করোনায় মৃত ১৪