IMA Election: প্রকাশ্যে ‘দোর্দণ্ডপ্রতাপ’ শান্তনু ও নির্মল মাজির বিবাদ, ‘শ্লীলতাহানি’তে অভিযুক্ত চিকিৎসক! রাজ্য স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বেনজির ঘটনা
IMA Election: নির্বাচনের সভাপতি পদপ্রার্থী প্রশান্ত ভট্টাচার্যকে শোকজ চিঠি পাঠাল আইএমএ কলকাতার এগজিকিউটিভ কমিটি। প্রশান্তের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি, সাইবার ক্রাইমের অভিযোগ রয়েছে।
কলকাতা: রাজ্য স্বাস্থ্যক্ষেত্রে নজিরবিহীন ঘটনা। প্রকাশ্যে শান্তনু সেন ও নির্মল মাজির বিবাদ। কলকাতার আইএমএ (ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন) সভাপতি নির্বাচন ঘিরে তুঙ্গে চিকিৎসক গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব। নির্বাচনের সভাপতি পদপ্রার্থী প্রশান্ত ভট্টাচার্যকে শোকজ চিঠি পাঠাল আইএমএ কলকাতার এগজিকিউটিভ কমিটি। প্রশান্তের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি, সাইবার ক্রাইমের অভিযোগ রয়েছে।
আইএমএ কলকাতা শাখার নির্বাচন ঘিরে কাজিয়া প্রকাশ্যে চলে এসেছে। গত মঙ্গলবার প্রশান্ত ভট্টাচার্য, যিনি আইএমএ-এর কলকাতা শাখার সভাপতি পদপ্রার্থী, চিকিৎসক অমিতাভ দত্ত, অনির্বাণ দোলুই সাংবাদিক বৈঠক করে সরাসরি নির্মল মাজির কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ জানান। তাঁদের বক্তব্য, “চিকিৎসক সমাজের কলঙ্ক হচ্ছেন নির্মল মাঝি। নির্মল মাজি আইএমএ কলকাতা শাখার অস্তিত্বকে বিপন্ন করে তুলেছেন।” তাঁরা নিজেদের তৃণমূল পন্থী হিসাবেই দাবি করেন। তবুও চিকিৎসক সমাজের স্বার্থে তাঁরা সুর চড়াচ্ছেন। এই ধরনের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পরই নির্মল মাজি পাল্টা বলেন, তিনি প্রোমোটিং আটকে দিয়েছিলেন, যিনি সভাপতির পদপ্রার্থী প্রশান্ত ভট্টাচার্য, তিনি শ্লীলতাহানিতে অভিযুক্ত। আজ তাঁরাই নিজেদের বাঁচাতে অভিযোগ করছেন।
উল্লেখ্য, সাংবাদিকদের সামনে প্রশান্ত ভট্টাচার্য বলেছিলেন, “সমস্ত সিনিয়র ডাক্তারবাবুরা যাঁরা রয়েছেন, তাঁরাই আমাদের সমর্থন করছেন। একমাত্র নির্মল মাজি ছাড়া। সেই জন্য আমরা দাঁড়াতে সাহস পেয়েছি। নাহলে দোর্দণ্ডপ্রতাপ নির্মল মাজির বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর সাহস পেতাম না। তিনি সর্বক্ষণ বলে চলেছেন, তিনি নাকি মুখ্য়মন্ত্রীর সাপোর্ট নিয়ে কথা বলছেন। যদিও জানি এটা মিথ্যা কথা। তবুও সাপোর্ট আছে বলেই আমরা ওঁর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি। যে ব্যক্তি সকলকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে, বিভিন্ন ভাবে ধমকে চমকে, মুখ্যমন্ত্রীর নাম ব্যবহার করে নিজের কর্তৃত্ব ফলাচ্ছেন।”
নির্মল মাজি পাল্টা বলেন, “প্রোমোটারদের হাতে পয়সা দিই না। এই বিল্ডিংটাকে প্রোমোটারদের হাতে তুলে দিয়ে একটা করে ২০০০ স্কোয়ার ফিটের ফ্ল্যাট নেওয়ার জন্য প্রশান্ত ভট্টাচার্য আমার কাছে এসেছিল। আমি নাকচ করে দিয়েছি। বলেছে স্বেচ্ছাচার, নির্বাচন হতে দিইনি। তবে দুবার সহ সভাপতি নির্বাচিত হলেন কীভাবে? এই ধরনের কটূক্তি কারা করে? যারা চেম্বারে রোগীকে ধর্ষণ, শ্লীলতাহানি করে। একবার নয়, দুবার।”
নির্মল মাজি সরাসরি শান্তনু সেনের নামে কোনও বিষোদাগার করেননি। কিন্তু প্রশান্ত ভট্টাচার্য হচ্ছেন শান্তনুর ঘনিষ্ঠ। বুধবার এগজিকিউটিভ কমিটির বৈঠক ছিল। সেখানে প্রশান্ত ভট্টাচার্যকে ডেকে এই অভিযোগগুলো তুলে চার্জ করা হয়। তাঁকে শোকজ করা হয়। কেন তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, সেই প্রশ্ন তোলা হয়। চিকিৎসক সমাজ বলছে, প্রশান্ত ভট্টাচার্য যে সাংবাদিক বৈঠক করলেন, সেটার পিছনে রয়েছেন শান্তনু সেন।
নির্মল মাজি প্রকাশ্যে শান্তনু সেনের নাম করেননি, তবে তিনি এটা বলেছেন, আইএমএ বঙ্গীর শাখার একজন পদ আখড়ে রয়েছেন। তিনি যেভাবে বলেছেন, সেখানেও পরোক্ষভাবে শান্তনু সেনের নাম জড়িয়েছে। রাজ্যের চিকিৎসক সমাজ বলছে, একটা চিকিৎসক সংগঠনের কলকাতা শাখার নির্বাচনকে শাসকদলের দুই পক্ষের কাজিয়া যেভাবে সামনে এসেছে, তাতে নির্বাচন পুলিশের উপস্থিতিতে চাইছেন বিরোধীরা। নির্বাচনে অশান্তির আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকদের একাংশ।