কলকাতা: প্রজাতন্ত্র দিবসে নেতাজি ট্যাবলো বাতিল। সরব মুখ্যমন্ত্রী, পত্র পাঠিয়ে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর জবাব। বিতর্কের জল গড়িয়েছে বহুদূর। তবে, এ বার রাজ্যের মাটিতে নেতাজি ইস্যুতে নয়া টানাপড়েন। গত বছর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মমতা (Mamata Banerjee)। তৈরি হবে জয় হিন্দ বিশ্ব বিদ্যালয়। সময় তো পেরিয়েছে, তবে কেন এগোয়নি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির কাজ। উঠছে প্রশ্ন।
তৈরি হবে জয় হিন্দ বিশ্ববিদ্যালয়। গত বছর নবান্ন সভাগৃহ থেকে ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। নেতাজির ১২৫তম জন্মবার্ষিকী পালন করতে একটি কমিটিও গড়েছিলেন। তবে, কোথায় কী! বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি তো দূর! বিধানসভায় এখনও পাশ হয়নি এই সংক্রান্ত বিল, তৈরি হয়নি কোনও আইন। ইউনিভার্সিটি তৈরির উদ্যোগ, রীতিমতো প্রশ্নের মুখে।
অধ্যাপক নন্দিনী মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “নেতাজিকে নিয়ে যে পড়াশোনার দরকার, বা চর্চার দরকার তার জন্য প্রয়োজনীয় একটিও পদক্ষেপ করেনি এই সরকার। বিশ্ববিদ্যালয় বললেই তো তৈরি হয় না। তারজন্য একাধিক পদক্ষেপ করা দরকার। সেসব কিছুই হয়নি।”
নেতাজির নামাঙ্কিত বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার কাজে শিথিলতা নিয়ে রাজ্যকে বিঁধেছেন বিজেপি নেতারাও। মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া প্রতিশ্রুতির কী হল, প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। টুইট করেছেন অগ্নিমিত্রা।
@MamataOfficial you have forgotten your promises of 2021
1. Monument of NETAJI in Rajarhathttps://t.co/GrkrfjGBEA in the name of NETAJI
3. Committee on Netaji had only 1 meeting in the last 1 year.
After all this do you think we need to take lessons on NETAJI FROM YOU?? https://t.co/g8D4TbgSQ8 pic.twitter.com/N1MCevvI42
— Agnimitra Paul BJP (@paulagnimitra1) January 21, 2022
টুইটে, বিজেপি বিধায়ক উল্লেখ করেছেন, ‘মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী আপনি নেতাজি নিয়ে কমিটি গঠন করেছিলেন, রাজারহাটে স্মৃতিসৌধ বানাবেন বলেছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয় গড়বেন কথা দিয়েছিলেন। সেসব প্রতিশ্রুতি ভুলে গিয়েছেন, তারপরেও আপনার থেকে নেতাজির বিষয়ে আমাদের শিখতে হবে!’
নেতাজি নিয়ে গঠিত রাজ্যের কমিটির সদস্য শুভাপ্রসন্ন অবশ্য বলছেন, “আমাদের সঙ্গে এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর আলোচনা হয়েছে। খুব দ্রুত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ শুরু হবে। কোভিড পরিস্থিতি ও বেশ কয়েকটি কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ থমকে ছিল। তবে সেই কাজ খুব দ্রুত শুরু হবে।”
গত ১০ বছরে ৬টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য। নেতাজির নামাঙ্কিত বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সেগুলির হাল নিয়েও সন্দিহান শিক্ষাবিদেরা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন সহ-উপাচার্য সিদ্ধার্থ দত্তের কথায়, “নতুন বিশ্ববিদ্যালয় যে তৈরি হবে, তার ফান্ডিং কীভাবে হবে? ইউজিসি কি তার দায়িত্ব নেবে? পরিকাঠামোগত মান ও গুণগত মান কেমন হবে? বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক ও কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়টিই বা কীভাবে হবে? হাজারও প্রশ্ন রয়েছে। কেবল তো বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করলেই হবে না।”
নেতাজিকে ঘিরে বিতর্ক তো রয়েছেই। তবে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি ঘিরে ঢিলেমি রাজ্যের শিক্ষা পরিকাঠামো নিয়েও একরাশ প্রশ্ন তুলে দিল। প্রশ্ন উঠছে, গত ২০২০ সালে নবান্নের সভাঘরে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর যে সদিচ্ছার কথা প্রকাশ করেছিলেন, তা কি কেবল চার দেওয়ালের মধ্যেই থেকে গেল? এর বাস্তবায়ন কবে হবে, সেদিকেই তাকিয়ে সংশ্লিষ্ট মহল।
আরও পড়ুন: Kolkata Municipal Corporation: ঠিকা প্রজার পাশে পুরসভা, বাড়ি তৈরিতে নয়া ছাড়, মিলবে লোনের সুবিধাও!