কলকাতা: জল্পনা ছিল একাধিক নামকে ঘিরে। কখনও অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকার, কখনও বা মুকুল রায়, কখনও যশবন্ত সিনহা। দীনেশ ত্রিবেদীর ছেড়ে আসা আসনে তৃণমূল রাজ্যসভায় কাকে পাঠাবে, সেই নিয়ে বিগত কদিন ধরেই বিস্তর জল্পনা চলে রাজনৈতিক মহলে। তবে সমস্ত জল্পনায় কার্যত জল ঢেলে শেষ পর্যন্ত প্রসার ভারতীর প্রাক্তন সিইও তথা আইএএস অফিসার জহর সরকারকে রাজ্যসভায় মনোনয়ন দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। নরেন্দ্র মোদী সরকারের ঘোষিত কট্টর এই সমালোচক রাজ্যসভায় সুযোগ পাওয়ার পরই মুখ খোলেন TV9 বাংলার কাছে।
রাজ্যসভায় মনোনয়ন পাওয়ার এই ঘটনাকে এক সুবর্ণ ‘সুযোগ’ হিসেবেই দেখছেন জহরবাবু। তৃণমূলের তরফে এই ঘোষণার পর তাঁকে ফোনে ধরা হলে TV9 বাংলাকে এই প্রাক্তন আমলা বলেন, “আমাকে হঠাৎ বলা হল, একটা সুযোগ দিল। সময় নিয়ে আমি ভেবে দেখলাম, এরকম সুযোগ তো আর কেউ দেবে না। অনেকেই জানেন আমি মোদী সরকার থেকে ইস্তফা দিয়ে চলে এসেছে ৫ বছর আগে। তারপর থেকে আমি ক্রমাগত তাঁর নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করে গিয়েছি, লিখেছি, বক্তব্য রেখেছি। আমার উপর তাঁরা বিভিন্ন রকমের স্নায়ুর চাপও রেখেছে।”
জহরবাবু যে রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধিতার কোনও সুযোগই হাতছাড়া করবে না, সেটাও বস্তুত সাফ করে দেন। তাঁর কথায়, “আমি আরেকটা সুযোগ পেলাম। এই মোদী সরকারের দুর্নীতি ও ত্রুটি মানুষের সামনে তুলে ধরার আরেকটা সুযোগ দেওয়া হল আমাকে। সেই সঙ্গে বাংলার প্রতিনিধিত্ব করারও সুযোগ পেলাম।”
সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলের প্রাক্তনী জওহর সরকার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক পাশ করেন জহর সরকার। এরপর প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস এবং সমাজবিদ্যা নিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডবল এমএ; এবং পরবর্তীতে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় ও সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও উচ্চশিক্ষা লাভ করেন।
জহরবাবুর পেশাগত জীবন শুরু হয় আশির দশকে। ১৯৭৫ সালে তিনি আইএএস অফিসার হন। নয়ের দশকে পশ্চিমবাংলার সেলস ট্যাক্স কমিশনার পদে আসেন। এরপর ২০০৬ সালে দিল্লিতে ডেভলপমেন্ট কমিশনার ফর মাইক্রোর অ্যাডিশনাল সেক্রেটারিও হন। ২০০৮ সালে ভারত সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রকের সচিবের পদে আসীন হন জওহরবাবু। কিছু দিন কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকেরও সচিব ছিলেন। প্রশাসক হিসেবে দীর্ঘ ৪১ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। আরও পড়ুন: রাজ্যসভায় তৃণমূলের মুখ জওহর সরকার, টুইটে জানাল মমতার দল