Kaikhali Fire Update: বসত এলাকায় কারখানা কেন? কৈখালি বিস্ফোরণ-কাণ্ডে গ্রেফতার মালিকের জামাই
Kolkata: বিমানবন্দর থানার পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত পবনকে রবিবারই ব্যারাকপুর আদালতে পেশ করা হবে। ধৃতের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা, অস্বাভাবিক মৃত্যমামলা-সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কলকাতা: বছরের প্রথমদিনেই শহরে অগ্নিকাণ্ড। কৈখালির রঙের কারখানায় ভয়াবহ আগুন। সেই আগুনে দগ্ধ হয়ে একজনের মৃত্যুর খবরও নিশ্চিত করেছে দমকল আধিকারিকরা। অবশেষে বিস্ফোরণ-কাণ্ডে (Kaikhali Fire Update Case) ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কারখানার মালিকের জামাই পবন আগরওয়ালকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পাশাপাশি পবনের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা জারি করা হয়েছে।
বিমানবন্দর থানার পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত পবনকে রবিবারই ব্যারাকপুর আদালতে পেশ করা হবে। ধৃতের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা, অস্বাভাবিক মৃত্যমামলা-সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এদিন, আদালতে ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিজ হেফাজতে রাখার আবেদন করতে পারে পুলিশ। পাশাপাশি, দমকলের পক্ষ থেকেও একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
দমকল সূত্রে খবর, ওই কারখানায় বিস্ফোরক মজুত ছিল কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়, তবে কোনওরকম কোনও অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র ছিল না। ফলে আগুন নেভানো সম্ভব হয়নি। পাশাপাশি, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় কেন কারখানা তৈরি করা হয়েছিল তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। কার অনুমতিতেই বা এই কারখানা চলছিল, সেই সবদিক খতিয়ে দেখা হবে।
শনিবার সকালে আচমকা কৈখালির ওই রঙ কারখানায় আগুন লাগে। দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন দ্রুত হারে ছড়িয়ে পড়ে কারখানায়। কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় এলাকা। আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশের একটি গেঞ্জি কারখানাতেও। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিমানবন্দর থানার পুলিশ, দমকল বাহিনী ও এনডিআরএফ। পৌঁছে যান দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু। রাজারহাট-গোপালপুরের বিধায়ক অদিতি মুন্সিও যান সেখানে। চার ঘণ্টা পর দমকলের ১৮টি ইঞ্জিনের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
স্থানীয়রা জানান, রঙের এই কারখানায় সাত আটজন কাজ করেন। তাঁদের মধ্যেই একজনের খোঁজ মেলেনি। এলাকার এক যুবক জানান, “বয়স্ক লোক উনি। নিরাপত্তা রক্ষীর কাজ করেন এখানে। মনে হচ্ছে উনি বেরোতে পারেননি।” প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, সকালে যখন আগুন লাগে ভয়ঙ্কর শব্দে কেঁপে ওঠে এলাকা। কারখানার ভিতর রাসায়নিক ভর্তি যে টিনগুলি ছিল, পর পর ফাটতে থাকে সেগুলি। সেই কারণেই বীভৎস শব্দ হয় এলাকাজুড়ে। পরে, ওই নিরাপত্তারক্ষীর দগ্ধ দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু বলেন, “পুরনো কারখানা। এখানে নিয়ম নীতি কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। কেমিকেল কারখানায় আগুন ছিল, আমরা ফোম দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করেছি। পাশে একটা গেঞ্জি কারখানা রয়েছে। জায়গা কম। জলের সোর্স কম। প্রায় ১৮টা মতো দমকলের গাড়ি দিয়েছি। আমরা সব রকম চেষ্টা করেছি। জায়গাটা এতই সরু, গাড়ি যাতায়াতে সমস্যা হয়েছে।”
স্থানীয়দের কথায়, আগুন লাগার পর কারখানার ভিতর থেকে কেউ একজন বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করেছিলেন। সেই আর্তনাদের গলার সঙ্গে কানাইবাবুর গলার মিল রয়েছে বলেও অনেকের দাবি। অবশেষে, রবিবার সকালে ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট আসার পর জানা যায়, ওই দগ্ধ দেহটি কারখানার নিরাপত্তা রক্ষী কানাই সাঁতরারই দেহ। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকার মানুষ। তাঁদের স্পষ্ট দাবি, এভাবে জনবহুল এলাকায় কারখানা হওয়ায় তা নিয়ে বারবার আপত্তি জানিয়েছিলেন সকলে। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। প্রশ্ন উঠছে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও।