AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

পলিথিনে এনেছিলেন, গায়ে ঢেলে হাতে নেন দেশলাই! ছেলের কারণে থানায় মায়ের মারণ লড়াই

Kolkata: মাঝেমধ্যে তিনি নিজেও ছেলেবৌমাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু লাভ হয়নি কিছুই। দিন দিন অত্যাচারের সীমা আরও বেড়েছে বলে অভিযোগ।

পলিথিনে এনেছিলেন, গায়ে ঢেলে হাতে নেন দেশলাই! ছেলের কারণে থানায় মায়ের মারণ লড়াই
অভিযুক্ত ছেলে ও বৌমা
| Edited By: | Updated on: Sep 01, 2021 | 8:00 AM
Share

কলকাতা: পায়ে হাওয়াই চটি, পরনে আধ ছেড়া একটা কাপড় আর হাতে পলিথিন প্যাকেট। তার মধ্যে কিছু একটা তরল জাতীয় ছিল! এই অবস্থাতেই থানার সামনে ঘোরাফেরা করছিলেন বছর ষাটেকের এক বৃদ্ধা। থানার ভিতর থেকেই নজর রেখেছিলেন পুলিশ কর্মীরা। আচমকাই পলিথিনে থাকা তরল নিজের গায়ে ঢেলে দেশলাই ধরানোর চেষ্টা করেন। ভিতর থেকেই ছুটে এসে বৃদ্ধার হাতটা চেপে ধরেন এক মহিলা পুলিশ কর্মী। খোদ কলকাতার বুকেই ভয়ঙ্কর ঘটনা। একবালপুর থানার সামনে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন এক বৃদ্ধা। কারণ আরও ভয়ানক। ছেলে বৌমার অত্যাচার অতিষ্ঠ হয়েই নাকি তিনি এই কাজ করতে চেয়েছেন।

বছর ষাটের শাকিলা খাতুন 40/4 একবালপুর লেনের বাসিন্দা। ছেলে বৌমার সঙ্গে তাঁর সংসার। কিন্তু সেই সংসারে অশান্তি নিত্য দিন। নানা ভাবে তিনি বৌমার অত্যাচারের শিকার। আর তাতে সম্পূর্ণ মদত রয়েছে তাঁর ছেলেরও। প্রায় প্রত্যেকদিনই তাঁকে ছেলে-বৌমা মারধর করেন বলে অভিযোগ।

তাঁকে ঠিকমতো খেতে দেওয়া হত না। খাবার চাইলেও নিজের বাড়িতে জুটত লঞ্ছনা, মারধর। নির্যাতিতা জানিয়েছেন, প্রতিবেশীরাও এ কথা জানেন। তাই মাঝে মধ্যে অত্যাচারের সীমা ছাড়ালে তাঁরাও এসে এক আধবার বিষয়টা মিটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু অশান্তি হত রোজই। তাই রোজকার পারিবারিক অশান্তিতে আর মাথা ঘামাতেন না কেউই সেভাবে।

মাঝেমধ্যে তিনি নিজেও ছেলেবৌমাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু লাভ হয়নি কিছুই। দিন দিন অত্যাচারের সীমা আরও বেড়েছে বলে অভিযোগ। মঙ্গলবারও সকাল থেকে শুরু হয়েছিল অশান্তি। পরে তা গড়ায় অত্যাচারেই। ফের ছেলের অত্যাচারের শিকার হন বৃদ্ধা। এবার বিষয়টির হেস্তনেস্ত করতে এক কাপড়েই ঘর থেকে বেরিয়ে যান বৃদ্ধা। সোজা চলে যান একবালপুর থানায়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, থানার ভিতরে তিনি ঢোকেননি। আশপাশ দিয়েই বারবার ঘোরাফেরা করছিলেন। তবে পুলিশ কর্মীরা তাঁর ওপর নজর রেখেছিলেন। সে সময়ই আচমকা হাতে থাকা পলিথিন প্যাকেট থেকে কেরোসিন গায়ে ঢেলে দেন বৃদ্ধা। বিপদ আঁচ করতে পেরে তখনই ছুটে আসেন পুলিশ মহিলাকর্মীরা। তাঁর হাত চেপে ধরেন।

তাঁকে প্রথমে প্রাথমিক চিকিত্সা করা হয়। তারপর তাঁকে পাঠানো হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। বৃদ্ধার বক্তব্য, “ছেলে বৌমা আগে থেকেই খারাপ ব্যবহার করত। পরে শুরু হয় মারধর। ইদানীং আরও বেশি মারধর করত। অত্যাচার আর সহ্য করতে পারছিলাম না। ছেলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানাতে এসেছিলাম। সেটাও পারিনি। তাই শেষ করে দিতে চেয়েছিলাম নিজেকে।”

মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত ছেলে ফারুককে গ্রেফতার করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। যদিও অভিযুক্ত পুত্রবধূ সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর বক্তব্য, এরকম ঘটনা ঘটেনি। অত্যাচার করা হত না। ইদানীং তাঁর শাশুড়িই নাকি নানাভাবে সমস্যায় ভুগছিলেন।

পুলিশ জানিয়েছে, নির্যাতিতার অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর ছেলেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর সঙ্গেও কথা বলা হচ্ছে। বৃদ্ধা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। তাঁর চিকিত্সারও প্রয়োজন। তাঁকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আরও পড়ুন: ৩ মাস ধরে লাশকাটা ঘরে রাখা দেহ! বিজেপি কর্মীর মেডিক্যাল-নথি চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন সিবিআইয়ের