কলকাতা: কয়লাকাণ্ডে (Coal Scam Case) অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) বাড়িতে আকস্মিক হানা দিলেন সিবিআই (CBI) আধিকারিকরা। অভিষেকের স্ত্রী রুজিরা নারুলা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নোটিস দিতেই সিবিআই আধিকারিকরা তাঁর বাড়িতে যান। অভিষেকের পরিবারের তরফে সেই নোটিস গ্রহণ করা হলেও জিজ্ঞাসাবাদ করা নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি রুজিরা নারুলার। সূত্রের খবর, কয়লা পাচার কাণ্ডে তদন্তে নেমে টাকা লেনদেনে রুজিরার যোগ খুঁজে পেয়েছেন তদন্তকারীরা। তা খতিয়ে দেখতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রুজিরাকে সিবিআইয়ের নোটিস বলেই সূত্রের খলর।
রবিবার, ছুটির দিনে বেলা পৌনে দুটো নাগাদ সিবিআই-এর পাঁচ জনের একটি দল পৌঁছয় কালীঘাটের ‘শান্তিনিকেতন’ বাড়িতে। এই বাড়িতেই থাকেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন বাড়ির বাইরে প্রচুর পুলিশ কর্মী মোতায়েন থাকতে দেখা গিয়েছে। জানা গিয়েছে, সিবিআই যে সময় আসে তখন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়িতে ছিলেন না। তবে সেই নোটিস পরিবারের কোনও একজন গ্রহণ করেন। তবে রুজিরার তরফে সেই নোটিসের কোনও উত্তর এখনও সিবিআইয়ের কাছে পৌঁছয়নি।
উল্লেখ্য, তদন্তে নেমে সিবিআই আধিকারিকরা জানতে পারেন, তৃণমূল নেতা বিনয় মিশ্র এই পাচারকাণ্ডে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত। সিবিআইয়ের দাবি, তাঁর মাধ্যম দিয়েই পাচারকাণ্ডের টাকা কলকাতার বিভিন্ন প্রভাবশালীদের কাছে পৌঁছে যেত। এই চক্রে বিনয় মিশ্র কার্যত ‘ফান্ডম্যানের’ কাজ করতেন বলে জানা গিয়েছে। এ বার এই পাচারকাণ্ডের টাকা কোনওভাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবার মারফৎ বিদেশে গিয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতেই সিবিআই তলব করেছে অভিষেকের স্ত্রী রুজিরা নারুলা ও তাঁর শ্যালিকা মেনকা গম্ভীরকে।
উল্লেখ্য তৃণমূল যুব নেতা বিনয় মিশ্র ‘অভিষেক ঘনিষ্ঠ’ বলেই পরিচিত। বিজেপি বরবারই অভিযোগ করে এসেছে লালার কয়লা পাচারকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ রয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এমনকি তাঁর স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থাইল্যান্ডের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। এ দিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে সিবিআই হানার পর শুভেন্দু অধিকারী বলেন,”কে নারুলা, আমি তো আগেই বলেছিলাম। সত্যিটা সামনে আসবেই। শুধু কয়লা নয়, বালি চুরি, গরু চুরি, সোনা চুরি-সবই একই লোকের সঙ্গে যুক্ত।”
আরও পড়ুন: অঙ্কের মাস্টার থেকে যুব তৃণমূলের নেতা! চিনে নিন কয়লা পাচারের ‘ফান্ড ম্যান’ বিনয় মিশ্রকে
এ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদারের বক্তব্য, “বিনয় মিশ্রকে নিজের কমিটিতে জায়গা দিয়েছিলেন অভিষেক। সাধারণ সম্পাদক করেছিলেন। বিনয় মিশ্র তো পলাতক। তার জবাব তো দিতে হবে অভিষেককে। সিবিআই তো যাবেই। শুধু এটা কেন, আর কত ঘটনার সময়ে ভাইপোর যোগ বেরয়। শেষ পর্যন্ত না দেখতে হয় ভোটের সময় ভাইপোকে ওড়িশায় থাকতে হচ্ছে।”
বাম পরিষদীয় দলের নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “মাঝ রাতে গরু, কয়লা, সোনা পাচারের টাকা যে কলকাতায় আসত, সে তো সবাই জানে, দেশের লোক জানে। অভিযোগ তো বহুন লোক করেছে, আমিও করেছি। এখন তো দেখা যাচ্ছে অভিষেকবাবু যাদের দলের কমিটিতে জায়গা দিয়েছে, তারা সবাই তো অভিযুক্ত। এটা হওয়ারই ছিল। বাড়িগুলি হচ্ছে কীভাবে? কার পয়সায় হচ্ছে?”