কলকাতা: শহরে ফের ভুয়ো কল সেন্টারের হদিশ। সোমবার বিধান নগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ সেক্টর ফাইভে দুটি ভুয়ো কল সেন্টারে রাতভর তল্লাশি চালায়। কল সেন্টারের ডাইরেক্টর সহ দশ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উদ্ধার মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ-সহ বেশ কিছু ডিভাইস ও নগদ টাকা।
কীভাবে চলত প্রতারণা?
তদন্তকারীরা বলছেন, সল্টলেক সেক্টর ফাইভে কল সেন্টার খুলেছিলেন প্রতারকরা। সেখানে কয়েকজনকে নিয়োগ করা হয়। বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানির ব্যাক অফিস থেকে নম্বর সংগ্রহ করা হয়। এরপর টেকনিক্যাল সাপোর্ট দেওয়ার নাম করে ফোন করা হত। কেবল ব্যক্তিবিশেষেই নয়, বিভিন্ন কোম্পানির কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা এ ভাবে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ধৃতদের বিরুদ্ধে।
তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, শুধু রাজ্যে বা দেশে নয়, বিদেশেও টেকনিক্যাল সাপোর্ট দেওয়ার নাম করে বিভিন্ন কোম্পানির কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাত্ করেছে এই দল। সম্প্রতি এই সংক্রান্ত একটি অভিযোগ জমা পড়ে সাইবার ক্রাইম থানায়। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ সেক্টর ফাইভে একটি অফিসে অভিযান চালায়। এরপর আরও একটি অফিসে চলে তল্লাশি। মোবাইল ল্যাপটপ, ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আটক ১।
উল্লেখ্য, গত বৃৃহস্পতিবার নিউটাউনের একটি কল সেন্টারে হানা দিয়ে ৬ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে নিউটাউন ‘গ্রিন উড এক্সটেনশন’ বিল্ডিংয়ে হানা দেন তদন্তকারীরা। ভুয়ো কল সেন্টার থেকে প্রতারণা চক্রের মূল পান্ডা কমলেশ কুমার আর্য-সহ মোট ৬ জনকে গ্রেফতার করে নিউটাউন থানার পুলিশ।
ধৃতরা দেশে ও দেশের বাইরে মেডিক্যাল ইন্স্যুরেন্স করিয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণা চক্র চালাত। এরা মূলত ফোন করে প্রথমে মেডিক্যাল ইনসিওরেন্স করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিতেন। এরপর ধাপে ধাপে তাঁদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হত। টাকা নেওয়ার পর তাঁদের সঙ্গে আর যোগাযোগ রাখতেন না।
তারও আগে পার্কস্ট্রিটে এভাবে ভুয়ো কল সেন্টারের হদিশ পান তদন্তকারীরা। সেখান থেকে ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়। একটি বিশ্বখ্যাত সংস্থার নাম করে কল সেন্টার খুলেছিলেন ধৃতরা। সেখানেই পেতেছিলেন জালিয়াতির ফাঁদ। কম্পিউটার সারানো কিংবা বিভিন্ন গ্যাজেটস সারানোর নাম করে ইউকে-র বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে প্রথমে যোগাযোগ করতেন তাঁরা। তারপর সরাসরি সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে প্রতারণার জালে ফেলতেন।
শহরে ভুয়ো আধিকারিকদের পাশাপাশি ভুয়ো কল সেন্টারের হদিশ ভাবাচ্ছে প্রশাসনকে। প্রতারকদের জাল কত দূর বিছিয়ে রয়েছে, তা গোটাতে এবার মরিয়া তদন্তকারীরা। আরও পড়ুন: অতর্কিতে পিছু নিয়ে বাড়িতে ঢুকে পড়ে ওরা, এরপর অবাধে ‘ভাঙচুর, লুঠপাট’! ভাটপাড়ায় আক্রান্ত অর্জুন ঘনিষ্ঠ বিজেপি নেতা