কলকাতা: লোন দেওয়ার নাম করে বহুল প্রচারিত দৈনিকে বিজ্ঞাপন। তারপর সল্টলেকের সি ই ১৯৫- এ অফিস খুলে বসেছিলেন ওঁরা। ঝা চকচকে অফিস ঘরে কাজ করতেন কয়েকজন কর্মীও। লোন নিতে আসা গ্রাহকদের বুঝিয়ে তাঁদের থেকে নেওয়া বত লিগ্যাল চার্জ, ভ্যালুয়েশন চার্জ… আরও কত কী! আর তারপরই বেপাত্তা। শহরের বুকে ফাঁস হল আরও এক প্রতারণা চক্রের। লোন পাইয়ে দেওয়ার নাম করে প্রায় এক কোটি টাকার প্রতারণার অভিযোগ উঠল। উত্তর বিধাননগর থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এখনও পর্যন্ত ধরা পড়েননি কেউই।
গ্রাহকদের অভিযোগ, সম্প্রতি একটি বহুল প্রচারিত দৈনিকে তাঁরা একটি বিজ্ঞাপন দেখেছিলেন। তাতে বলা হয়েছিল খুব সহজেই লোন পাওয়া যাবে। তাতে প্রসেসিং ফ্রি, ইন্সুরেন্স ফ্রি, লাগবে না পে স্লিপও। সঙ্গে ছিল আরও আকর্ষণীয় কিছু অফার! তাই দেখেই তাঁরা বিজ্ঞাপনে দেওয়া ঠিকানায় যোগাযোগ করেছিলেন।
সল্টলেকের সি ই ১৯৫-এ অফিসে গিয়েছিলেন তাঁরা। লিগ্যাল ফিজ, ভ্যালুয়ার ফিজ-সহ বেশ কিছু টাকা চার্জ করেন প্রতারকরা। বিশ্বাস করে গ্রাহকরা সেই টাকা দিলেও আর লোন পাচ্ছেন না তাঁরা। এমনকি আর ফোনও ধরছেন না প্রতারকরা। অফিসে গিয়ে তাঁরা দেখেন, তা তালাবন্ধ। লেকটাউনেও এই সংস্থার একটি অফিস রয়েছে বলে গ্রাহকরা জানতে পেরেছেন। তালাবন্ধ সেটিও।
এক প্রতারিত ব্যক্তি বলেন, “আমি আমার বাড়ি মর্টগেজ রাখব বলে এসেছিলাম। এরা বিজ্ঞাপন দিয়েছিল, মর্টগেজ রেখে লোন দেওয়া হয়। সেটা দেখেই এসেছিলাম। ওঁরা আমাদের বলেছিলেন, বেশ কিছু ফিজ লাগবে। যেমন লিগ্যাল ফিজ ৫ হাজার, ভ্যালুয়ার আপনার ফ্ল্যাটে গিয়ে ভ্যালুয়েশন করবেন, তার ফিজ- সব মিলিয়ে ১৯ হাজার টাকা দিয়েছিলাম। আমাদের বেশ কিছু কাগজপত্রও দেন ওঁরা। বিশ্বাস করেছিলাম। আজ আমাকে লোন দেওয়ার কথা ছিল। কাল থেকে ফোন করছি, ফোন সুইচ অফ। অফিসে এসে দেখি, সেটাও বন্ধ।”
আরেক ব্যক্তি তিন কোটি টাকা লোন নিতে এসেছিলেন। তাঁর কথায়, “আমি সরকারি অনেক জায়গাতেই ঘুরেছি। লোন পাইনি। এরা খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়েছিল। বলেছিল, যাদের সিভিল খারাপ, তাদের লোন দেওয়া হবে। আমার ৭ কোটি টাকা লোনের দরকার ছিল। প্রথমে ৩ কোটি টাকা চেয়েছিলাম। একটা লোন স্যাঙশন করে দিল। প্রসেসিং চার্জ ৩০ হাজার টাকা নিল। আমি মোট ৪ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দিয়েই দিয়েছি। আজ টাকা দেওয়ার কথা ছিল। ওদের হেড অফিস নাকি হায়দরাবাদে।”
বুধবার সকালে ওই অফিসের সামনে ভিড় করেন এরকম বেশ কয়েকজন গ্রাহক। তাঁদের প্রত্যেককেই আজ টাকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অফিস ঘর তালাবন্ধ। পুলিশ আপাতত প্রতারিতদের অভিযোগ নিয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: Loket Chatterjee: ‘সন্ধান চাই’, লকেট চট্টোপাধ্যায়ের নামে পড়ল পোস্টার