Primary Teacher Recruitment Case: একহাতে চাকরি বাতিল করে অন্য হাতে প্রাথমিক শিক্ষিকার চাকরি ফিরিয়ে দিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়

পুরোনো স্কুলে পুনর্বহালের নির্দেশ দিলেও গত ৫ বছর ধরে জয়তী দত্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বেআইনিভাবে চাকরি করেছেন বলে জানিয়েছেন বিচারপতি। তাই গত ৫ বছর ধরে তিনি যে বেতন পেয়েছেন, সেই টাকা ফেরত দিতে হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

Primary Teacher Recruitment Case: একহাতে চাকরি বাতিল করে অন্য হাতে প্রাথমিক শিক্ষিকার চাকরি ফিরিয়ে দিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়
হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 05, 2023 | 8:15 PM

কলকাতা: চাকরিপ্রার্থীদের মসিহা! একহাতে প্রাথমিকের এক শিক্ষিকার চাকরি বাতিল করে অন্য হাতে তাঁর চাকরি ফিরিয়ে দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার একইসঙ্গে এই দ্বৈত রায় দেন তিনি। তবে টালিগঞ্জের বাসিন্দাওই শিক্ষিকা একেবারে নতুনভাবে নিযুক্ত হবেন। বিগত ৫ বছর ধরে তিনি যে প্রাথমিক শিক্ষিকা পদে চাকরি করেছেন, সেই সময়সীমা তাঁর নতুন সার্ভিস বুক-এ যুক্ত হবে না বলে স্পষ্ট করে দিয়েছেন বিচারপতি।

আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন কয়েক আগে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ২৬৮ জন প্রাথমিক শিক্ষিকার নিয়োগ বেআইনি ঘোষণা করে চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই ২৬৮ জনের মধ্যেই একজন হলেন টালিগঞ্জের বাসিন্দা জয়তী দত্ত বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তাঁরই নতুন করে চাকরি ফিরিয়ে দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। ২০১৭ সালে তাঁর করা রিট পিটিশনের ভিত্তিতেই জয়তী দত্ত বন্দ্যোপাধ্যায়কে নতুন করে চাকরিতে বহাল করার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি।

ঠিক কী ঘটেছিল? আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে প্রাথমিক শিক্ষিকা পদে চাকরি বাতিল হওয়া ২৬৮ জন শীর্ষ আদালতে যান। শীর্ষ আদালত কলকাতা হাইকোর্টকে এঁদের বক্তব্য শোনার নির্দেশ দেয়। তার ভিত্তিতেই আদালতের নির্দেশ মেনে কলকাতা হাইকোর্টে হলফনামা জমা দিয়েছিলেন জয়তী দত্ত বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই হলফনামা দেখে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, তাঁর নিয়োগ বেআইনি। কারণ তিনি টেট পাশ করেননি। তিনি ওই শিক্ষিকার চাকরি বাতিলের নির্দেশ বহাল রাখেন।

২০১৭ সালের ডিসেম্বরে চাকরি পেয়েছিলেন জয়তী দত্ত বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই চাকরি পাওয়ার আগে ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে তিনি কলকাতা হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন করেছিলেন। তাঁর আবেদন ছিল, ২০১৪-এর টেটের প্রশ্নপত্রে ৬ এবং ২২ নম্বরের প্রশ্ন ভুল ছিল। তাই নিয়ম অনুযায়ী, ওই দুই প্রশ্নের নম্বর তাঁর পাওয়ার কথা। শিক্ষিকার দাবি, ওই মামলা হওয়ার পরেই প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ তাঁকে নিজেদের অফিসে ডেকে নিয়োগপত্র দেয়। এপ্রসঙ্গে বিচারপতি স্পষ্ট জানান, এই পদ্ধতিতে চাকরি দেওয়া বেআইনি। সেই কারণে জয়তীর চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন তিনি।

কিন্তু অন্যদিকে, জয়তী দত্ত বন্দ্যোপাধ্যায় যেহেতু ২০১৭ সালে রিট পিটিশন করেছিলেন, সেজন্য ওই ভুল প্রশ্নের নম্বর তাঁর পাওয়া উচিত বলে জানান বিচারপতি। সেই নম্বর পেলে টেট পাশ করবেন তিনি। এর ভিত্তিতেই এদিন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জয়তী দত্ত বন্দ্যোপাধ্যায়কে আবার নতুন করে নিয়োগের নির্দেশ দেন। যে স্কুলে তিনি গত ৫ বছর চাকরি করছেন, যদি সম্ভব হয় সেই স্কুলেই তাঁকে পুনর্বহাল করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। অর্থাৎ চাকরি হারিয়েও পুনরায় চাকরি ফিরে পেলেন জয়তী। তবে যেহেতু নতুন নিয়োগ, তাই তাঁকে ইন্টারভিউতে বসতে হবে।

যদি সম্ভব হয়, পুরোনো স্কুলে পুনর্বহালের নির্দেশ দিলেও গত ৫ বছর ধরে জয়তী দত্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বেআইনিভাবে চাকরি করেছেন বলে জানিয়েছেন বিচারপতি। তাই গত ৫ বছর ধরে তিনি যে বেতন পেয়েছেন, সেই টাকা ফেরত দিতে হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। যদিও সে ব্যাপারে এদিন কোনও নির্দেশ দেয়নি আদালত। আগামী ৯ জানুয়ারি, সোমবার পরবর্তী শুনানির দিন এই বিষয়টি বিবেচনা করবে আদালত।