কলকাতা: কলকাতার এটিএম (Kolkata ATM fraud Case) থেকে উধাও ২ কোটি টাকা। গোয়েন্দাদের নজরে হিতাচি (HITACHI)-র কর্মীরা। অর্থাৎ এটিএমে টাকা ভরার দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাই গোয়েন্দাদের নজরে।
নিউ মার্কেটের একটি এটিএম থেকে কয়েকদিন আগে টাকা গায়েব হয়েছিল, সেই এটিএম কাউন্টারটি ভালভাবে খতিয়ে দেখেন সাইবার সেলের কর্মীরা। মেশিনের ‘কিউহোল’ অর্থাৎ চাবি ঢোকানোর জায়গাটিতেই একটি সূত্র খুঁজে পান গোয়েন্দারা। মেশিনের হুড খোলার জায়গাটিতে প্রমাণ পেয়েছেন। গোয়েন্দারা প্রাথমিকভাবে মনে করছেন চাপ দিয়ে হুড খোলা হয়েছিল।
গোয়েন্দারা মনে করছেন, মেশিনটিকে চাবি দিয়ে হুড খোলা হয়েছে। ওই এটিএমের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের দিকেই সন্দেহ গাঢ় হচ্ছে গোয়েন্দাদের। সেই সংস্থার কর্মীদের এবার জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান গোয়েন্দারা। তাদের একটি তালিকায় তৈরি করা হচ্ছে। কোন কোন সংস্থা এই সাতটি এটিএমে টাকা ভরত, সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এটিএমের দায়িত্বে যে সংস্থা রয়েছে, তার কোনও কর্মী গত কয়েক মাসে চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলেন কিনা কিংবা ছাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল কিনা, তাও জানতে চাইছেন গোয়েন্দারা। কারণ ইনসাইডার রোল ছাড়া বাইরের লোকের কাছে এই পদ্ধতি স্পষ্ট জানা থাকার কথা নয়।
গোয়েন্দারা মনে করছেন সংস্থার কোনও কর্মীই একটি চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন। এখনও পর্যন্ত এটিএম লুঠের ঘটনায় কলকাতা ৭টি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তার মধ্যে ৬ টি অভিযোগের তদন্ত করছে লালবাজার। সিসিটিভিতে দেখা গিয়েছে, তিন জনের একটি দল কাউন্টারে ঢুকে জালিয়াতি করছে। সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরে তদন্ত করছে। ভিন রাজ্য থেকে কেউ এসে এই কাজ করলেন কিনা, তাও খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। সেক্ষেত্রে কলকাতা ও তার সংলগ্ন এলাকায় হোটেলগুলিতেও নজর রাখা হয়েছে।
শহরের এটিএম গুলিতে নজরদারি বাড়াতে থানাগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হল (Kolkata Police)।
নির্দেশিকায় বলা হয়েছে,
♦ প্রত্যেক থানা এলাকায় কটা এটিএম কাউন্টার আছে , তার তালিকা তৈরি করতে হবে।
♦ এর মধ্যে কোন কোন এটিএম কাউন্টারে নিরাপত্তা রক্ষী নেই, তা চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে।
♦ সেই এটিএম কাউন্টারগুলিতে বাড়তি নজরদারি চালাতে বলা হয়েছে।
♦ প্রত্যেক থানার টহলদারি টিম এই নজরদারি চালাবে।
♦ লকডাউনে ফাঁকা রাস্তার সুযোগ নিয়ে আর কোনও টাকা যাতে গায়েব না হয় প্রত্যেক থানার পুলিশ আধিকারিকদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
♦ যে সমস্ত এটিএম কাউন্টারে নিরাপত্তারক্ষী নেই, সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে সেই বিষয়ে সচেতন করতে বলা হয়েছে।
♦ যেসব এটিএম পুরনো প্রযুক্তিতে চলছে, সেগুলোকে চিহ্নিত করেও ব্যাঙ্কে জানাতে হবে।
♦ এটিএমের সিসিটিভি ক্যামেরা ঠিক মত কাজ করছে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে হবে।
♦ কোনওভাবে এটিএম হ্যাক হয়ে আছে কিনা, সেদিকেও নজর রাখতে বলা হয়েছে।