‘রোগীরা পাননি জীবনদায়ী ওষুধ, ভুল করেছি, ভয় পেয়েছিলাম…’ কান্না ভেজা গলায় স্বীকারোক্তি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অভিযুক্ত নার্সের

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে (Kolkata Medicla College Hospital) কোভিড রোগীদের চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় জীবনদায়ী ওষুধ গায়েব (Tosilizumab Scandel Case)!

'রোগীরা পাননি জীবনদায়ী ওষুধ, ভুল করেছি, ভয় পেয়েছিলাম...' কান্না ভেজা গলায় স্বীকারোক্তি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অভিযুক্ত নার্সের
TV9 বাংলার হাতে বিস্ফোরক অডিয়ো ক্লিপ
Follow Us:
| Updated on: Jun 02, 2021 | 9:01 AM

কলকাতা: কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে (Kolkata Medicla College Hospital) কোভিড রোগীদের চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় জীবনদায়ী ওষুধ গায়েব (Tosilizumab Scandal Case)! প্যাথোলজি বিভাগের নমুনা পরীক্ষার ফর্মে বানানো হয়েছে ভুয়ো প্রেসক্রিপশন। আর সেটা ব্যবহার করেই ইঞ্জেকশন তুলে নেওয়া হয়েছে। বিস্ফোরক অভিযোগ হাসাপাতালেরই নার্স, চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে। TV9 বাংলার প্রতিনিধির কাছে নিজের অপরাধ স্বীকার করলেন অভিযুক্ত নার্স আর দিলেন আরও বিস্ফোরক তথ্য। দেখুন কথোপকথন….

অভিযুক্ত সিসিইউ ইনচার্জের সঙ্গে কথা বলেছিলেন TV9 বাংলার প্রতিনিধি। ঘটনার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন ওই নার্স।

প্রতিনিধি: হ্যালো, এই যে ওষুধটা.. এটা উনি কীভাবে পেলেন? প্যাথোলজিক্যাল ফর্মে কীভাবে ইস্যু হল ২৬টা টসিলিজুমাব?
(নার্স তখন চুপ করে ছিলেন)

প্রতিনিধি: ম্যাডাম

অভিযুক্ত নার্স: হ্যাঁ

ফের প্রতিনিধি: কী হল একটু বলুন.. আমাদের না বললে তো আপনার নামই জড়িয়ে যাচ্ছে… আপনার দিক থেকে অবস্থানটা স্পষ্ট করুন।

অভিযুক্ত নার্স: উনি ওই স্যারের নাম বলেছিলেন।

প্রতিনিধি: কোন স্যার? (আরও একবার একই প্রশ্ন করা হয়)

অভিযুক্ত নার্স: ওই যে ডক্টর নির্মল মাঝি স্যার

প্রতিনিধি: কিন্তু এভাবে তো দেওয়া যায় না… এটা কি ঠিক?

অভিযুক্ত নার্স: হ্যাঁ এভাবে তো দেওয়া যায় না… ওটা তো একটা ভুল করেছি..

প্রতিনিধি: তাহলে দিলেন কেন ম্যাডাম?

অভিযুক্ত নার্স: (চুপ )

প্রতিনিধি: সিস্টেমটা কী? কীভাবে দেন আপনারা ওষুধটা?

অভিযুক্ত নার্স: সিস্টেমটা হল ইনডেন্ট করে দিতে হয়। ইনডেন্ট করার জন্য উনি বলেছিলেন। সেই হিসাবেই ইনডেন্ট করে দিয়েছিলাম। কিন্তু দেওয়াটা ঠিক হয়নি।

প্রতিনিধি: কীসের ভিত্তিতে ইনডেন্ট হয়?

অভিযুক্ত নার্স: রোগীর শারীরিক অবস্থার ভিত্তিতে

প্রতিনিধি: তাহলে ওই রোগীর কি সত্যিই দরকার ছিল ওষুধের? ম্যাডাম আমাকে সত্যিটা খুলে বলুন।

অভিযুক্ত নার্স: আমি ওটাই ভুল করে ফেলেছি (কান্না গলায়) ওই রোগীরা কেউই টসিলিজুমাব পাননি।

প্রতিনিধি: তাহলে এই ওষুধগুলো গেলো কোথায়? এই এক-একটা ভাওয়েলের দাম ৪০ হাজার টাকা, সেগুলো গেলো কোথায়?

অভিযুক্ত নার্স: ওষুধটা ওই ডক্টর দেবাংশুই নিয়েছেন।

প্রতিনিধি: সেগুলো ফেরত দিয়েছেন ওঁ?

অভিযুক্ত নার্স: ফেরত দেবেন বলেছেন…

প্রতিনিধি: কত জন রোগীর জন্য রিক্যুইজিশন এসেছিল? ৫টা?

অভিযুক্ত নার্স: ৫ টা বোধহয়

প্রতিনিধি: ৫ জনের জন্য ২৬ টা! এতগুলো তো টসিলিজুমাব দেওয়ার গাইডলাইনও নেই ম্যাডাম।

অভিযুক্ত নার্স: ওঁ আসলে এমনভাবে বলেছেন যে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। সেই মুহূর্তে এমনভাবে বলেছেন, আমি কিছু না ভেবেই দিয়েছি। ওইভাবে দেওয়া যায় না। ভুল তো করেছি। আমার অন্যায় হয়েছে। ডক্টর দেবাংশু সাহা ওইভাবে বলেছিলেন…


অভিযুক্ত মহিলা চিকিৎসক এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। প্রতিনিধি ফোন করলে, তিনি তা কেটে দেন। ডক্টর নির্মল মাঝির নাম নেওয়া হয়েছিল। তাঁর সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছিল। তিনি জানান, তিনি বৈঠকে ব্যস্ত। পরে এব্যাপারে কথা বলবেন।

তবে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের প্রশাসনের তরফেও এখনও কোনও মন্তব্য করা হয়নি। সেটা আরও দুর্ভাগ্যজনক। এটার সঙ্গে চক্র জড়িয়ে থাকার সম্ভাবনা দেখছেন চিকিৎসকরা।