কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে থেকে উধাও কোভিডের জীবনদায়ী ওষুধ! TV9 বাংলার হাতে বিস্ফোরক অডিয়ো ক্লিপ

কেলেঙ্কারির পর কেলেঙ্কারি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (Kolkata Medical College Hospital)।

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে থেকে উধাও কোভিডের জীবনদায়ী ওষুধ! TV9 বাংলার হাতে বিস্ফোরক অডিয়ো ক্লিপ
ফাইল ছবি
Follow Us:
| Updated on: Jun 02, 2021 | 10:38 AM

কলকাতা: কেলেঙ্কারির পর কেলেঙ্কারি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (Kolkata Medical College Hospital)। অতিমারি পরিস্থিতিতে যখন চিকিৎসক স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রাণপন চেষ্টা করছেন, তখন মেডিক্যাল কলেজের হেফাজত থেকে উধাও কয়েক লক্ষ টাকার টসিলিজুমাব। TV9 বাংলার হাতে লেনদেনের এক্সক্লুসিভ অডিয়ো ক্লিপ।

প্যাথলজি বিভাগের স্পেসমেন এক্সামিনেশন ফর্মে সঙ্কটজনক করোনা রোগীর চিকিৎসায় টসিলিজুমাবের রিক্যুইজিশন। এক সঙ্গে ২৬ টি টিসিলিজুমাব বেহাত হয়ে গিয়েছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। এই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন মেডিক্যাল কলেজেরই এক মহিলা চিকিৎসক।

প্রভাব খাটিয়ে সিসিইউ-তে ডিউটিরত নার্সের কাছ থেকে ইঞ্জেকশন নিয়ে নিয়েছেন হাসপাতালেরই এক মহিলা চিকিৎসক। প্যাথোলজি বিভাগের নমুনা পরীক্ষার ফর্মে বানানো হয়েছে ভুয়ো প্রেসক্রিপশন। আর সেটা ব্যবহার করেই ইঞ্জেকশন তুলে নেওয়া হয়েছে। এই অভিযোগ ঘিরে তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়েছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

TV9 বাংলার হাতে এসেছে একটি অডিয়ো ক্লিপ। অভিযুক্ত নার্স ফোন করে কথা বলছেন অভিযুক্ত চিকিৎসকের সঙ্গে। সেখানে

নার্স: “হ্যাঁ দিদি আমি সিস্টার বলছিলাম। সিসিইউ-র সিস্টার।”

চিকিৎসক : “হ্যাঁ হ্যাঁ দিদি বলুন।”

নার্স:  “দিদি বলছিলাম, আপনি যে টসিলিজুমাব ২৬ টা নিয়েছেন, ওটা একটা কাগজে একটু রিসিভ করে নিতেন…”

চিকিৎসক:  “আচ্ছা দিদি, আমি সোমবার আসব, আমি করে দেবো…”

প্রশ্ন উঠছে প্যাথলজি বিভাগের ফর্মে কেন টসিলিজুমাবের রিক্যুইজিশন। এই অভিযোগকে মান্যতা দিয়েছে আরও একটি বেফাঁস অডিয়ো ক্লিপ।

অভিযুক্ত নার্স চিকিৎসককে বলছেন, “হ্যাঁ দিদি আমি ফোন করেছিলাম দেবাশিস স্যারকে। নির্মলদার সঙ্গে কথা হয়েছে। দেবাশিস স্যার আমাকে বললেন, যে মায়ের নামে তো এগুলো এভাবে তোলা যায় না। এটা নিয়ে কিছু ভাবতে হবে না। স্যারকে বলো, কোনও চিন্তা নেই। কোনও চাপ নেই। আমার যা দেখার আমি দেখে নিয়েছি। সোমবার আয়, আগে দেখে নিচ্ছি। দরকার পড়লে একটা রিসিভড কপি দিবি, নাহলে এটা ছিঁড়ে ফেলে দেব আমরা। ওপরমহলে কথা হয়ে গিয়েছে। সোমবার দিনই যেতে বলেছে স্যার….”

অভিযুক্ত মহিলা চিকিৎসক: “আচ্ছা স্যার সোমবার দিন যেতে বলেছেন। তাহলে কালকে আর কেউ আসছে না, আমি তাহলে ম্যাডামকে বলে দিচ্ছি…”

অভিযুক্ত নার্স: “স্যারের সঙ্গে কথা হয়ে গিয়েছে। স্যার সোমবার দিন ডেকেছেন… দেবাশিস স্যারের সঙ্গে কথা হয়েছে। স্যার দেখে নিচ্ছে ব্যাপারটা।”

অভিযুক্ত চিকিৎসক: “ঠিক আছে…. ঠিক আছে…”

(যদিও এই অডিয়ো ক্লিপের সত্যতা যাচাই করে নি TV9 বাংলা)


এই ধরনের ওষুধ আনানোর পদ্ধতিটা কী? মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষরা জানাচ্ছেন, দুই ভাবে ওষুধ দেওয়া হয়। সিস্টার ইনডেন্ট করেন। তাতে সই থাকে সিসিইউ-র চিকিৎসকের। ওষুধ স্টোরে না থাকলে তা আনানোর ব্যবস্থা করা হয়। এক্ষেত্রে রিক্যুইজিশন দেন চিকিৎসক। এরপর স্টোর ইনচার্জের মাধ্যমে ওষুধ আনানোর ব্যবস্থা করে এমএসভিপি-র কার্যালয়। এক্ষেত্রে ঠিক কী ঘটেছিল, অভিযুক্তের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি। এই ঘটনায় প্রভাবশালী যোগ থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকদের একাংশ। মুখে কুলুপ এঁটেছেন কর্তৃপক্ষ। তাতে আরও বাড়ছে কেলেঙ্কারির মাত্রা।