নগ্ন করে মার, উপড়ে ফেলা হয় নখ, যাদবপুরের ব্যবসায়ী অপহরণে অভিযোগকারীর বিরুদ্ধেই ‘অভিযোগ’!

তদন্ত যত এগোয়, পুলিসের হাতে অপহৃত ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধেও উঠে আসে একাধিক অভিযোগ।

নগ্ন করে মার, উপড়ে ফেলা হয় নখ, যাদবপুরের ব্যবসায়ী অপহরণে অভিযোগকারীর বিরুদ্ধেই 'অভিযোগ'!
যাদবপুরের অপহৃত ব্যবসায়ী, তাঁর ছেলে ও স্ত্রী
Follow Us:
| Updated on: Dec 24, 2020 | 7:28 PM

কলকাতা: ব্যবসায়ী, তাঁর ছেলে ও ছেলের বন্ধুকে অপহরণ। এরপর ঘরে আটকে রেখে ‘থার্ড ডিগ্রি টর্চার’। প্রতিদিন তিন ঘণ্টা ধরে নিয়ম করে মার। নগ্ন শরীরে জলের মধ্যে শুইয়ে রাখা। হাত ও পায়ের নখ উপড়ে ফেলা। এমনই অভিযোগ কলকাতার অপহৃত ব্যবসায়ীর। সম্প্রতি যাদবপুরের (Jadavpur) এক ব্যবসায়ী অপহরণের ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিসের হাতে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। তদন্ত যত এগোয়, পুলিসের হাতে অপহৃত ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধেও উঠে আসে একাধিক অভিযোগ।

সম্প্রতি যাদবপুর থানায় এক মহিলা তাঁর ব্যবসায়ী স্বামী অনির্বাণ সেনগুপ্ত ও ছেলে সাগ্নিকের অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন। ময়না থেকে অনির্বাণ ও তাঁর ছেলে, ছেলের বন্ধুকে উদ্ধার করে পুলিস। অনির্বাণের শহরে একটি ক্যাফে রয়েছে। এছাড়া মাছের ব্যবসাও রয়েছে তাঁর।

অনির্বাণের দাবি অনুযায়ী, পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না থানা এলাকা থেকে মাছ আমদানি করতেন তিনি। সেই মাছের ব্যবসায় কিছু টাকা ধার দেনা হয়েছিল তার। ১৭ জানুয়ারি সেই টাকা আদায় করতে ২৫ থেকে ৩০ জন তাঁর ক্যাফেতে আসেন। তাঁকে তিন কোটি টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

সে সময় অনির্বাণের ছেলে সাগ্নিক ও তাঁর এক বন্ধু রিসব ক্যাফেতে ছিলেন। অভিযোগ, টাকা নিয়ে বচসা শুরু হতে অনির্বাণকে মারধর শুরু করেন তাঁরা। সাগ্নিক ও রিসবও ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন। এরপরই তাঁদের তিনজনকে ধরে বেঁধে গাড়িতে তুলে তমলুকে নিয়ে চলে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ।

অনির্বাণের এই ঘটনায় বিমান চট্টোপাধ্যায় ও অমৃতাংশু দাশগুপ্ত নামে দুজনের নাম নিয়েছেন। তবে তাঁর অভিযোগ, এই গোটা ঘটনাটি হয়েছে, বীরেশ্বর দাশগুপ্তের নেতৃত্বে। তাঁর দাবি, ময়না থানা এলাকায় কোনও একটি জায়গায় আটকে রাখা হয়েছিল তাঁদের।

অনির্বাণের ছেলের সাগ্নিকের দাবি, “আমাদের আটকে রেখে প্রতিদিন তিন ঘণ্টা ধরে মারধর করত। পশুর মতো অত্যাচার করেছে। বিছানায় জল ঢেলে আমাদের জামা কাপড় খুলিয়ে শুইয়ে রাখা হত। উঠলেই আবার মার।” পুলিস ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে জানতে পেরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয় বলে দাবি করেন অপহৃত ব্যবসায়ী ও তাঁর ছেলে।

আরও পড়ুন: আচমকাই বিকট শব্দ শুনে ঘুম ভাঙে, রাতের ট্রেনে কলকাতার চিকিত্সকের সঙ্গে বিভৎস ঘটনা!

সাউথ সাবার্বান জোনের ডিসি রশিদ মুনির খান জানিয়েছেন, “ঘটনার তদন্ত চলছে। তমলুক ও ময়না থানা এলাকায় লাগাতার তল্লাশি চালানো হচ্ছে। সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” তদন্তে নেমে পুলিস জানতে পারে, অভিযোগকারীদের বয়ানেও বেশ কিছু অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একই সঙ্গে জানা গিয়েছে, অনির্বাণের বিরুদ্ধেও একাধিক অভিযোগ রয়েছে পুলিসের খাতায়। কয়েক মাস আগে তাঁর বিরুদ্ধে টাকা প্রতারণার মামলা দায়ের হয়েছে। সেই ঘটনার সঙ্গে কোনও যোগ রয়েছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।