২০১০-এ জ্ঞানেশ্বরী দুর্ঘটনায় ‘মৃত’ অমৃতাভ গ্রামের বাড়িতে শুরু করেছিলেন তাঁর আসল ব্যবসা!

Jun 21, 2021 | 1:15 PM

ফ্ল্যাট বানিয়ে বিক্রি করাই তাঁর উদ্দেশ্য বলে দাবি করেছেন এলাকার লোকজন। ফ্ল্যাট বাড়ির তলায় ইতিমধ্যেই দোকান তৈরি করে বিক্রিও করা হয়েছে।

২০১০-এ জ্ঞানেশ্বরী দুর্ঘটনায় মৃত অমৃতাভ গ্রামের বাড়িতে শুরু করেছিলেন তাঁর আসল ব্যবসা!
বাঁ দিকে- অমৃতাভর পৈত্রিক ভিটে

Follow Us

কলকাতা: জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস-কাণ্ডে (Jnaneswari Express Accident Case) বিতর্কিত অমৃতাভ চৌধুরীকে জেরা করতে একের পর এক চাঞ্চল্য তথ্য উঠে আসছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাদের হাতে।

জেরায় অমৃতাভ জানিয়েছিলেন, তিনি ২০১০ সালে সেদিন জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসে মুম্বইতে যাচ্ছিলেন। তাঁর বয়ান খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সূত্রের খবর, রেলের কাছে সিবিআই যাত্রীর তালিকা চাইবে বলে জানা গিয়েছে। জেরায় আরও জানা গিয়েছে, অমৃতাভর গ্রামের বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরের কামারশাল এলাকায়। এখানে অমৃতাভর বাবা মিহির চৌধুরী একটি জমি কিনেছিলেন। সেই জমিতে প্রোমোটারি করছেন অমৃতাভ।

ফ্ল্যাট বানিয়ে বিক্রি করাই তাঁর উদ্দেশ্য বলে দাবি করেছেন এলাকার লোকজন। ফ্ল্যাট বাড়ির তলায় ইতিমধ্যেই দোকান তৈরি করে বিক্রিও করা হয়েছে। গত শনিবার এই বাড়ি থেকেই কলকাতায় সিবিআই কার্যালয়ে গিয়েছিলেন অমৃতাভ। কী করে তিনি বাড়ি তৈরির টাকা জোগাড় করেছেন, তারও তদন্ত হবে বলে সিবিআই সূত্রের খবর।

রবিবারই অমৃতাভর জোড়াবাগানে পুরনো বাড়িতে যান সিবিআই গোয়েন্দারা। পারিবারিক পুরনো অ্যালবাম থেকে বেশ কিছু ছবি বাজেয়াপ্ত করেন। সেগুলি থেকে অমৃতাভর পুরনো চেহারা সঙ্গে বর্তমান চেহারার মিল খতিয়ে দেখেন। তন্তকারীরা নিশ্চিত হন, এই ব্যক্তিই অমৃতাভ। তাঁর হাতের লেখার নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছে। তা যাচাই করতে বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠানো হয়েছে। খতিয়ে দেখা হবে অমৃতাভর স্কুল-কলেজের নথিও। অমৃতাভর সহপাঠীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানা গিয়েছে।

তবে এসবের মধ্যে তদন্তকারীরা এই বিষয়টি জানতে মরিয়া, ঠিক কার বুদ্ধিতে রেলের সঙ্গে এত বড় প্রতারণা করতে পারলেন
অমৃতাভ? তদন্তকারীরা মনে করছেন, এর পিছনে কোনও বড় মাথা থাকতেই পারে। এরই মধ্যে রেলেরই কয়েক জন উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের সামনে তদন্তকারীদের হাতে এসেছে।

জ্ঞানেশ্বরী দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত বিষয়ে রেলের কোন অফিসারেরা যুক্ত ছিলেন তাদের তালিকা চাওয়া হবে রেলের থেকে। সিবিআই মনে করছে গলদ সেখানেই। রেলের থেকে সেই অফিসারদের তালিকা পেলে তাদের তলব করা হবে নিজাম প্যালেসে।

আরও পড়ুন: জ্ঞানেশ্বরী দুর্ঘটনায় ‘মৃত’ অমিতাভ আচমকাই ফেরেন ২০১৭ তে! বাড়ির অ্যালবামের পুরনো ছবি কাটিয়েছে পরিচয়-ধোঁয়াশা

রেলের কাছে জমা দেওয়া ডিএনএ রিপোর্টের কপি সংগ্রহ করা হয়েছে। কোথা থেকে পেয়েছিল সেই রিপোর্ট, সে ব্যাপারে তদন্ত চলছে। অমৃতাভই যে নথিপত্রের মাধ্যমে নিজেকে ‘মৃত’ ঘোষণা করে চাকরি এবং ক্ষতিপূরণ আদায় করেছিল সেই সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে।

২০১০ সালে জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার পর নথিপত্রের মাধম্যে নিজেকে ‘মৃত’ দেখিয়ে ৪ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় করে অমৃতাভ। এরপর ভুয়ো ডিএনএ রিপোর্ট বানিয়ে রেলের চাকরি পাইয়ে দেয় নিজের বোনকে। সম্প্রতি রেলের অভ্যন্তরীণ অডিটে কারচুপির বিষয়টি নজরে এলে সিবিআই-এর দুর্নীতি দমন শাখায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। সেই মতো তদন্তে নেমে গত শনিবার অমৃতাভকে আটক করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

Next Article