জ্ঞানেশ্বরী দুর্ঘটনায় ‘মৃত’ অমিতাভ আচমকাই ফেরেন ২০১৭ তে! বাড়ির অ্যালবামের পুরনো ছবি কাটিয়েছে পরিচয়-ধোঁয়াশা

রবিবারই অমৃতাভর জোড়াবাগানে পুরনো বাড়িতে যান সিবিআই গোয়েন্দারা। পারিবারিক পুরনো অ্যালবাম থেকে বেশ কিছু ছবি বাজেয়াপ্ত করেন। সেগুলি থেকে অমৃতাভর পুরনো চেহারা সঙ্গে বর্তমান চেহারার মিল খতিয়ে দেখেন।

জ্ঞানেশ্বরী দুর্ঘটনায় 'মৃত' অমিতাভ আচমকাই ফেরেন ২০১৭ তে! বাড়ির অ্যালবামের পুরনো ছবি কাটিয়েছে পরিচয়-ধোঁয়াশা
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jun 21, 2021 | 9:58 AM

কলকাতা: জ্ঞানেশ্বরী দুর্ঘটনা কাণ্ডে (Jnaneswari Express accident) আটক অমৃতাভ চৌধুরী ও তাঁর বাবাকে নিজাম প্যালেসে রাতভর জেরা করেছে সিবিআই। অমৃতাভর সঠিক পরিচয় জানতে তাঁর সহপাঠী ও বন্ধুদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করবে সিবিআই। জ্ঞানেশ্বরী দুর্ঘটনার পর প্রথমে মৃত বলে ঘোষণা করা হয় অমৃতাভকে। কিন্তু ২০১৭ সালে হঠাৎ ফিরে আসেন অমৃতাভ। সে কথা তিনি সিবিআইকেও জানিয়েছেন। কাদের সাহায্যে রেলের সঙ্গে এত বড় প্রতারণা, তা জানার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা। সূত্রের খবর, আজই গ্রেফতার করা হতে পারে অমৃতাভকে। রাতভর জেরার পর পরিচয় সংক্রান্ত ধোঁয়াশা কাটানো গিয়েছে।

রবিবারই অমৃতাভর জোড়াবাগানে পুরনো বাড়িতে যান সিবিআই গোয়েন্দারা। পারিবারিক পুরনো অ্যালবাম থেকে বেশ কিছু ছবি বাজেয়াপ্ত করেন। সেগুলি থেকে অমৃতাভর পুরনো চেহারা সঙ্গে বর্তমান চেহারার মিল খতিয়ে দেখেন। তন্তকারীরা নিশ্চিত হন, এই ব্যক্তিই অমৃতাভ। তাঁর হাতের লেখার নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছে। তা যাচাই করতে বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠানো হয়েছে। খতিয়ে দেখা হবে অমৃতাভর স্কুল-কলেজের নথিও। অমৃতাভর সহপাঠীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানা গিয়েছে।

তবে এসবের মধ্যে তদন্তকারীরা এই বিষয়টি জানতে মরিয়া, ঠিক কার বুদ্ধিতে রেলের সঙ্গে এত বড় প্রতারণা করতে পারলেন অমৃতাভ? তদন্তকারীরা মনে করছেন, এর পিছনে কোনও বড় মাথা থাকতেই পারে। এরই মধ্যে রেলেরই কয়েক জন উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের সামনে তদন্তকারীদের হাতে এসেছে।

জ্ঞানেশ্বরী দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত বিষয়ে রেলের কোন অফিসারেরা যুক্ত ছিলেন তাদের তালিকা চাওয়া হবে রেলের থেকে। সিবিআই মনে করছে গলদ সেখানেই। রেলের থেকে সেই অফিসারদের তালিকা পেলে তাদের তলব করা হবে নিজাম প্যালেসে।

রেলের কাছে জমা দেওয়া ডিএনএ রিপোর্টের কপি সংগ্রহ করা হয়েছে। কোথা থেকে পেয়েছিল সেই রিপোর্ট, সে ব্যাপারে তদন্ত চলছে। অমৃতাভই যে নথিপত্রের মাধ্যমে নিজেকে ‘মৃত’ ঘোষণা করে চাকরি এবং ক্ষতিপূরণ আদায় করেছিল সেই সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে।

আরও পড়ুন: বাংলা ভাগ নিয়ে জোর চর্চা, আজই রাজ্যপালের কথায় ইঙ্গিত মিলতে পারে কেন্দ্রের কী অবস্থান!

২০১০ সালে জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার পর নথিপত্রের মাধম্যে নিজেকে ‘মৃত’ দেখিয়ে ৪ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় করে অমৃতাভ। এরপর ভুয়ো ডিএনএ রিপোর্ট বানিয়ে রেলের চাকরি পাইয়ে দেয় নিজের বোনকে। সম্প্রতি রেলের অভ্যন্তরীণ অডিটে কারচুপির বিষয়টি নজরে এলে সিবিআই-এর দুর্নীতি দমন শাখায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। সেই মতো তদন্তে নেমে গত শনিবার অমৃতাভকে আটক করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।