কলকাতা: সভা বাতিল হয়নি, ঠাকুরনগরে যে কোনও দিনই আসতে পারেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। ঠাকুরনগরে সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের (Shantanu Thakur) সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর জানালেন বিজেপি নেতা মুকুল রায় (Mukul Roy)। তিনি বলেন, “অমিত শাহর সভা বাতিল হয়নি। এই নিয়ে প্রশ্ন ওঠার কোনও মানেই হয় না। যে কোনও দিনই ঠাকুরনগরে আসবেন অমিত শাহ। সেক্ষেত্রে ৪-৬ ঘণ্টার নোটিস দিয়েই আসতে পারেন তিনি।” শান্তনু ঠাকুর বললেন, “দেশে একটি জরুরিকালীন পরিস্থিতি তৈরি হতেই পারে। তাতে মন খারাপের কিছু নেই। অমিত শাহ আসবেন ঠাকুরনগরে, মতুয়াদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখবেন, এটাই বড় ব্যাপার।” উল্লেখ্য, যখন বন্ধ ঘরে এদিন শান্তনুর সঙ্গে কথা বলছিলেন মুকুল রায়, কৈলাস বিজয়বর্গীয়, ঠিক তখনই বাইরে ওঠে নাগরিকত্বের স্লোগান।
শনিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর ঠাকুরনগরে যাওয়ার কথা ছিল। সূত্রের খবর, শুক্রবার দিল্লিতে বিস্ফোরণের পর কর্মসূচিতে কিছু বদল হওয়ায় অমিত শাহ ঠাকুরনগরে আসতে পারেন না। তারপরই কটাক্ষের সুরে মমতাবালা ঠাকুরকে বলতে শোনা যায়, “আসলে অমিত শাহর কাছে মতুয়াদের দেওয়ার মতো কোনও বার্তা নেই, তাই এলেন না তিনি।”
অমিত শাহ-র সফর বাতিল হতে কিছুটা হলেও ভেঙে পড়েন মতুয়ারা। কারণ এই সভাতেই প্রায় ২ লক্ষ মানুষের জমায়েত হবে বলে লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছিলেন শান্তনু। বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ এদিন এসেছিলেন। মতুয়াদের মন ভালো করতে ঠাকুরনগরে যান কৈলাস-মুকুলরা। শান্তনুর সঙ্গেই কথা বলেন তাঁরা। কেন অমিত শাহ আসতে পারলেন না, পরবর্তী কবে হতে পারে সভা, নাগরিকত্ব বিলের বর্তমান ‘স্টেটাস’ কী? তা নিয়েই এদিন শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে আলোচনা করেন তাঁরা।
বৈঠক থেকে সাংবাদিকদের মুকুল রায় স্পষ্ট বলেন, ” মঞ্চ বাঁধাই থাকবে, অমিত শাহ ঠাকুনগরে আসবেন যে কোনও দিনই।” নাগরিকত্ব বিল নিয়ে প্রশ্ন করা হলে শান্তনু বলেন, “বিরোধীরা কী বলছেন তাতে কান দিই না। পশ্চিমবঙ্গ সরকার তো এই নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করেনি। অমিত শাহ আসবেন, মতুয়াদের উদ্দেশে বার্তা দেবেন, এটাই বড় ব্যাপার।”
উল্লেখ্য, নাগরিকত্ব কার্ড শান্তনু ঠাকুরের অবস্থান রাজ্য রাজনীতিতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। প্রকাশ্যে জনসভায় তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি যেমন বিজেপি (BJP) সাংসদ, সেই সঙ্গে আমি মতুয়া মহাসংঘের সঙ্খাধিপতি। তাই মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষদের জন্য সরকারের কাছে আমাদের দাবি, মানুষ কবে নাগরিকত্ব কার্ড পাবেন, সেটা স্পষ্ট করা হোক।’ এরপরই ঠাকুরনগরে অমিত শাহর সভার দিন নির্ধারিত হয়। এই সভা ঘিরে মতুয়াদের মধ্যে উত্তেজনা ছিল তুঙ্গে।
আরও পড়ুন: দিল্লি যাচ্ছেন রাজীব-বৈশালী, বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা
সাম্প্রতিক অতীতে বেশ কয়েকবার শান্তনু ঠাকুরকে নাগরিকত্ব নিয়ে একাধিক মন্তব্য করতে দেখা গিয়েছে। রাজনৈতিক মহলে তাতে গুঞ্জন রটে, শান্তনুকে নিয়েই ফের দল ভারি করতে চাইছে তৃণমূল। যদিও পরবর্তীতে শান্তনুকে নিয়ে তৃণমূলের ধারণা ভ্রান্ত প্রমাণিত হয়। এবার ঠিক অমিত শাহ ঠাকুরনগরের সভার খবর হতেই, গোটা এলাকা ও সন্নিহিত এলাকা মুড়ে ফেলা হয় তৃণমূলের পতাকায়। বিষয়টি নিয়ে শুরু হয় দু’দলের রাজনৈতিক টানাপোড়েনও। সূত্রের খবর, এদিন মূলত দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে নাগরিকত্ব কার্ড নিয়েই আলোচনা হতে পারে।