AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

‘দুয়ারে সরকার’এর প্রথম সারির কর্মীদের মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির পথেই ‘পেটাল’ পুলিস

মঙ্গলবার পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী, তিন দফা দাবি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়ির কার্যালয়ে একটি স্মারকলিপি জমা দিতে যাচ্ছিলেন কয়েকশো পৌরস্বাস্থ্যকর্মী।

'দুয়ারে সরকার'এর  প্রথম সারির কর্মীদের মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির পথেই 'পেটাল' পুলিস
প্রিজন ভ্যানে তোলা হচ্ছে পুরস্বাস্থ্যকর্মীদের
| Updated on: Dec 22, 2020 | 2:32 PM
Share

কলকাতা:  ওঁদের কারোর বয়স পঞ্চাশ, কারোর পঁয়তাল্লিশ। চেহারায় বিন্দুমাত্র কোনও ‘বিদ্রোহ’, ‘বিপ্লব’, ‘বিক্ষোভ’এর  ছাপ নেই। আপাত ছা-পোষা কয়েকজন মহিলা। রাজ্য সরকারের ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির প্রথম সারির কর্মী তাঁরা। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রথম সারিতে রয়েছেন, অগ্রণী ভূমিকা নেন রাজ্য সরকারেরই আরও অনান্য প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে, সেই পুর স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপরই ‘লাঠি চালাল’ পুলিস। ঠেলাঠেলি করে প্রৌঢ়াদের তুলল প্রিজন ভ্যানে, দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রাখল থানায়। হাজরা মোড়ের এই ঘটনায় পুলিসের ভূমিকা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই উঠেছে নিন্দার ঝড়।

কোনও বিক্ষোভ দেখাতে চাননি তাঁরা। মঙ্গলবার পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী, তিন দফা দাবি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) কালীঘাটের বাড়ির কার্যালয়ে একটি স্মারকলিপি জমা দিতে যাচ্ছিলেন কয়েকশো পৌরস্বাস্থ্যকর্মী। তাঁদের বেশিরভাগেরই বয়স চল্লিশের ওপর। সেই মতো হাজরা মোড় থেকে তাঁরা একটি মিছিল বার করেন। অভিযোগ, তাঁদের কর্মসূচি শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিস এসে তাঁদের ঘিরে ধরে। উল্লেখ্য, কোনও মহিলা পুলিসকর্মী ছিলেন না।

এদিনের কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া পুরস্বাস্থ্যকর্মী

অভিযোগ, পুরস্বাস্থ্যকর্মীদের জোর করে প্রিজন ভ্যানে তোলার চেষ্টা করেন কর্তব্যরত পুলিসকর্মীরা। দুপক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এরমধ্যে পুলিস কয়েকজনের সঙ্গে অশালীন আচরণ করে বলেও অভিযোগ। ধস্তাধস্তিতে চোট পান আল্পনা দাস নামে এক জন মহিলা।

পুরস্বাস্থ্যকর্মীদের কর্মসূচির নির্যাস

ঘটনায় সরব হয়েছেন স্বাস্থ্যমহলেরই একাংশ। কারণ পুরস্বাস্থ্যকর্মীদের ভূমিকা অপরিসীম। তাঁরাই ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছেন। পাশাপাশি করোনা, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গুর মতো রোগের সচেতনতায় তাঁদের ভূমিকা অপরিসীম। ‘ন্যাশনাল আর্বান হেলথ মিশন’এর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত যাবতীয় প্রকল্পের প্রথম সারির কর্মী তাঁরা। কিন্তু তাঁদের ওপরই পুলিসের এহেন আচরণে নিন্দার ঝড় উঠেছে। করোনার ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্যও এই পুরস্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষিত করা হয়েছে। তবে এসবের পরেও তাঁদের ন্যূনতম বেতন ৩ হাজার ১২৫টাকা।

মিছিল তখন সবেমাত্র শুরু করেছিলেন তাঁরা

পুরস্বাস্থ্যকর্মীদের দাবি মূলত তিনটি। এক. গ্রামীণ আশাকর্মীদের মতো অবসরকালীন ৩ লক্ষ টাকা করে ভাতা তাঁদেরকেও দিতে হবে। দুই. তাঁদেরও অবসরের সময়সীমা ৬৫ বছর করতে হবে। তিন. ন্যূনতম বেতন ২১ হাজার টাকা করতে হবে।

আরও পড়ুন: কয়লা-কাণ্ডে কলকাতায় সিবিআই হানা, একাধিক ব্যবসায়ীর বাড়িতে শুরু তল্লাশি

রাজ্যে মোট ১০ হাজার পুরকর্মী রয়েছেন। তাঁদের এই দাবি আগামী দিনে পূরণ না হলে তাঁরা ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে অংশ নেবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন। পাশাপাশি করোনার ভ্যাকসিন দেওয়ার কর্মসূচিতেও তাঁরা অংশ নেবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। আগামী দিনে এই আন্দোলন আরও বৃহত্তর আকার নেবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।