কলকাতা: জল্পনার অবসান। মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় (Rajib Banerjee)। সরকারি লেটারহেডে তিনি লিখেছেন, “আমি অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে জানাচ্ছি আজ, অর্থাৎ ২২ জানুয়ারি বনদফতরের ক্যাবিনেট মন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিলাম। আমি এতদিন মানুষের জন্য যা সেবা করতে পেরেছি, তাতে আমি ধন্য। এটাই আমার কাছে বড় সম্মানের। আমাকে এই সুযোগ দেওয়ার জন্য আমি কৃতজ্ঞ।” রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের কাছেও তিনি তাঁর ইস্তফাপত্রের একটি কপি পাঠিয়েছেন।
রাজীব বললেন, “মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছি। এখনও দল ছাড়িনি।” তবে এই দিনটাই যে দেখতে হতে পারে, তা রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বেশ কিছু দিন ধরেই আঁচ করতে পারছিলেন। কারণ গত কয়েক মাসে দফায় দফায় বেশ কয়েকবার ‘বেসুরো’ হতে দেখা গিয়েছে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজনীতির কুশীলবদের কথায়, অত্যন্ত পরিণত, মার্জিত রাজীবের রাজনৈতিক মনস্কতায় বদল লক্ষ্য করে গিয়েছে গত কয়েক মাসেই। প্রকাশ্য সভায় দাঁড়িয়েই দল ও দলের নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন তিনি।
স্থাবকতা’র অভিযোগ দিয়ে শুরু করে ‘যত মম তত পথ’ জাতীয় রাজীবের একের পর এক মন্তব্যে গুঞ্জন তৈরি হয় বঙ্গ রাজনীতিতে। তড়িঘড়ি বৈঠক ডাকা হয় দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে। ছিলেন ভোট স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোরও। বৈঠক থেকে বেরিয়ে রাজীব বলেছিলেন, “আমাকে শুভেন্দুবাবুর সঙ্গে গোলাবেন না।”
উল্লেখ্য সেসময় শুভেন্দু অধিকারীর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়েও ছিল টানটান উত্তেজনা। পরিস্থিতি যে থিতিয়ে যায়নি, তা বোঝা যায় দুদিন আগের বালির এক সভাতেই। রক্তদান শিবিরের মঞ্চ থেকে রাজীব বলেন, “বেশ কয়েকজন নেতা দলের কর্মীদের চাকর বাকর ভেবে তাঁদের ভাবাবেগ নিয়ে খেলেন। তাঁদের জবাব কর্মীরাই দেবেন।” আবারও জলঘোলা শুরু হয়। এরপর হাওড়া জেলার সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়া হয় ফিরহাদ হাকিমকে। জল্পনা আরও তুঙ্গে ওঠে।
আরও পড়ুন: বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা, ধ্বংসস্তূপের তলায় তখন চাপা পড়ে কাতরাচ্ছেন ওঁরা!
তবুও নিজের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে কখনই সেভাবে মুখ খোলেননি রাজীব। ধোঁয়াশা জিইয়ে রেখেছেন। তবে তাঁর বিজেপি-যোগ নিয়ে চ্যালেঞ্জের সুরে মন্তব্য করেছিলেন সৌমিত্র খাঁ। জল্পনাই থাকছেই তাঁর পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে।