‘স্তাবকতা করলে নম্বর বেশি, তাই আমার নম্বর কম’, বিস্ফোরক রাজীব

করুণাময়ী এলাকায় শীতবস্ত্র প্রদান অনুষ্ঠানে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "যাঁরা যোগ্যতার সঙ্গে কাজ করছেন, তাঁরা প্রাধান্য পাচ্ছেন না। যাঁরা ঠান্ডা ঘরে বসে থাকেন, তাঁরাই সামনের সারিতে।"

'স্তাবকতা করলে নম্বর বেশি, তাই আমার নম্বর কম', বিস্ফোরক রাজীব
ফাইল ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 05, 2020 | 7:56 PM

কলকাতা: শুভেন্দু অধিকারীর পর রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ফের অস্বস্তিতে তৃণমূল কংগ্রেস। শনিবার বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।

করুণাময়ী এলাকায় শীতবস্ত্র প্রদান অনুষ্ঠানে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, “ভালকে খারাপ, খারাপকে ভাল বলতে পারি না, তাই আমার নম্বর কম। যাঁরা যোগ্যতার সঙ্গে কাজ করছেন, তাঁরা প্রাধান্য পাচ্ছেন না। যাঁরা ঠান্ডা ঘরে বসে থাকেন, তাঁরাই সামনের সারিতে।” এখানেই শেষ নয়, তাঁর আরও বক্তব্য, “যখন মানুষ ভাল কাজ করতে আসেন, তখন পিছন থেকে টেনে ধরা হয়। এখন অনেকেই আছেন, যাঁরা ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করেন।”

কিন্তু, হঠাৎ কেন এমন কথা বললেন রাজীব? রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, রাজীব হলেন তৃণমূলের এমন একজন নেতা, যিনি তাঁর নিজের কেন্দ্র তো বটেই, ভৌগোলিকভাবে বড় একটা এলাকায় নিজের সাংগঠনিক ক্ষমতাকে মজবুত রাখার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সফল। ডোমজুড়ে মিটিং, মিছিল, কর্মসূচি তো বটেই, আমফান থেকে শুরু করে যে কোনও বিপর্যয়ে একেবারে পথে ঘাটে নেমে কাজ করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। কিন্তু, সেই রাজীবের সঙ্গেই হাওড়া জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি অরূপ রায়ের দ্বন্দ্ব সামনে এসেছে। দুর্নীতির প্রসঙ্গে রাজীব সে সময় সংবাদ মাধ্যমে মুখও খুলেছিলেন। পরে অবশ্য দল অরূপ রায়কে সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেয়। কিন্তু এরপরও রাজীবের ক্ষোভ যে পুরোপুরি কমেনি সেই ইঙ্গিত এদিনের বক্তৃতা থেকেই স্পষ্ট। তবে এদিনের অরাজনৈতিক মঞ্চে দাঁড়িয়ে কথা বলার সময় একবারও তৃণমূল কংগ্রেসর নাম সরাসরি উচ্চারণ করেননি রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।

এদিনের সভায় দাঁড়িয়ে রাজীব বলেন, “অনেকেই আছেন যাঁরা রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মটাকে নিজেদের কাজে ব্যবহার করেন। আমি তাঁদের ঘৃণা করি।” কথার রেশ টেনেই তিনি আরও বলেন, “যখন কেউ ভালো কাজ করতে যান, মানুষের জন্য কাজ করতে যান, তখন তাঁকে পিছন থেকে অনেকে টেনে ধরেন।”   তাঁর আরও বক্তব্য, “স্তাবকতা করতে পারলে নম্বর বেশি। ভালোকে খারাপ, খারাপকে ভালো বলতে পারি না তাই আমার নম্বর কম। অন্যদের বেশি।”

শুভেন্দু অধিকারীর প্রসঙ্গেও এদিন মুখ খোলেন তিনি। স্পষ্ট বললেন, ” শুভেন্দু অধিকারী  তৃণমূল ছাড়লে তা দলের পক্ষে বড় ক্ষতি।” এও বললেন, ‘’নেতাদের কেন এত ক্ষোভ-বিক্ষোভ তা নিয়ে অনুসন্ধান করাটা জরুরি।’’  ওয়াকিবহাল মহলের মতে, রাজীবের শনিবারের বক্তৃতায় অনেকাংশে শুভেন্দুর কণ্ঠস্বর অনুরণিত হয়েছে।

রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বক্তব্য নিয়ে ইতিমধ্যেই জল্পনা এবং তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। রাজ্যের মন্ত্রীর এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আরেক মন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিম বলেন, “রাজীব ভাল ছেলে, আমাদের পরের প্রজন্মের ভাল মুখ। দল তো দায়িত্ব দিয়েছে, মন্ত্রী করেছে। আবার কী দেবে?”

তবে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছেন, দলের প্রতি কি ক্ষোভ জমতে শুরু করেছে রাজীবের মনে? একুশের নির্বাচনের প্রাক্কালে তৃণমূলের আস্বস্তি কি আরও বাড়তে চলেছে?