ফ্ল্যাট থেকে শুরু করে পারিবারিক ব্যবসা- শুভেন্দুর সম্পত্তির দেখভাল করতেন এই রাখালই! স্রেফ একটা সূত্রেই এতটা ভরসা
চাকরি দেওয়ার নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকার প্রতারণার অভিযোগে পুলিশের র্যাডারে এখন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) খাস লোক রাখাল বেরা (Rakhal Bera)।
কলকাতা: জোড়া ফৌজদারি মামলা- আর তার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসা দুটি নাম! রবিবারের রাজ্য রাজনীতির গোটা নজর ছিল সেদিকে। চাকরি দেওয়ার নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকার প্রতারণার অভিযোগে পুলিশের র্যাডারে এখন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) খাস লোক রাখাল বেরা (Rakhal Bera)। ২ দশক ধরে শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ তিনি। কীভাবে সামান্য ছাপাখানার ব্যবসায়ী থেকে কয়েক লক্ষ টাকার মালিক হয়ে উঠলেন তিনি? তদন্তে উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।
রাখাল বেরা, চঞ্চল নন্দী- রবিবার দুজনকে ঘিরেই তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। পুলিশের দাবি, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ এই দুজনের যুগলবন্দিই চাকরির নামে প্রতারণা চক্র চালিয়ে গিয়েছে কয়েক বছর। ভ্যানিশ লক্ষ লক্ষ টাকা। প্রতারিত অসংখ্য। দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত রাখাল বেরা। রাখাল ও চঞ্চলের বাড়ি কাঁথিতেই। পূর্ব মেদিনীপুরের সূত্রে ধরেই ওঁরা শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ বলে পুলিশের দাবি।
কলকাতায় শুভেন্দু অধিকারীর পারিবারিক ব্যবসা, ফ্ল্যাট-সবেরই দেখভাল করতেন রাখাল বেরা। মানিকতলায় একটি ছাপাখানা রয়েছে রাখালের। তবে পুলিশ বলছে এটা কেবলই মোড়ক! এই মোড়কের আড়ালেই আসলে তাঁর মূল কাজ ছিল শুভেন্দু অধিকারীর বিভিন্ন সম্পত্তির দেখাশোনা করা। কলকাতায় শুভেন্দু অধিকারী এলে, তাঁর ছায়াসঙ্গী হিসাবে থাকতেন রাখাল। এমনকি শুভেন্দু রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠ বৃত্তের অনেকেই পুলিশকে জানিয়েছেন, শুভেন্দুর সঙ্গে রাখালকে অনেক জায়গাতেই দেখা যেত। তবে এক্ষেত্রে একটি অত্যন্ত ইঙ্গিতবাহী তথ্যও এসেছে পুলিশের হাতে। পূর্ব মেদিনীপুরের যাবতীয় সমবায় ব্যাঙ্কের নথিপত্র ছাপা হত রাখাল বেরার ছাপাখানা থেকেই। গত কয়েক বছরে নিজেরও বিপুল সম্পত্তি করেছেন রাখাল।
আবার পূর্ব মেদিনীপুরের সূত্র ধরেই শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ চঞ্চল নন্দীও। তিনি কাঁথি পুরসভায় ২০১৭ সালে স্থায়ী চাকরি পান। তার আগে চুক্তিভিত্তিক চাকরি করতেন। তিনি পূর্ব মেদিনীপুরে শুভেন্দু অধিকারীর রাজনৈতিক কার্যকলাপে সহায়তা করতেন। এই দুই ব্যক্তিই যে শুভেন্দু অধিকারীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ- সেরকম একাধিক তথ্য উঠে এসেছে পুলিশের হাতে।
তদন্ত যত এগোচ্ছে পুলিশ মনে করছে, চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণা আদতে রাখাল কিংবা চঞ্চলের মস্তিষ্কপ্রসূত নয়। তাঁদেরকে দিয়ে এ কাজ কোনও প্রভাবশালী ব্যক্তিই করাতেন। সেই নাম খুঁজে পেতে চাইছেন তদন্তকারীরা।