কলকাতা: প্রথমে লড়াইয়ের ময়দানে সরাসরি নামতে চাননি, পরে দলের চাপে বিধানসভা নির্বাচনে লড়েন, জেতেনও। কিন্তু জিততে পারেন নি তাঁর ছেলে! তখন থেকেই দলের কোনও রিভিউ বৈঠকে তাঁকে সেভাবে দেখা যায়নি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের খটকা লেগেছিল! গুঞ্জন রটতে শুরু করেছিল পদ্ম-মুকুল দূরত্ব বাড়ছে। গুঞ্জন যে একেবারেই ফেলনা নয়, তারই প্রমাণ মিলতে শুরু করেছিল দিন যত এগিয়েছে। শেষমেশ বঙ্গ রাজনীতির জোর জল্পনায় যবনিকা পতন ঘটতে চলেছে আজই। সব ঠিক থাকলে আজ, শুক্রবারই তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন করতে চলেছেন মুকুল রায় (Mukul Roy)। তাঁর সঙ্গে তৃণমূলে (TMC) ফিরতে পারেন ছেলে শুভ্রাংশু রায়ও (Subhranshu Roy)।
জল্পনার শুরুটা হয়েছিল একুশের নির্বাচন প্রাক পর্বে নন্দীগ্রামের প্রচারে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বলা একটি কথায়! সভামঞ্চ থেকে মমতা বলেন, “মুকুল কিন্তু শুভেন্দুর মতো ওতটা খারাপ নয়!” উল্কার থেকেও দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়েছিল গুঞ্জন। এরপর তাতে ঘি ঢালেন তৃণমূলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য সৌগত রায়। তিনি বলেন, “মুকুল রায় তো কখনই দলনেত্রীকে সেভাবে অপমান করেননি।” বিশ্লেষকরা বলতে শুরু করেন, তৃণমূল অন্দরে দলত্যাগীদের যেন নরমপন্থী ও চরমপন্থী ধারায় বিভক্ত করা হয়েছে। তাতে মুকুলের ঘর ওয়াপসির সম্ভাবনা আরও জোরাল হয়। অতঃপর মুকুল পদ্মের টিকিটে নির্বাচনে জেতেন। কিন্তু বীজপুরে পরাজয় ছেলে শুভ্রাংশুর।
নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর থেকেই পদ্ম শিবিরের সঙ্গে যে পিতা-পুত্রের দূরত্ব বাড়তে শুরু করেছিল। তা আরও প্রকট হয়ে ওঠে দিন পনেরো আগে। করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুকুল পত্নী। কিন্তু হাসপাতালে ভর্তি থাকার খবর পেয়েও দিন পনেরো মুকুল-শুভ্রাংশুর সঙ্গে সৌজন্য যোগাযোগ করেননি কোনও বিজেপি নেতাই। সে বিষয়ে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ উগরে দিতে দেখা গিয়েছিল শুভ্রাংশুকে।
মুকুল-পত্নীকে দেখতে প্রথমে হাসপাতালে যান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সৌজন্যে আপ্লুত হন মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশুও। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় হাসপাতাল ছাড়ার পরই সেখানে পৌঁছন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। আর তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মুকুল রায়কে মোদীর ফোন। কটাক্ষ ধেয়ে আসে, তবে কি মুুকুল-রক্ষার্থে এই ফোন?
আরও পড়ুন: দুপুরে যাবেন কালীঘাটে! আজই ঘাসফুলে ফুটবে মুকুল?
এরপরই রাজনীতির অন্দরে জল্পনা ওঠে, মুকুল রায় তৃণমূলে ফিরতে পারেন। সঙ্গে থাকবেন তাঁর ছেলেও। সব ঠিক থাকলে আজই তার যবনিকা পতন।