
কলকাতা: বায়ু দূষণ নিয়ে আলোচনা হলেই প্রথমে আসে দিল্লির নাম। কিন্তু, সেই দিল্লিকেও ছাপিয়ে গেল কলকাতা। কলকাতার ‘ফুসফুস’ হল ময়দান এলাকা। মঙ্গলবার রাতে কলকাতার ‘ফুসফুসের’ বাতাসের গুণমান সূচক (AQI) ছিল দিল্লির থেকেও খারাপ। গতকাল রাত আটটা নাগাদ ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের আশপাশে AQI ছিল ৩৪২। যা স্বাভাবিকের থেকে অনেকটাই বেশি। ওই সময় দিল্লির একিউআই ছিল ২৯৯। কলকাতার ফুসফুস হিসেবে পরিচিত ময়দান এলাকায় বায়ুর এই গুণমান সূচক নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে।
কেন ময়দান এলাকায় বায়ুর দূষণ বাড়ল? কী বলছেন পরিবেশবিদ?
শীতকালে এমনিতেই বায়ুর দূষণ বাড়ে। কিন্তু, দিল্লিকে ছাপিয়ে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।বায়ুর এই দূষণের জন্য কেন্দ্র ও রাজ্যকে দুষলেন পরিবেশ প্রযুক্তিবিদ সোমেন্দ্রমোহন ঘোষ। তিনি বলেন, “এটা সম্পূর্ণ আমাদের গাফিলতি। কারণ, দিল্লির ভুল থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত ছিল। ময়দানে ভিক্টোরিয়ার চারপাশে যে কর্মযজ্ঞ চলছে, বিশেষ করে মেট্রোরেলের কাজ। সেখানে নির্মাণের কাজ যেভাবে ঢেকে রাখা উচিত ছিল, সেটা করা হচ্ছে না। সেটা রাজ্য সরকারের দেখা দরকার। যে ধুলোটা উড়ছে, সেটা বন্ধ করার জন্য জল ছেটানোর দরকার ছিল। এছাড়া মা ফ্লাইওভারের উপর দিয়ে যেসব পুরনো ডিজেল গাড়ি চলছে, সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করা রাজ্য সরকারের কাজ। ফলে কেন্দ্রীয় সরকারও দোষী। রাজ্য সরকারও দোষী। আর একটা কথা, এই ধরনের দূষণ শীতকালে বাড়ে। তবে এত ভয়ানক হয় না যে দিল্লির থেকে আমাদের এখানে দূষণ বেশি হবে। দিল্লির থেকে এখানে গাড়ির সংখ্যা কম। দিল্লির তুলনায় আমাদের ময়দান এলাকা এত ঘনবসতিপূর্ণ নয়। সেখানে যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার পরিস্থিতি আরও ভয়ানক হবে।”
এই পরিস্থিতিতে কী করা উচিত?
পরিবেশ প্রযুক্তিবিদ সোমেন্দ্রমোহন ঘোষ বলেন, “বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ১৫ মাইক্রোগ্রাম প্রতি ঘনমিটারের বেশি দূষণ হলে তা যেকোনও শহরের জন্য বিপজ্জনক। সেখানে আমাদের ভারতের স্ট্যান্ডার্ড ৬০ মাইক্রোগ্রাম। তার চেয়েও ৫ গুণ বেশি। সেক্ষেত্রে আমাদের ওখানে ঘোষণা করা দরকার। ওখানে যাতে মানুষ না যান, আশপাশে যাতে জমায়েত না হন, সেগুলো জানাতে হয়। জনস্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে ওখানে কিছু বিধিনিষেধ জারি করতে হয়। যে সময়টায় দূষণ বেশি থাকছে, ওইসময় যাতে জনগণ ওখানে বেশি না যান, তা দেখতে হয়। বিশেষ করে বাচ্চা ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে। শ্বাসবায়ুতে ধূলিকণা গিয়ে হার্টে প্রভাব ফেলে। সেগুলো যাতে না হয়, তা দেখা উচিত।”